পরিবারকল্যাণ পরিদর্শিকার ১,০৮০টি পদে প্রশিক্ষণার্থী মনোনয়নের প্রক্রিয়ায় নতুন করে মৌখিক পরীক্ষা নেওয়ার এবং রায় পাওয়ার ৩ মাসের মধ্যে ফলাফল প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায়ের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল এই রায় দেন।
২০২০ সালের ১০ মার্চ পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর ১,০৮০টি পরিবারকল্যাণ পরিদর্শিকার পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে ২০২৩ সালের ১১ মে ৭,৬২১ জন প্রার্থী উত্তীর্ণ হন। পরবর্তীতে ২০২৩ সালের ২৫ মে থেকে ১৮ জুন পর্যন্ত মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। নিয়ম অনুযায়ী, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের ১৮ মাসের প্রশিক্ষণ শেষে তাদের চূড়ান্তভাবে নিয়োগ দেওয়ার কথা।
তবে চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি একটি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে পূর্বের মনোনয়ন প্রক্রিয়া বাতিলের ঘোষণা দেয় পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা পুনরায় নেওয়া হবে। এ সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়ে কয়েকজন প্রার্থী বিজ্ঞপ্তির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে পৃথক চারটি রিট দায়ের করেন।
রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে হাইকোর্ট রুল নিষ্পত্তি করে রায় দেন। আদালত পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরকে নতুন করে মৌখিক পরীক্ষা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন এবং ৩ মাসের মধ্যে চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশের নির্দেশ দেন।
রিট আবেদনকারীদের পক্ষে আদালতে উপস্থিত ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম, আইনজীবী সিদ্দিক উল্লাহ মিয়া, জ্যোতির্ময় বড়ুয়া ও সৈয়দা নাসরিন। তারা যুক্তি দেন, পূর্বের প্রক্রিয়া বাতিল করা অযৌক্তিক ও ক্ষতিকর।
অপরদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আরশাদুর রউফ এবং ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তানিম খান। তারা সরকারের পক্ষে বিজ্ঞপ্তির যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করেন।
পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের দাবি, পূর্বের মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় অসঙ্গতি ছিল। তবে আদালত মনে করেন, নতুন মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান হতে পারে।
এই রায়ের ফলে চাকরিপ্রত্যাশীরা তাদের অপেক্ষার অবসান ঘটাতে পারবেন। তিন মাসের মধ্যে নতুন ফলাফল প্রকাশের নির্দেশ চাকরিপ্রার্থীদের জন্য একটি স্বস্তির বিষয়। এটি শুধু একটি ন্যায়বিচারের উদাহরণ নয়, বরং দেশের নিয়োগ প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিশ্চিতের পথে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
এই রায় পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মতো অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্যও একটি বার্তা হয়ে থাকবে যে, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও সময়মতো কার্যক্রম সম্পন্ন করা অপরিহার্য।