বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা দপ্তরের সহকারী পরিচালক সেলিনা বেগমকে ঘিরে একের পর এক বিতর্কিত তথ্য বেরিয়ে আসছে। একাধিক বিয়ে, সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে অস্বাভাবিক সম্পর্ক, মদ্যপান, ব্ল্যাকমেইল ও নির্যাতনের মতো গুরুতর অভিযোগে বারবার আলোচনায় আসছেন তিনি।
সম্প্রতি লালমনিরহাট জেলা শিল্পকলা একাডেমীর কালচারাল কর্মকর্তা হাসানুর রশিদকে নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে আবারও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আসেন সেলিনা বেগম।
ভিডিওতে দেখা যায়, অফিস কক্ষে স্বামী হাসানুর রশিদকে টেনে হিঁচড়ে বাইরে নিয়ে যাচ্ছেন সেলিনা বেগম। এ সময় জামা ছিঁড়ে গেলেও তিনি ছাড়েননি। ঘটনার পর থানায় মামলা করেন হাসানুর। তার অভিযোগ—ব্ল্যাকমেইলের ফাঁদে পড়ে তিনি বিয়েতে জড়ান, কিন্তু দাম্পত্য জীবন টেকেনি।
ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন, নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে টার্গেট করে ফাঁদে ফেলেন সেলিনা। এরপর শুরু হয় ব্ল্যাকমেইল, কখনো বিয়ে, আবার কখনো সামাজিকভাবে অপদস্ত করা।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, একজন এএসপি, শিক্ষা ক্যাডারের দুই কর্মকর্তা, শিল্পকলা একাডেমীর এক কর্মকর্তা এবং বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়েরই এক কর্মকর্তা তার ফাঁদে পড়েছেন।
একজন শিক্ষা ক্যাডার জানান, ঢাকা মেডিকেল কলেজে মেডিকেল পরীক্ষার সময় সেলিনার সঙ্গে পরিচয় হয় তার। পরে ঘনিষ্ঠতা বাড়ার পর জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন ও ব্ল্যাকমেইলের শিকার হন। অন্য এক কর্মকর্তা জানান, ছবি তুলে প্রতারণা করে তাকে হুমকি দেওয়া হয়েছিল।
লালমনিরহাট জেলা পুলিশ জানায়, কালচারাল অফিসার হাসানুর রশিদের করা অভিযোগ মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। মামলার নথিতে উল্লেখ রয়েছে, সেলিনা বেগম তার স্বামীকে মারধর, হত্যাচেষ্টা ও ব্ল্যাকমেইল করেছেন।
অভিযোগ বিষয়ে জানতে সেলিনা বেগমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে প্রথমে তিনি ফোন রিসিভ করলেও সাংবাদিক পরিচয় শুনে কল কেটে দেন। পরে হোয়াটসঅ্যাপ ও বার্তার মাধ্যমে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও কোনো সাড়া মেলেনি।
এ বিষয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেন, “আমি নতুন ভাইস চ্যান্সেলর হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছি। লিখিত অভিযোগ পাইনি, তবে মৌখিকভাবে কিছু তথ্য পেয়েছি।”
একাধিক বিয়ে, বেপরোয়া আচরণ, সরকারি কর্মকর্তাদের নির্যাতন, মদ্যপান ও ব্ল্যাকমেইলের মতো গুরুতর অভিযোগের ঘটনায় সেলিনা বেগমের বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্ত ও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছেন সচেতন মহল।