যুক্তরাষ্ট্রের কেনটাকি অঙ্গরাজ্যের লুইসভিলে একটি ইউপিএস (UPS) কার্গো বিমান উড্ডয়নের সময় বিধ্বস্ত হয়ে অন্তত ৯ জন নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় স্থানীয় সময় ৫টা ১৫ মিনিটের দিকে মোহাম্মদ আলী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের পরপরই এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন রাজ্যের গভর্নর অ্যান্ডি বেশিয়ার।
গভর্নর জানান, বিমানটি আকাশে উঠতেই বিস্ফোরিত হয়, এবং এতে ঘন কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখা যায়। বিধ্বস্তের ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ১১ জন, যাদের অবস্থা গুরুতর। তিনি সতর্ক করে বলেন, “মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।”
লুইসভিলের মেয়র ক্রেইগ গ্রিনবার্গ জানান, প্রাথমিক উদ্ধার তৎপরতা শেষে বিমানবন্দর পুনরায় চালু করা হয়েছে। অন্যদিকে গভর্নর বেশিয়ার জানিয়েছেন, অন্তত ১৬টি পরিবার তাদের নিখোঁজ স্বজনদের খোঁজ করছে।
ইউপিএস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বিমানটিতে তিনজন ক্রু সদস্য ছিলেন, তবে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে হতাহতের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়নি। প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, আমরা ঘটনাটি নিয়ে গভীরভাবে শোকাহত এবং তদন্তকারীদের সঙ্গে কাজ করছি।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দুর্ঘটনার পর মঙ্গলবার সন্ধ্যার সব উড্ডয়ন বাতিল করা হয়েছে। লুইসভিল ফায়ার ডিপার্টমেন্টের প্রধান ব্রায়ান ও’নিল বলেন, বিপুল পরিমাণ জ্বালানি ছড়িয়ে পড়ায় ঘটনাস্থলটি অত্যন্ত বিপজ্জনক হয়ে উঠেছিল।
ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি ব্যুরো (NTSB) দুর্ঘটনার কারণ তদন্ত করছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, বিমানটিতে থাকা প্রায় ৩৮ হাজার গ্যালন (এক লাখ ৪৪ হাজার লিটার) জ্বালানি থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। এটি মূলত হাওয়াইগামী একটি এমডি-১১এফ ট্রিপল-ইঞ্জিন কার্গো বিমান ছিল, যা ৩৪ বছর আগে থাই এয়ারওয়েজে যাত্রীবাহী জেট হিসেবে সেবা শুরু করে এবং ২০০৬ সালে ইউপিএসের বহরে যুক্ত হয়।
বোয়িং এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “আমরা ইউপিএসের পাশে আছি এবং ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবার ও সহকর্মীদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।
এদিকে ইউপিএস জানিয়েছে, দুর্ঘটনার পর রাতে তাদের ওয়ার্ল্ডপোর্ট প্যাকেজ বাছাই কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। সংস্থাটি আরও বলেছে, “আমরা আমাদের কর্মী, গ্রাহক ও কমিউনিটির নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিই—বিশেষ করে লুইসভিলে, যা ইউপিএস এয়ারলাইনের হৃদয় এবং হাজারো কর্মীর কর্মস্থল।