শিক্ষা

যেই পাঁচটি দেশে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা কম খরচে উচ্চশিক্ষার সুযোগ পাবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

শনিবার, ১৮ মার্চ, ২০২৩
যেই পাঁচটি দেশে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা কম খরচে উচ্চশিক্ষার সুযোগ পাবে

উজ্জ্বল ক্যারিয়ারের আশায়, বর্তমানে বাংলাদেশের বহু শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশের পথে পাড়ি জমাতে ইচ্ছুক। তবে আর্থিক প্রতিবন্ধকতার জন্য অনেক শিক্ষার্থীর এই স্বপ্ন শুধু স্বপ্ন রয়ে যাচ্ছে।

তবে এশিয়া ও ইউরোপে এমন পাঁচটি দেশ রয়েছে যেখানে খুব কম খরচেই উচ্চশিক্ষার সুযোগ পাওয়া যাবে। দেখে নেওয়া যাক, সেই পাঁচটি দেশের তালিকা যেই দেশগুলো হতে পারে একজন শিক্ষার্থীর স্বপ্ন পূরণের মাধ্যম।


জার্মানি 

বর্তমানে,বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার জন্য প্রথম পছন্দ ইউরোপের অন্যতম দেশ জার্মানি। অন্যান্য দেশের তুলনায় এখানে পড়াশোনার ব্যয়'সহ জীবন নির্বাহের খরচ বেশ কম।

সেইসঙ্গে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি সহজে খণ্ডকালীন চাকরি পাওয়ার সুযোগ তো রয়েছেই। 

জার্মানির প্রায় ৯০ শতাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাচেলর কোর্স কিংবা মাস্টার্স কোর্সের জন্য আলাদা ভাবে টিউশন ফি দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। এক্ষেত্রে একজন বিদেশী শিক্ষার্থীকে শুধুমাত্র সেমিস্টার কন্ট্রিবিউশন ফি দিলেই চলে। 


প্রতিষ্ঠান ভেদে, সেমিস্টার ফি বাবদ একজন শিক্ষার্থীর প্রতি সেমিস্টারে খরচ হতে পারে বাংলাদেশী টাকায় ১১ হাজার ৩৭০ টাকা থেকে ৩৯ হাজার ৭৯৫ টাকা। (১০০-৩৫০ ইউরো) 

এসব ছাড়াও জার্মানিতে, থাকা-খাওয়া বিনোদন ইত্যাদির জন্য একজন শিক্ষার্থীর প্রতিমাসে খরচ হতে পারে বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ৬৮ হাজার থেকে শুরু করে ১ লক্ষ টাকার উপরে। (৬০০-৯০০ ইউরো)।

তবে পড়াশোনা, চাকরী এবং জীবনযাপন সহজ করতে অবশ্যই আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীকে জার্মান ভাষা শিখে নিতে হবে। 

ফ্রান্স 

বাহিরের দেশগুলোতে উচ্চ শিক্ষার জন্য ফ্রান্সকে কেন্দ্র করে আগ্রহের শেষ নেই শিক্ষার্থীদের। দেশটির বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নভুক্ত দেশের শিক্ষার্থীদের জন্য স্নাতক পর্যায়ের খরচ বেশ কম হলেও, বাহিরের দেশের শিক্ষার্থীদের জন্য বছরে স্নাতক পর্যায়ে খরচ হতে পারে প্রায় ৩ লাখ ১৫ হাজার ৫৬৩ টাকার মতো। অপরদিকে মাস্টার লেভেলে বছরে প্রায় ৪ লাখ ২৯ হাজারেরও বেশি টাকা খরচ হতে পারে।
(২৭৭০-৩৭৭০ ইউরো)।


ঐতিহ্যবাহী ফ্রান্সের বড় বড় শহরগুলোতে জীবনযাত্রার খরচ মোটামুটি হলেও, ছোট শহরগুলোতে মাস প্রতি ৭৪ হাজার টাকার মধ্যেই জীবন নির্বাহ করা সম্ভব হয়।

তবে ফ্রান্সে একজন বিদেশী শিক্ষার্থীকে জীবনযাত্রার খরচ বহন করতে তেমন একটা হিমশিম খেতে হবে না। কারণ সেখানে পড়ালেখার পাশাপাশি খণ্ডকালীন চাকরি করারও সুযোগ রয়েছে। এতে করে একজন শিক্ষার্থী সপ্তাহে ৯১১৩ টাকা থেকে শুরু করে ১৩ হাজারেরও উপরে আয় করার সুযোগ পেয়ে থাকেন। (৮০-১২০+ ইউরো) 

মালয়েশিয়া 

কম খরচে উচ্চশিক্ষার জন্য মালয়েশিয়া হতে পারে একজন শিক্ষার্থীর জন্য আদর্শ স্থান৷ এইতো ২০১৮ সালেও, শিক্ষার্থীদের জন্য সবচেয়ে সাশ্রয়ী শহর হিসেবে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর পুরো বিশ্বের মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে ছিল।

মালেশিয়ার যেকোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাচেলর ডিগ্রিতে খরচ হতে পারে বছর প্রতি প্রায় ২ লাখ ২৭ হাজার টাকা থেকে প্রায় ৫ লাখ ১২ হাজার টাকা পর্যন্ত। (২০০০-৪৫০০ ইউরো) 

পক্ষান্তরে, মাস্টার লেভেলে খরচ হতে পারে বছরে ৫৬ হাজার টাকা থেকে ৪ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। ( ৫০০-৪০০০ ইউরো) 

থাকা-খাওয়ার খরচও মালেয়শিয়াতে বেশ কম। জীবনযাত্রার খরচ মোটামুটি প্রতিমাসে ৫১ হাজার থেকে টাকা শুরু করে ৯১ হাজার টাকার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। (৪৫০-৮০০ ইউরো)

হাঙ্গেরি 

ইউরোপের অন্যান্য দেশগুলোর তুলনায় হাঙ্গেরিতে ভিসা জটিলতায় কম থাকায়, বর্তমানে বাংলাদেশের বহু শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষার জন্য দেশটিতে পাড়ি জমাতে ইচ্ছুক।

এখানকার পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে টিউশন ফি বেশ কম হয়ে থাকে। সেইসাথে একজন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীকে প্রতি শিক্ষাবর্ষে ১ লাখ ৩৬ হাজার থেকে ৫ লক্ষ ৬৯ হাজার ৯০১ টাকার মতো খরচ করতে হয়। (১২০০-৫০০০ ইউরো) 

শহর ভেদে বসবাসের জন্য মাস প্রতি ৪২ হাজার টাকা থেকে ৭৯ হাজার টাকার প্রয়োজন হয়। (৩৭৫-৭০০ইউরো)


নরওয়ে 

২০২৩ সালের আগেও নরওয়ের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিদেশি শিক্ষার্থীদের কোনরকম টিউশন ফি দিতে হতো না। তখন কেবল প্রতি সেমিস্টারে শিক্ষার্থী ইউনিয়ন ফি বাবদ ৩ হাজার ৪১৪ টাকা থেকে ৬ হাজার ৮২৯ টাকা পর্যন্ত খরচ হতো। (৩০-৬০ ইউরো)

তবে বর্তমানে সকল আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য টিউশন ফি দেওয়া বাধ্যতামূলক। ব্যতিক্রম শুধু ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং সুইজারল্যান্ডের ক্ষেত্রে।

নরওয়ের ছোটখাটো শহরগুলোতে বসবাসের জন্য মাস প্রতি কমপক্ষে ৯১ হাজার টাকার মত খরচ হয়ে থাকে। (৮০০ ইউরো)।