বাংলাদেশ

শিক্ষা খাতে অতিরিক্ত ব্যয়: স্কুল ভর্তির নামে অভিভাবকদের ওপর চাপ

উপ-সম্পাদক

উপ-সম্পাদক

মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৪
শিক্ষা খাতে অতিরিক্ত ব্যয়: স্কুল ভর্তির নামে অভিভাবকদের ওপর চাপ
প্রতি বছর রাজধানীর বিভিন্ন স্কুলে ভর্তির সময় অভিভাবকদেরকে নানা খাতে অতিরিক্ত অর্থ প্রদান করতে বাধ্য করা হচ্ছে। এসব খাতের সংখ্যা ৩০ থেকে ৪৫-এর মধ্যে। অভিভাবকদের অভিযোগ, বেশিরভাগ খরচই অপ্রয়োজনীয় এবং অযৌক্তিক। ফলে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য শিক্ষার মৌলিক অধিকার অর্জন কঠিন হয়ে পড়ছে।
ভর্তির সময় অভিভাবকদের কাছ থেকে অভিভাবক কার্ড, ভর্তি ফি, আইডি কার্ড, ম্যাগাজিন, ক্যালেন্ডার, ডায়েরি, এবং গ্রন্থাগার কার্ডের মতো খাতের জন্য অর্থ নেওয়া হয়। কিন্তু এসবের বাইরেও রয়েছে আরও বিস্ময়কর কিছু খাত, যেমন—প্রজেক্টর মেরামত ফি, সৌন্দর্যবর্ধন ফি, ক্লাব ফি, ল্যাব ফি, অনলাইন সুবিধা ফি, সেবামূল্য ও ভ্যাট, এসএমএস চার্জ।
এছাড়া উন্নয়ন চার্জ, ক্রীড়া ফি, আইসিটি ফি, বিজ্ঞান ফি, দরিদ্র তহবিল, পানি ও বিদ্যুৎ ফি, স্কাউট ফি, বিতর্ক ফি, এবং সাংস্কৃতিক ফি-সহ বিভিন্ন খাতে অর্থ দাবি করা হয়। অভিভাবকরা প্রশ্ন তুলছেন, এসব খরচ আসলেই শিক্ষার্থীদের জন্য প্রয়োজনীয় কিনা এবং শিক্ষার্থীরা এসব সেবার সুবিধা পাচ্ছে কিনা।
প্রশ্ন উঠেছে, একজন শিক্ষার্থী একবার ভর্তি হলে কেন তাকে প্রতি বছর নতুন করে ভর্তির জন্য অর্থ দিতে হবে? অভিভাবকদের মতে, শিক্ষার্থীরা যদি একই প্রতিষ্ঠানে পুরো শিক্ষাজীবন কাটায়, তবে নতুন করে ভর্তির প্রয়োজনীয়তা কোথায়? অভিভাবকরা আরও অভিযোগ করেন, অনেক ক্ষেত্রে এসব খরচের প্রকৃত ব্যাখ্যা দেওয়া হয় না।
স্কুল ভর্তির বাড়তি খরচ অভিভাবকদের জন্য ক্রমেই অসহনীয় হয়ে উঠছে। মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবারগুলো আর্থিক চাপের মুখে পড়ছে, যা তাদের সন্তানদের মানসম্মত শিক্ষার পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। শিক্ষা সবার মৌলিক অধিকার হলেও অতিরিক্ত খরচের কারণে তা অনেকের জন্য সীমিত হয়ে পড়ছে।
অপ্রয়োজনীয় খরচের বোঝা কমাতে স্কুল কর্তৃপক্ষের উচিত প্রতিটি খাতের খরচের যৌক্তিক ব্যাখ্যা প্রদান করা। শিক্ষামন্ত্রণালয়ের উচিত এই বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন এবং তা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা। অভিভাবকদের অভিযোগ সমাধানে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা এবং স্কুল কর্তৃপক্ষকে আরও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।