জাতীয়

রাজধানীতে সড়ক অবরোধ করেছেন ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকরা

উপ-সম্পাদক

উপ-সম্পাদক

রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪
রাজধানীতে সড়ক অবরোধ করেছেন ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকরা
রাজধানী ঢাকার মোহাম্মদপুর এবং জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের সড়কসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকরা। তাদের এই আন্দোলনের ফলে মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, মিরপুর, গাবতলী, পল্টন, গুলিস্তান ও হাইকোর্ট এলাকার সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। যান চলাচল ব্যাহত হওয়ায় সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।
রোববার (২৪ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মোহাম্মদপুরের বেড়িবাঁধ চার রাস্তার মোড় এবং ঢাকা উদ্যান এলাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকরা সড়ক অবরোধ শুরু করেন। মোহাম্মদপুর থানার ওসি আলী ইফতেখার হাসান জানিয়েছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তবে আকস্মিক এই অবরোধে যান চলাচল সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যায়।
এর আগে, গত বুধবার রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর দয়াগঞ্জ, মিরপুর, কল্যাণপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় সড়ক অবরোধ করেন ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকরা। পরদিন বৃহস্পতিবারও (২১ নভেম্বর) সকাল থেকে মহাখালী, মোহাম্মদপুর, মিরপুর, গাবতলী এবং ডেমরা এলাকায় তারা জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন। এই ধারাবাহিক বিক্ষোভের ফলে ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয় এবং সাধারণ মানুষের যাতায়াতে বড় ধরনের ভোগান্তি হয়।
উচ্চ আদালত থেকে গত ১৯ নভেম্বর ঢাকার মহানগর এলাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়। প্যাডেল চালিত রিকশা সমিতির করা একটি রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি শেষে বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি মাহমুদুর রাজীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদেশে বলা হয়, ব্যাটারিচালিত রিকশার জন্য কোনো ধরনের নিবন্ধন বা লাইসেন্স দেওয়ার সুযোগ নেই। তাই এই যানবাহনগুলোকে পুরোপুরি অবৈধ বলে ঘোষণা করা হয়েছে। একই সঙ্গে হাইকোর্ট সংশ্লিষ্টদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে।
আদালতের নির্দেশ বাস্তবায়নে স্বরাষ্ট্র সচিব, স্থানীয় সরকার সচিব, আইজিপি, ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার, এবং ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
ব্যাটারিচালিত রিকশা চালকদের মতে, এই নিষেধাজ্ঞা তাদের জীবিকা সম্পূর্ণভাবে নষ্ট করে দেবে। তারা দাবি করেন, এই যানবাহনগুলো নিষিদ্ধ করার পরিবর্তে একটি নীতিমালার আওতায় এনে নিবন্ধন এবং লাইসেন্স দেওয়ার সুযোগ দেওয়া উচিত।
চালকদের অভিযোগ, প্যাডেল চালিত রিকশা সমিতি তাদের প্রতিযোগিতার কারণে ব্যাটারিচালিত রিকশাগুলোর বিরুদ্ধে রিট করেছে। তবে এই নিষেধাজ্ঞার ফলে নিম্ন আয়ের মানুষ বিশেষ করে চালকরা কঠিন সংকটে পড়বেন।
সরকারি নিষেধাজ্ঞার ফলে বিক্ষোভ ক্রমশ বাড়ছে। এর ফলে ঢাকার যানজট পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। যদিও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে, তবে সমস্যার দীর্ঘমেয়াদি সমাধানে আলোচনার মাধ্যমে একটি গ্রহণযোগ্য নীতিমালা প্রণয়ন করা প্রয়োজন।
ব্যাটারিচালিত রিকশার ওপর নিষেধাজ্ঞা নিয়ে সরকারের পদক্ষেপ এবং চালকদের বিক্ষোভ ঢাকা মহানগরের পরিবহন ব্যবস্থায় বড় ধরনের সংকট সৃষ্টি করেছে। সমস্যার স্থায়ী সমাধানে সরকার, আদালত এবং রিকশাচালকদের মধ্যে সমন্বিত উদ্যোগ অপরিহার্য। নিষেধাজ্ঞার পরিবর্তে আধুনিকায়ন এবং সঠিক নীতিমালা প্রণয়ন এই সমস্যার সমাধানে সহায়ক হতে পারে।