ফাইনালে পেনাল্টি পাওয়ার স্বাদ যেমন ভালো করেই জানেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো, তেমনি ফাইনালে প্রতিপক্ষকে পেনাল্টি উপহার দেওয়ার তিক্ত অভিজ্ঞতা এখন ভালোভাবেই বুঝে গেছেন লিওনেল মেসি। বিশ্বকাপ ফাইনালেও প্রতিপক্ষকে দুই বার পেনাল্টি দিতে হয়েছিল আর্জেন্টাইনদের। আর এবার সেই ইতিহাস যেন আবারও ফিরে এল ক্লাব পর্যায়ে, লিগস কাপের ফাইনালে। এবারও গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে ইন্টার মায়ামিকে দিতে হলো পেনাল্টি, যা বদলে দেয় পুরো ম্যাচের গতিপথ।
লিগস কাপের ফাইনালে মেসির ইন্টার মায়ামি মুখোমুখি হয় সিয়াটল সাউন্ডার্সের। ম্যাচ জুড়েই রেফারির একের পর এক বিতর্কিত সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে মায়ামি শিবির। তবে সবচেয়ে বড় ধাক্কা আসে শেষ দিকে, যখন ইয়ানিক ব্রাইটের ট্যাকলে স্পষ্ট দেখা যায় বল আঘাত করে তার পায়ে, তবুও রেফারি সাউন্ডার্সকে পেনাল্টি দেন। ভিডিও রিপ্লে দেখেও সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হয়নি।
এর আগেই অবশ্য ম্যাচের ২৬ মিনিটে প্রথম গোল খেয়ে বসে মায়ামি। গোল করেন ডি রোসারিও। এরপর মেসি একটি সুযোগ মিস করেন। কিন্তু শেষ দিকে সেই বিতর্কিত পেনাল্টি থেকে গোল হজম করার পর আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি মায়ামি। উল্টো আরও দুটি গোল হজম করে ৩-০ ব্যবধানেই শেষ করতে হয় ফাইনাল।
ম্যাচ শেষে উত্তপ্ত পরিস্থিতি
হার মেনে নিতে পারেনি মায়ামির খেলোয়াড়রা। মাঠে খেলা শেষ হলেও তাদের মানসিক ক্ষোভ মুহূর্তেই রূপ নেয় অদ্ভুত এক ঘটনায়।
পুরো কাণ্ডের শুরু লুইস সুয়ারেজকে কেন্দ্র করে। সাধারণত খেলোয়াড়দের মধ্যে সংঘর্ষ দেখা গেলেও, এবার সুয়ারেজ এগিয়ে যান প্রতিপক্ষের এক বয়স্ক স্টাফ মেম্বারের দিকে এবং তাকে ধাক্কা দিতে শুরু করেন। হঠাৎ এ ঘটনায় হতবাক হয়ে যায় সবাই।
তবে এখানেই থামেনি উত্তেজনা। কিছুক্ষণের মধ্যেই ভিড় জমে যায় সেখানে। স্টাফ, অফিসিয়াল থেকে শুরু করে দুই দলের খেলোয়াড়রাও ঘটনাস্থলে জড়ো হন। এরপর ধাক্কাধাক্কি, ঠেলাঠেলি, গলা টেনে ধরা, জার্সি ধরে টানাটানি—সবকিছুই চলে বেশ কিছুক্ষণ।
এক পর্যায়ে প্রায় দুই দলের অর্ধেক খেলোয়াড়ই জড়িয়ে পড়েন হাতাহাতিতে। তবে লক্ষণীয় বিষয়, এই সময় পুরো ঘটনাপ্রবাহের বাইরে ছিলেন লিওনেল মেসি। আগের মতো এবারও আর্জেন্টাইন তারকাকে দেখা যায়নি কোনো ধরনের বিবাদের ভেতরে।
পরিণতি কী?
৩-০ গোলে ফাইনালে হারের পাশাপাশি ম্যাচ শেষে এমন কাণ্ডে শিরোপার স্বপ্ন ভাঙার সঙ্গে যোগ হলো আরও বিতর্ক। এখন দেখার বিষয়, লিগ কর্তৃপক্ষ সুয়ারেজ ও ইন্টার মায়ামির অন্যান্য খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধে কী ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে।