জাতীয়

বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

উপ-সম্পাদক

উপ-সম্পাদক

শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪
বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। শুক্রবার সকালে নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এই মন্তব্য করেন। তাঁর মতে, দুই দেশের সম্পর্ক পারস্পরিক সম্মানবোধ ও আত্মবিশ্বাসের ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে, যা বিভিন্ন খাতে সহযোগিতার মাধ্যমে আরও গভীর হয়েছে।
সেমিনারে তৌহিদ হোসেন বলেন, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে মিয়ানমারে তাদের প্রত্যাবাসনই একমাত্র টেকসই সমাধান। তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ চীনের কাছ থেকে আরও আন্তরিক ও সক্রিয় ভূমিকা প্রত্যাশা করে। বিশেষ করে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়ায় চীনের সহযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ। চীন ইতোমধ্যেই এ বিষয়ে মধ্যস্থতা করেছে এবং ভবিষ্যতে আরও জোরালো ভূমিকা পালনের সুযোগ রয়েছে।
সেমিনারে চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, বাংলাদেশের প্রতিটি সংকটে চীন সবসময় পাশে ছিল এবং থাকবে। কোভিড-১৯ মহামারি কিংবা জুলাই মাসের রাজনৈতিক অস্থিরতার সময়েও চীনা কোম্পানিগুলোর কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা বাংলাদেশ ত্যাগ করেননি। বরং তাঁরা কাজ চালিয়ে গেছেন এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই প্রকল্পগুলো সম্পন্ন করেছেন। এ ধরনের কর্মকাণ্ড বাংলাদেশ-চীন সম্পর্কের গভীরতা এবং বিশ্বাসযোগ্যতার প্রমাণ।
চীনের রাষ্ট্রদূত আরও উল্লেখ করেন, বাংলাদেশে চীনের বিনিয়োগ ও প্রকল্পগুলো শুধু দুই দেশের জন্যই নয়, বরং এই অঞ্চলের সার্বিক উন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই)-এর অংশ হিসেবে বাংলাদেশের বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পে চীনের অবদান উল্লেখযোগ্য।
তৌহিদ হোসেন তাঁর বক্তব্যে বলেন, চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক কেবল বাণিজ্যিক নয়, বরং এটি একটি কৌশলগত অংশীদারিত্ব। তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে চীনের ভূমিকা আরও জোরদার হলে এই সমস্যার টেকসই সমাধান সম্ভব হবে। তিনি বিশ্বাস করেন, দুই দেশের সম্পর্ক ভবিষ্যতে আরও শক্তিশালী হবে।
সেমিনারে শিক্ষাবিদ, গবেষক, এবং নীতিনির্ধারকরা উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা বাংলাদেশ-চীন সম্পর্কের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা এবং এর মাধ্যমে আঞ্চলিক উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
বাংলাদেশ ও চীনের এই ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের মধ্যে রোহিঙ্গা ইস্যু একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। চীনের মধ্যস্থতায় এই সংকট সমাধানের সম্ভাবনা নিয়ে নতুন আশার আলো দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে এ ক্ষেত্রে চীনের আরও সক্রিয় ভূমিকা এবং আন্তরিক সহযোগিতা প্রত্যাশা করছে বাংলাদেশ।
এই সেমিনারের মাধ্যমে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের নতুন দিক এবং চীনের সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারিত্বের গুরুত্ব আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।