মাত্র দুই দিনের মধ্যে নিউইয়র্কের ইতিহাসে এক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে। আগামী ৪ নভেম্বর নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে এগিয়ে থাকা ৩৪ বছর বয়সী ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জোহরান মামদানি বিজয়ী হলে দেশটির ইতিহাসে নতুন অধ্যায় শুরু হবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
পুঁজিবাদের রাজধানী হিসেবে খ্যাত এই শহরের সম্ভাব্য মেয়রকে ‘কমিউনিস্ট’ হিসেবে নিন্দা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এছাড়া তিনি নিউইয়র্কের জন্য বরাদ্দ কেন্দ্রীয় সরকারের বাজেট বন্ধ করার হুমকিও দিয়েছেন।
নিউইয়র্কবাসীরা এমন নেতা চাইছেন যিনি ট্রাম্পকে ‘এক হাত’ নিতে পারেন। মাত্র এক বছর আগে পর্যন্ত শহরের অতি কম মানুষই জোহরান মামদানিকে চিনতেন। এখন তিনি আন্তর্জাতিকভাবে আলোচিত নাম।
নিউইয়র্কের বাজেট ১১৬ বিলিয়ন ডলার এবং এটি বিশ্বের অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র। জোহরান মামদানির নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে বিনা ভাড়ায় বাস ও বাড়ি ভাড়া না বাড়ানো, শিশুদের বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা ও নাগরিকদের জন্য সামাজিক সুবিধা অন্তর্ভুক্ত।
শহরের স্বল্প আয়ের মানুষদের মধ্যে তার জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পেলেও উচ্চবিত্ত ও ধনী ব্যবসায়ী সমাজের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। কারণ জোহরান ধনকুবেরদের কর বাড়ানোরও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, জনসংযোগ কার্যক্রমে জোহরান মামদানির পথে ভিড় লেগে যায়; সমর্থকরা এগিয়ে আসেন করমর্দন ও সেলফি তুলতে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, কর্মজীবী মানুষের জন্য কথা বলায় তার জনপ্রিয়তা প্রতিদ্বন্দ্বীদের তুলনায় অনেক বেশি।
বর্তমান সমীক্ষায় দেখা গেছে, জোহরান মামদানির জনপ্রিয়তা প্রায় ৫০ শতাংশ, নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যান্ড্রু কুয়োমার সমর্থন ২৫ শতাংশ, আর রিপাবলিকান কার্টিজ স্লিওয়ার ২১ শতাংশ।
বিরোধীরা জোহরানকে ব্যবসায়ীবিরোধী, মুসলিম ও বড় শহরের দায়িত্বে অযোগ্য হিসেবে প্রচারণা চালাচ্ছেন। এছাড়া তিনি গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কথা বলায় নিউইয়র্কের কিছু সম্প্রদায়ের বিরোধিতা পাচ্ছেন। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এসবই তার জন্য ‘আশীর্বাদ’ হিসেবে কাজ করছে।
প্রতিদ্বন্দ্বীরা তাকে হারানোর জন্য বিশাল অর্থ ব্যয় করছেন। সম্প্রতি সাবেক মেয়র মাইকেল ব্লুমবার্গ ১.৫ মিলিয়ন ডলার দিয়েছেন প্রধান বিরোধী অ্যান্ড্রু কুয়োমোর জন্য।
দুটি দিন পর দেখা যাবে, কে শেষ হাসি হাসবেন।