অর্থনীতি

বাংলাদেশকে ৯.৪ বিলিয়ন ঋণ দিবে এডিবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

সোমবার, ১৫ আগস্ট, ২০২২
বাংলাদেশকে ৯.৪ বিলিয়ন ঋণ দিবে এডিবি

আগামী তিন বছরে বাংলাদেশকে প্রায় ৯.৪ বিলিয়ন ডলার ঋণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক । 

করোনা পরবর্তী সময়ে অর্থনৈতিক অবস্থা পুনরুদ্ধার এবং বৈশ্বিক অনিশ্চয়তা থেকে সৃষ্ট সংকট মোকাবিলায় সহায়তার জন্য এই ঋণ দিতে যাচ্ছে তারা। 

২০২৩-২০২৫ সালের বাংলাদেশ লেন্ডিং পাইপলাইনের হালনাগাদ তালিকা প্রকাশ করেছে ব্যাংকটি। 

এই তালিকার আওতায় প্রতি বছর এডিবির কাছ থেকে ৩ বিলিয়ন ডলারের বেশি ঋণ পাবে বাংলাদেশ। 

লেন্ডিং পাইপলাইনের আওতায় মোট ৪৪টি প্রকল্পে ঋণ সহায়তা দিতে সম্মতি জানিয়েছে এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংক। 

সরকারের বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে আলোচনা করে সহায়তা প্রকল্পের তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে।

এডিবি মূলত দেশের প্রধান প্রধান অবকাঠামোগুলো নির্মাণ অব্যাহত রাখার জন্য অর্থ সহায়তা দিবে।

মোট ছয়টি খাতে ভাগ করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রকল্প তালিকা তৈরি করেছে এডিবি। 

বাংলাদেশ লেন্ডিং পাইপলাইন ২০২৩-২৫ সালের তথ্য মতে, সবচেয়ে বেশি ঋণ দেয়া হবে পরিবহন খাতে। আগামী তিন বছরে এই খাতে ২.৯ বিলিয়ন ডলার ঋণ দিবে এডিবি। 

এর পাশাপাশি শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে ২.৩৫ বিলিয়ন ডলার, পানি ও নগর খাতে ১.৩৯ বিলিয়ন ডলার, জ্বালানি খাতে ১.০৭ বিলিয়ন ডলার এবং কৃষি খাতে ৪৪১ মিলিয়ন ডলার ঋণ পাওয়া যাবে। 

আন্তঃআঞ্চলিক বাণিজ্য বাড়ানো, বেকারত্ব দূরীকরণ এবং বেসরকারি খাতে বিনিয়োগের সুযোগ বৃদ্ধিতে প্রয়োজনীয় সংস্কারে এই ঋণ ব্যবহার করা হবে। 

এছাড়া সড়ক ও রেলপথ করিডোরের উন্নয়নে অর্থা সহায়তা করবে এডিবি। আগামী তিন বছরে কয়েকটি সড়ক ও রেল প্রকল্পে অর্থায়ন করবে তারা। 

এর মধ্যে রয়েছে আখাউড়া থেকে লাকসাম পর্যন্ত রেললাইনকে ডুয়েলগেজ ডাবল লাইনে রূপান্তর প্রকল্প। এখানে প্রায় ৩০০ মিলিয়ন ডলার দিবে সংস্থাটি।

এছাড়া টঙ্গী-ভৈরব-আখাউড়া লাইলনের মিটারগেজকে ডুয়েলগেজ ডাবল রেললাইনে রূপান্তরে আরও একটি প্রকল্প এডিবির সহায়তা কার্যক্রমে অন্তর্ভূক্ত রয়েছে। 

সব প্রক্রিয়া শেষ করে এই প্রকল্পে ২০২৩ সালে অর্থয়ান করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছে এডিবি।

সরকার ইতিমধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের রেললাইনকে ডুয়েলগেজ ডাবল লাইনে রূপান্তরের কাজ শুরু করেছে। 

৭২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের আখাউড়া-লাকসাম অংশ এই প্রকল্পেই অন্তর্ভুক্ত। চলতি বছরের জুন পর্যন্ত এ কাজের অগ্রগতি ৮৫ শতাংশের বেশি।

আবার ঢাকা-চট্টগ্রাম পিপিপি হাইওয়ে প্রকল্পের জন্যও ৪০০ মিলিয়ন ডলার দেবে এডিবি।

এডিবির প্রদত্ত ঋণ এর সাহায্যে নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহারের সুযোগ বাড়ানো হবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। 

এর পাশাপাশি টেকসই পরিবহন গড়ে তোলার জন্য ম্যাস র‍্যাপিড ট্রানজিট ও বৈদ্যুতিক বাহনের উন্নয়ন কার্যক্রমে সহায়তা দেবে এডিবি। 

ঢাকা এবং চট্টগ্রামে বাণিজ্য বৃদ্ধি করতে ও বিদ্যমান হাইওয়েতে যানজট কমাতে বাংলাদেশকে নতুন এক্সপ্রেসওয়ের ডিজাইন প্রণয়নে সহায়তা করবে তারা।

ঢাকা-নর্থওয়েস্ট করিডোর রোড প্রজেক্ট প্রকল্পে দুই বছরে মোট ৭০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ পাওয়া যাবে সংস্থাটির কাছে থেকে ।

অন্যদিকে ঢাকা ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট, এসএএসইসি ইন্টিগ্রেটেড ট্রেড ফ্যাসিলিটি প্রজেক্টসহ আরও কয়েকটি প্রকল্পে অর্থায়ন পাবে বাংলাদেশ।

শুধু তাই নয়, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব প্রশমন ও অভিযোজনে সমন্বিত সমাধানেও অর্থ সহায়তা করতে যাচ্ছে এডিবি। 

জলবায়ু পরিবর্তন শক্তিশালীকরণ কর্মসূচির আওতায় ২০২৩ এবং ২০২৫ সালে দুই দফায় দেওয়া হবে ৫০০ মিলিয়ন ডলার। 

এছাড়া শিক্ষা কার্যক্রমে উন্নয়ন, টিকাদান ও উৎপাদন এবং টেকসই অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার এর মত কর্মসূচিতে আর্থিক সহায়তা দেয়া হবে বাংলাদেশকে। 

এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংকের বিপুল অংকের এই ঋণের সুফল পেতে চাইলে দ্রুত প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে। সেই সাথে প্রাপ্ত অর্থের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করার দিকে লক্ষ্য রাখা উচিত।