জাতীয়

আবু সাঈদ হত্যা: নতুন করে ৭ জনকে এজাহারে অন্তর্ভুক্তির নির্দেশ

উপ-সম্পাদক

উপ-সম্পাদক

সোমবার, ২৮ অক্টোবর, ২০২৪
আবু সাঈদ হত্যা: নতুন করে ৭ জনকে এজাহারে অন্তর্ভুক্তির নির্দেশ
রংপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহিদ হওয়া আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের মামলায় নতুন করে সাতজনকে এজাহারে অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এতে অন্যতম আসামি হিসেবে নাম যুক্ত করা হয়েছে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি হাসিবুর রশিদ ও প্রোক্টর শরিফুল ইসলামকে। আদালতের নির্দেশে এই সাতজনের বিরুদ্ধে নতুন করে অভিযোগ আনা হলো, যা মামলার তদন্তে নতুন মোড় আনতে পারে।
আদালতের পরিদর্শক পৃথিস রায় জানান, আবু সাঈদের বড় ভাই ও মামলার বাদী রমজান আলী গত ৯ অক্টোবর আদালতে আবেদন করেন, যাতে আরও সাতজনকে এজাহারে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। মামলার শুনানি শেষে ২৪ অক্টোবর আদালত এই নির্দেশ দেন। অভিযুক্ত অন্য চারজন হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী মোহাম্মদ নুরুন্নবী, পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত শাহ নূর আলম পাটোয়ারী, সুরতহাল প্রস্তুতকারী এসআই তরিকুল ইসলাম এবং সুরতহাল রিপোর্টে স্বাক্ষরকারী এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট আহমেদ সাদাত।
এর আগে, গত ১৯ আগস্ট আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডে জড়িত হিসেবে আরও ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ১৩০-১৩৫ জন অজ্ঞাতনামাকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়। ওই এজাহারে উল্লেখিত আসামিদের মধ্যে রয়েছেন পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) আব্দুল্লাহ আল মামুন, রংপুর রেঞ্জের সাবেক ডিআইজি আব্দুল বাতেন, সাবেক পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, উপকমিশনার আল মারুফ হোসেন, সহকারী কমিশনার মো. আরিফুজ্জামান, আল ইমরান হোসেন, এবং তাজহাট থানার সাবেক ওসি রবিউল ইসলাম। এছাড়াও, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ বিভূতি ভূষণ রায়, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আমির আলী, কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়, গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মশিউর রহমান, লোকপ্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আসাদুজ্জামান মণ্ডল, প্রোক্টর অফিসের কর্মকর্তা রাফিউল হাসান, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি পোমেল বড়ুয়া, সাধারণ সম্পাদক শামীম মাহফুজ, সাংগঠনিক সম্পাদক ধনঞ্জয় কুমার রায় ও দফতর সম্পাদক বাবুল হোসেনকেও আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
এই মামলায় ইতোমধ্যেই পুলিশের সাবেক আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুন, এএসআই সৈয়দ আমির আলী এবং কনস্টেবল সুজন চন্দ্রকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নেয়া হয়েছিল। বর্তমানে তারা কারাগারে আটক রয়েছেন। মামলার তদন্তে উল্লেখিত এই নতুন অন্তর্ভুক্ত আসামিদের বিষয়ে আরো গভীর অনুসন্ধান হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ড এবং তার সাথে যুক্ত বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন বাংলাদেশের সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে একটি তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। আদালতের এ নির্দেশনা সেই ঘটনাকে নতুন করে আলোচনার কেন্দ্রে নিয়ে এসেছে। সাধারণ মানুষ এবং বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ঘটনা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর নৈতিকতার সংকট এবং ক্ষমতার অপব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।