রাজধানীর পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে দায়ের করা পৃথক তিন মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় এবং মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে কারাদণ্ড দিয়েছেন ঢাকার পাঁচ নম্বর বিশেষ জজ আদালত। বিচারক মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে এ রায় ঘোষণা করেন।
রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক শেষ হয় গত ২৩ নভেম্বর। এরপর আদালত আজ (২৭ নভেম্বর) রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন।
শেখ হাসিনা: তিনটি মামলায় ৭ বছর করে মোট ২১ বছরের কারাদণ্ড। সজীব ওয়াজেদ জয়: এক মামলায় ৫ বছর কারাদণ্ড ও ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড। সায়মা ওয়াজেদ পুতুল: পৃথক মামলায় ৫ বছর কারাদণ্ড
তিন মামলায় মোট ৪৭ জন আসামি থাকলেও ব্যক্তি হিসেবে আসামির সংখ্যা ২৩। তাদের মধ্যে হাসিনা, জয় ও পুতুল ছাড়া আরও ২০ জন ছিলেন বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তা।
তাদের মধ্যে রয়েছেন— সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব পূরবী গোলদার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য শফি উল হক, মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী, নায়েব আলী শরীফ, কাজী ওয়াছি উদ্দিন, শহীদ উল্লা খন্দকার, কবির আল আসাদ, তন্ময় দাস, মো. নুরুল ইসলাম, শেখ শাহিনুল ইসলাম, মো. কামরুল ইসলাম, মো. হাফিজুর রহমান, হাবিবুর রহমান এবং প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব মোহাম্মাদ সালাউদ্দিন।
আসামিদের মধ্যে মাত্র একজন, গৃহায়ণ মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম সরকার, তিন মামলাতেই খালাস পেয়েছেন।
এই মামলার একমাত্র গ্রেপ্তার আসামি রাজউকের সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম তিনটি মামলায় ১ বছর করে মোট ৩ বছরের কারাদণ্ড পেয়েছেন।
গত ১৭ নভেম্বর তিনটি মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়। এর আগে ৩১ জুলাই আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আদালত বিচার শুরুর আদেশ দেন।
এক মামলায় আসামি ছিল ১২ জন, আরেকটিতে ১৭ জন এবং তৃতীয় মামলায় ১৮ জন। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) গত জানুয়ারিতে প্লট বরাদ্দে জালিয়াতির অভিযোগে মোট ছয়টি মামলা করেছিল। আজ ঘোষিত তিনটির রায় সেই মামলাগুলোর প্রথম ধাপ।
এর আগে ১৭ নভেম্বর মানবতাবিরোধী অপরাধের একটি মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড দেন। একই মামলায় পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুনকে (রাজসাক্ষী) পাঁচ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়।