জাতীয়

নীলফামারীতে পানিবন্দি প্রায় ৫ হাজার পরিবার

স্টাফ রিপোর্টারঃ

স্টাফ রিপোর্টারঃ

রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
নীলফামারীতে পানিবন্দি প্রায় ৫ হাজার পরিবার
উজানের পাহাড়ি ঢল আর টানা বৃষ্টিপাতে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। নীলফামারীতে সৃষ্ট বন্যায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ৫ হাজার পরিবার। গত কাল রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬টায় ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানিপ্রবাহ বেড়ে বিপৎসীমার ২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি নিয়ন্ত্রণে তিস্তা ব্যারাজের সব কটি (৪৪টি) জলকপাট খুলে দিয়েছে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কর্তৃপক্ষ।এদিকে নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদীর তীরবর্তী ডিমলা উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের ১৫টি চরগ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার বসত ভিটার উঠানে পানি প্রবেশ করায় দুর্ভোগে পড়েছে এসব এলাকার হাজার হাজার মানুষজন। 

পানি উন্নয়ন বোর্ড নীলফামারীর ডালিয়া ডিভিশনের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, গত শনিবার সকাল নয়টায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। এরপর বেলা ১২টা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত ১০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমানে বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও রাতে ১২টায় বিপৎসীমা অতিক্রম করে আজ সকাল ছয়টা পর্যন্ত বিপৎসীমার দুই সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে থাকে। তবে সকাল ৯টায় পানি তিন সেন্টিমিটার কমে বর্তমানে বিপৎসীমার এক সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তা ব্যারাজের নীলফামারী ডালিয়া পয়েন্টে নদীর পানির বিপৎসীমা ৫২ দশমিক ১৫ মিটার। 

এদিকে তিস্তার পানি বৃদ্ধির ফলে নদীর তীরবর্তী নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার পশ্চিম ছাতনাই, পূর্বছাতনাই, টেপাখড়িবাড়ি, খালিশা চাপানী, ঝুনাগাছ চাপানী, খগাখড়িবাড়ি, গয়াবাড়ি ইউনিয়নের ১৫ গ্রামের নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করে। এসব গ্রামের পাঁচ সহস্রাধিক মানুষের বসতভিটায় পানি প্রবেশ করায় বন্যার শঙ্কায় রয়েছেন এসব নিম্নাঞ্চলের প্রায় পাঁচ সহস্রাধিক মানুষজন। এছাড়া এসব চরগ্রামের প্রায় ১২ হেক্টর জমির আধাপাকা আমন ধান ক্ষেতে আংশিক নিমজ্জিত হয়ে রয়েছে নদীর পানিতে। তবে বর্তমানে পানি হ্রাস পাওয়ায় সেই শঙ্কা কিছুটা কেটেছে বলে জানান স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। পানি উন্নয়ন বোর্ড নীলফামারীর ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. আতিকুর রহমান বলেন, গত চার দিন ধরে মাঝারি ও ভারি বৃষ্টিপাত আর উজানের ঢলে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। 

শনিবার দুপুর ১২টার পর থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমা পাঁচ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও রাতে ১২টায় তা বিপৎসীমা অতিক্রম করে সকাল ৬টায় পর্যন্ত বিপৎসীমার দুই সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এরপর সকাল ৯টায় কমে বর্তমানে বিপৎসীমার এক সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যারাজারে সব কটি (৪৪টি) জলকপাট খুলে দেওয়া হয়েছে। আমরা সতর্কাবস্থায় রয়েছি। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। 

আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত নদীর পানি ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাবে।ডিমলা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. মেজবাহুর রহমান বলেন, স্থানীয় চেয়ারম্যানদেরকে বন্যা কবলিত এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকা তৈরির কথা বলা হয়েছে। আগামীকাল ত্রাণ প্রাপ্তি সাপেক্ষে বিতরণ করা হবে।