জাতীয়

বায়তুল মোকাররমের নতুন খতিবকে নিয়ে যা বললেন শায়খ আহমাদুল্লাহ

উপ-সম্পাদক

উপ-সম্পাদক

শনিবার, ১৯ অক্টোবর, ২০২৪
বায়তুল মোকাররমের নতুন খতিবকে নিয়ে যা বললেন শায়খ আহমাদুল্লাহ
জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের নতুন খতিব হিসেবে মুফতি মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুল মালেকের নিয়োগ নিয়ে আলোচনার ঝড় বইছে দেশের ইসলামিক মহলে। তার নিয়োগকে কেন্দ্র করে সামাজিক ও ধর্মীয় প্ল্যাটফর্মগুলোতে অভিনন্দনের বার্তা ভেসে আসছে। দেশের অন্যতম জনপ্রিয় ইসলামী আলোচক ও আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ তাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেছেন যে, মুফতি আব্দুল মালেক একজন উচ্চতর হাদিস পণ্ডিত এবং ইসলামের বিভিন্ন শাখায় তার ব্যাপক গবেষণাকর্ম রয়েছে।
শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) শায়খ আহমাদুল্লাহ তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে মুফতি আব্দুল মালেককে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, “জাতীয় মসজিদ বায়তুল মুকাররমের খতিব নিযুক্ত হয়েছেন দেশের বিশিষ্ট আলেম মাওলানা আবদুল মালেক হাফিযাহুল্লাহ। অভিনন্দন তাকে। তিনি হাদিস-শাস্ত্রের পণ্ডিত এবং অত্যন্ত বিনয়ী একজন মানুষ। ইসলামী জ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় তার ব্যাপক গবেষণাকর্ম ও অবদান আছে।”
তিনি আরও বলেন, "মহান আল্লাহ তাঁকে ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর কল্যাণে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখার এবং দল-মত-গোষ্ঠী নির্বিশেষে সকল মুসলিমের জাতীয় অভিভাবক হিসেবে দায়িত্ব পালন করার তাওফিক দান করুন।” শায়খ আহমাদুল্লাহর এই মন্তব্যটি তার অনুসারী এবং ইসলামী পণ্ডিতদের মধ্যে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে।
মুফতি মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুল মালেকের নিয়োগের বিষয়টি নিশ্চিত করে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় যে, তিনি দেশ-বিদেশের প্রসিদ্ধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ইসলামিক স্টাডিজ, হাদিস ও ফিকহ বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেছেন। তার অন্যতম ওস্তাদ ছিলেন বিশ্বখ্যাত ইসলামিক স্কলার মুফতি বিচারপতি তাকী ওসমানী। এছাড়া, তিনি সৌদি আরবের রিয়াদে অবস্থিত ইমাম মোহাম্মদ ইবনে সাউদ ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের উসুলুদ্দীন অনুষদের অধ্যাপক শায়খ আবদুল ফাত্তাহ আবু গুদ্দাহর (রহ.) অধীনে দুই বছর উচ্চতর গবেষণা পরিচালনা করেন।
আবদুল মালেকের কর্মজীবন এবং গবেষণার পরিধি শুধু বাংলাদেশেই সীমাবদ্ধ নয়। তিনি মক্কা, মদিনা, পাকিস্তান, ভারত এবং তুরস্কসহ বিভিন্ন দেশে সফর করেছেন এবং বহু আন্তর্জাতিক সেমিনারে অংশগ্রহণ করেছেন। সেখানে তিনি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেছেন এবং ইসলামী চিন্তাধারার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেছেন। তার গবেষণা ও লেখালেখির মধ্য দিয়ে তিনি আন্তর্জাতিক মহলেও পরিচিতি লাভ করেছেন।
মুফতি আব্দুল মালেক বাংলা, আরবি, ইংরেজি ও উর্দু ভাষায় মোট ১৬টি গ্রন্থ রচনা করেছেন। তার গ্রন্থগুলো ইসলামী জ্ঞান চর্চার গুরুত্বপূর্ণ রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তার তত্ত্বাবধানে পরিচালিত মাসিক আল-কাউসার নামের একটি গবেষণা পত্রিকাও নিয়মিতভাবে প্রকাশিত হয়, যা ইসলামী গবেষণার ক্ষেত্রে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। তার লেখালেখি ও গবেষণার মাধ্যমে তিনি ইসলামী পণ্ডিতদের মধ্যে সম্মানিত অবস্থান তৈরি করেছেন।
বায়তুল মোকাররমের খতিব হিসেবে মুফতি আব্দুল মালেকের নিয়োগকে দেশের ইসলামী সমাজের বিভিন্ন মহল ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেছে। তাকে কেন্দ্র করে মুসলিম উম্মাহর কল্যাণে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালনের প্রত্যাশা করা হচ্ছে। তার গবেষণাকর্ম, আন্তর্জাতিক পরিচিতি এবং ইসলামী চিন্তাবিদদের মধ্যে গভীর প্রভাব তাকে একজন শক্তিশালী ধর্মীয় নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
মুফতি আব্দুল মালেকের নেতৃত্বে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম ইসলামী শিক্ষার আলোকে আরও সমৃদ্ধ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। দল-মত-গোষ্ঠী নির্বিশেষে সকল মুসলিমের অভিভাবক হিসেবে দায়িত্ব পালন করার জন্য তাকে যেভাবে দেখা হচ্ছে, তাতে তার নিয়োগ ইসলামী সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে বলে অনেকেই আশাবাদী।