জুলাই-আগস্ট মাসের গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে পুলিশের সাবেক প্রধান আবদুল্লাহ আল-মামুনসহ আট পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত এক মাসের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। বুধবার (২০ নভেম্বর ২০২৪) সকালে পুরোনো হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে অবস্থিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তাদের হাজির করা হয়।
এ মামলার মূল অভিযোগ হলো, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে গণহত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত কর্মকর্তারা মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত ছিলেন। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি বেঞ্চ এ নির্দেশ দেন।
এই মামলায় অভিযুক্ত আট কর্মকর্তার তালিকায় রয়েছেন: সাবেক পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন,এনটিএমসির সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) জিয়াউল আহসানঢাকা জেলার সাবেক পুলিশ সুপার মো. আব্দুল্লাহ আল কাফি,মিরপুর ডিএমপির সাবেক ডিসি মো. জসিম উদ্দিন মোল্লা,ঢাকার সাবেক অতিরিক্ত সুপার (সাভার সার্কেল) মো. শাহিদুর ইসলাম,যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসান,গুলশান থানার সাবেক ওসি মাজহারুল হক,ঢাকা উত্তর ডিবির সাবেক পরিদর্শক মো. আরাফাত হোসেন।
অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের প্রিজনভ্যানে করে আদালতে হাজির করা হয়। এর আগে গত ২৭ অক্টোবর ট্রাইব্যুনাল প্রসিকিউশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাদের গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। এই মামলায় পুলিশের সাবেক ১৭ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হলেও আপাতত আটজনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এই মামলার তদন্ত এক মাসের মধ্যে শেষ করতে তদন্ত দলকে নির্দেশ দিয়েছেন। আগামী ১৯ ডিসেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে। চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম মামলার পক্ষে শুনানি করেন।
এটি একটি বহুল আলোচিত মামলা, কারণ এটি মানবতাবিরোধী অপরাধে পুলিশের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে ধরেছে। গণহত্যার ঘটনায় এ ধরনের মামলা দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।
ট্রাইব্যুনালের নির্দেশনা অনুযায়ী তদন্ত দল দ্রুততার সঙ্গে কাজ শেষ করবে বলে আশা করা হচ্ছে। একইসঙ্গে আদালতের পরবর্তী শুনানিতে নতুন তথ্য উঠে আসতে পারে।
এই মামলার রায় দেশের বিচারব্যবস্থায় একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে, যেখানে মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে জড়িত উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদেরও বিচারের মুখোমুখি করা হচ্ছে।