মাহতাব উদ্দিন আল মাহমুদ ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ ক্যাডেট কলেজে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ায় মেধাবী আরাফাতকে নিজ দপ্তরে ডেকে নিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়ে শুভেচ্ছা উপহার দিয়েছেন ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রফিকুল ইসলাম। দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার নুরজাহানপুর অবঃ সামরিক কলোনী উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষার্থী আরাফাত সিদ্দিকী (১৩)। ক্যাডেট কলেজ ভর্তি পরীক্ষা ২০২৪ এর চূড়ান্ত ফলাফলে রাজশাহী ক্যাডেট কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন মেধাবী এই শিক্ষার্থী।
আরাফাত সিদ্দিকী ঘোড়াঘাট পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের নুরজাহানপুর এলাকার মশিউর রহমান সিদ্দিকী রানার ছেলে।সে বাবা মায়ের পরিবারে প্রথম সন্তান । আরাফাত সিদ্দিকীর বাবা একজন ব্যবসায়ী ও মা নাসরিন আকতার দক্ষিণ জয়দেবপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা। দুই ভাই বোনের মধ্যে আরাফাত বড়।
গ্রামটি থেকে প্রথমবারের মতো কোন শিক্ষার্থী ক্যাডেট কলেজে ভর্তির সুযোগ পেল। এতে উচ্ছ্বাসিত আরাফাতের পরিবার এবং গ্রামবাসী। সোমবার (১১ মার্চ) চূড়ান্ত মেধা তালিকা প্রকাশ করে কর্তৃপক্ষ। ফলাফলে চলতি বছর রাজশাহী ক্যাডেট কলেজে ভর্তি সুযোগ পেয়েছেন ৫৪জন মেধাবী শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে একজন আরাফাত সিদ্দিকী। আগামী ১৮ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত চলবে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের স্বস্ব ক্যাডেট কলেজে ভর্তি কার্যক্রম।
পরিবারের প্রথম সন্তান হওয়ায় বাবা-মায়ের কাছে তিনি ছিলেন বেশ আদরের। আরাফাতের হাতে খড়ি পৌরসভার ব্রাইট কিন্ডার গার্ডেন স্কুলে। গত ২০২২ সালে এই কিন্ডার গার্ডেন স্কুল থেকে পঞ্চম শ্রেণীতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছে সে। এরপর মাধ্যমিকে ভর্তি হয়েছিল বাড়ির পাশের নুরজাহানপুর অবঃ সামরিক কলোনী উচ্চ বিদ্যালয়ে। ষষ্ঠ শ্রেণী কেটেছে তার এই বিদ্যালয়ে। বাবা-মায়ের অনুপ্রেরণায় অংশ গ্রহণ করে ক্যাডেট কলেজ ভর্তি পরীক্ষায়। কোচিং ছাড়া, শুধুমাত্র বাড়িতে পড়াশুনা করেই সে আজ গ্রামের প্রথম ক্যাডেট কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী।
এদিকে ক্যাডেট কলেজে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ায় মেধাবী আরাফাতকে নিজ দপ্তরে ডেকে নিয়ে গিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রফিকুল ইসলাম। দিয়েছেন শুভেচ্ছা উপহার।
মেধাবী শিক্ষার্থী আরাফাত সিদ্দিকী বলেন, আমার সফলতার পেছনের বড় কারিগর আমার বাবা-মা। আমার জন্য তারা দিনরাত পরিশ্রম করেছেন। তাদের আলোয় আমি আলোকিত হয়েছি। আমি পড়াশুনা শেষ করে দেশের জন্য কাজ করতে চাই। পরিবার ও গ্রামবাসীর মুখ উজ্জ্বল করতে চাই।
আরাফাতের বাবা মশিউর রহমান সিদ্দিকী রানা বলেন, আমি আমার ব্যবসায়িক কাজের বাইরে বাকি সময়টুকু সন্তানের জন্য ব্যয় করতাম। শত কাজের মাঝে তাকে প্রতিদিন স্কুলে নিয়ে যাওয়া এবং নিয়ে আসা আমার নিয়মিত কর্তব্য ছিল। এছাড়া আমার স্ত্রী শিক্ষকতা করার সুবাদে স্কুলের এবং পরিবারের কাজের শেষে বাকি সময়টুকু সন্তানের পেছনে সময় দিয়েছে। যার ফলশ্রুতিতেই আজকের সফলতা ও আনন্দঘন মুহূর্ত।