খেলা

টাকার বিনিময়ে সেলফি তোলেন সাকিব আল হাসান

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

সোমবার, ৩১ অক্টোবর, ২০২২
টাকার বিনিময়ে সেলফি তোলেন সাকিব আল হাসান

এবারের টি-টুয়ান্টি বিশ্বকাপে মাঠের পারফরম্যান্স খুব একটা ভালো যাচ্ছে না সাকিব আল হাসানের। তবে  মাঠের বাইরে সব সময়ের মত একের পর এক বিতর্কের জন্ম দিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

বিশ্বকাপ মিশনে গিয়ে মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে প্রবাসী বাংলাদেশিদের এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন এই অলরাউন্ডার। এরমাধ্যমে আবার নতুন বিতর্কে জড়িয়েছেন অস্ট্রেলিয়া সফরত বাংলাদেশ টি-টুয়ান্টি দলের অধিনায়ক।

অভিযোগ উঠেছে, বোর্ড কিংবা টিম ম্যানেজমেন্টের অনুমতি না নিয়েই সিডনিতে বাংলাদেশিদের দেয়া এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন সাকিব। কেবল নিজে নয়, সঙ্গে নিয়ে গেছেন পেসার তাসকিন আহমেদকেও।

শোনা যাচ্ছে আয়োজকদের কাছ থেকে সম্মানী বাবদ ১৫ হাজার ডলার নেওয়ার শর্তে  তাসকিনকে নিয়ে অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন সাকিব আল হাসান।

আইসিসির আসর চলাকালীন খেলোয়াড়দের  কোন অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার নিয়ম নেই। কোন অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার একান্ত প্রয়োজন থাকলে নিতে হয় বোর্ডের অনুমতি।

এতো সব নিয়মের তোয়াক্কা না করে তাসকিন সাকিবের  বিনা অনুমতিতে অনুষ্ঠানে যোগ দেবার সংবাদে তাই ক্ষুব্ধ বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডও।

এ নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করেছেন বিসিবি বস নাজমুল হাসান পাপন। শোনা যাচ্ছে বিশ্বকাপ শেষে দেশে ফিরলেই সাকিবের বিপক্ষে হার্ড লাইনে যাবে দেশের ক্রিকেট নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

সিডনিতে অনুষ্ঠিত যে আয়োজনে সাকিব এবং তাসকিন যোগ দিয়েছিলেন, সেটির নাম "অ্যান এক্সক্লুসিভ ডিনার উইথ বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্রিকেট প্লেয়ার্স।" যে কারোর জন্য সেই অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার সুযোগ ছিল  ৯০ অস্ট্রেলিয়ান ডলারের বিনিময়ে।

এই অনুষ্ঠানকে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আরও আগে থেকেই ব্যাপক প্রচারণা চালিয়েছে আয়োজক সংগঠন।

প্রচারণায় প্যাকেজ ভেদে বিভিন্ন ডিনার টেবিলের টিকিটের দাম ছিল বিভিন্ন রকম। বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে এসব টিকিট বিক্রি করেছেন আয়োজকেরা। সর্বোচ্চ ২০০০ ডলার দাম ছিলো ভিআইপি টেবিলের টিকেটের।

ভিআইপি টেবিলের টিকিট পেয়েছেন মাত্র ১০জন, এই প্যাকেযে সাকিব আল হাসান ও তাসকিনের  সঙ্গে টেবিলে বসে স্পেশাল ডিনার, একক ছবি ও ব্যক্তিগতভাবে কথা বলার সুযোগ ছিলো।

যেখানে বিসিবি ও টিম ম্যানেজমেন্টের উচিত এসব থেকে খেলোয়াড়দের দূরে রাখা, নিয়ম মানতে বাধ্য করা, সেখানে সাকিবের নিয়ম অমান্য করার বিষয়ে  প্রশ্ন করলে পরিচালক জালাল উইনুস জানান,

''আমরা অনুষ্ঠানটি বাতিল করেছিলাম। সাকিবকে যেতে নিষেধ করা হলেও তিনি শোনেনি। আর ওদেরই জিজ্ঞেস করে দেখুন, ওরা কেন গেল। আমরা ওদের যেতে বলিনি।’'

পরিচালকের এই অসহায় উত্তর অনেকটা বুঝিয়ে দেয় সাকিব আল হাসানের আকাশচুম্বী তারকাখ্যাতির কাছে বোর্ডও যেন অসহায়! 

বোর্ড খেলোয়াড়কে নিয়ন্ত্রণ করার কথা থাকলেও, সাকিবকে নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ বিসিবি। উল্টো সাাকিবই যেন নিয়ন্ত্রণ করছেন ক্রিকেট বোর্ড।

১৬ বছরের ক্যারিয়ারে নিয়মিত বিতর্ককে সঙ্গী করে পথ চলেন সাকিব। অল্প কিছুদিন আগে অধিনায়ক হয়েও নিউজিল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজে  সময়মত দলের সাাথে যোগ দিতে পারেননি।

বিসিবির অনুমতি না নিয়ে বেটউইনারের মতো অনলাইন জুয়া খেলার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করে তুমুল বিতর্কের জন্ম দিয়েছিলেন তিনি।

প্রচন্ড চাপে পড়ে শেষ পর্যন্ত বেটউইনারের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করতে বাধ্য হয়েছিলেন ঠিকই, কিন্তু বিসিবির পক্ষ থকে মেলেনি কোন শাস্তি। 

এবারের প্রোটোকল ভেঙে নৈশ ভোজের আয়োজনে অংশগ্রহণ করে অর্থ বাণিজ্য করাকে কড়া ভাবেই নিচ্ছে বিসিবি। তবে বোর্ড তা নিয়ে এখনই কোন হার্ড লাইনে যাবে না, সিধান্ত হবে টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ মিশন শেষের পর।

একজন অধিনায়ক হিসেবে বিশ্বকাপে দলীয় প্রটোকল ভেঙ্গে বিনা অনুমতিতে  অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার ব্যাপারটাকে কীভাবে সামলাবেন সাকিব? বিসিবি তার বিপরীতে কি সিধান্ত নেবে, তা জানতে অপেক্ষা বিশ্বকাপ শেষের।