দেশের প্রথম মেট্রোরেল প্রকল্প—ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (এমআরটি লাইন-৬)—এর ব্যয় ৭৫৪ কোটি ২৬ লাখ টাকা কমেছে। তবে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে আরও তিন বছর।
আজ সোমবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের তৃতীয় সংশোধিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) অনুমোদিত হয়।
সংশোধিত প্রস্তাব অনুযায়ী প্রকল্পের মোট ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৩২ হাজার ৭১৭ কোটি ৭২ লাখ টাকা। ২০১২ সালে প্রথম প্রস্তাবিত ব্যয় ছিল ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা। পরে মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত লাইন সম্প্রসারণের সিদ্ধান্তে ২০২২ সালের দ্বিতীয় সংশোধনে ব্যয় বেড়ে ৩৩ হাজার ৪৭১ কোটি ৯৯ লাখ টাকায় ওঠে।
সর্বশেষ সংশোধনে সরকারের অংশের ব্যয় কমে দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার ৫২১ কোটি ৯৬ লাখ টাকা, আর উন্নয়ন সহযোগী জাইকার ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ হাজার ১৯৫ কোটি ৭৬ লাখ টাকায়।
প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। ডিএমটিসিএল জানিয়েছে, ইলেকট্রিক্যাল-মেকানিক্যাল সিস্টেম ইনস্টলেশন, টেস্টিং, ডিফেক্ট নোটিফিকেশন পিরিয়ড এবং নতুন ২৪টি ট্রেনসেটের মেজর ওভারহলিং সম্পন্ন করতে বাড়তি সময় প্রয়োজন।
প্রাথমিকভাবে মেট্রোরেলের বিকল্প আয়ের উৎস হিসেবে স্টেশন প্লাজা নির্মাণের পরিকল্পনা ছিল। পর্যালোচনায় তা লাভজনক নয় বলে বাদ দেওয়া হয়। এতে ভূমি অধিগ্রহণ খাতে ১,২১১ কোটি ৭১ লাখ টাকা এবং চারটি স্টেশন প্লাজা বাদ দেওয়ায় আরও ১৬৪ কোটি ৭২ লাখ টাকা সাশ্রয় হয়।
এ ছাড়া মেইন লাইনের সিভিল ও স্টেশন ওয়ার্ক (সিপি-০৬) খাতে ১১৬ কোটি টাকা এবং ইআরএমসি (সিপি-০৯) খাতে ৯০ কোটি ৪৫ লাখ টাকা ব্যয় কমেছে।
ডিপিপিতে নিম্নোক্ত খাতে ব্যয় বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে— রোলিং স্টকস ও ইকুইপমেন্ট: ৫৬১ কোটি ১৭ লাখ টাকা, জেনারেল কনসালটেন্সি সার্ভিস: ২২০ কোটি ২৮ লাখ টাকা, ইঅ্যান্ডএম সিস্টেম: ২৮৮ কোটি ৬৭ লাখ টাকা, ডিপো ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট: ৪৫ কোটি ২৮ লাখ টাকা।
প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়—উত্তরা–মতিঝিল অংশের কাজের অগ্রগতি: ৯৯.৪০%, মতিঝিল–কমলাপুর অংশের অগ্রগতি: ৬৩.১৫% মেট্রোরেল-৬ (দক্ষিণ) প্রকল্প পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুল ওহাব বলেন, “পর্যালোচনায় দেখা গেছে, বাদ দেওয়া স্টেশন প্লাজাগুলোর খুব বেশি প্রয়োজন নেই। এতে উল্লেখযোগ্য ব্যয় সাশ্রয় সম্ভব হয়েছে।
পরিকল্পনা কমিশনের সিনিয়র সচিব এম এ আকমল হোসেন আজাদ বলেন, “ঢাকা মহানগরে পরিবেশবান্ধব ও নিরাপদ গণপরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে যানজট নিরসনে এ প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”