চলছে সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের বিশ্ব আসর টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। ২০ দলের লড়াই শেষে এখন টিকে আছে মাত্র আটটি দল, যেখানে আছে বাংলাদেশের নাম। গ্রুপ পর্বে বেশ দাপুট দেখিয়ে শেষ আট নিশ্চিত করেছে সাকিব- রিয়াদরা। যেখানে সবচেয়ে বড় ভূমিকা ছিলো বোলারদের। তাদের অসাধারন পার্ফমেন্সের উপর ভিত্তি করেই গ্রুপ পর্বের তিনটি ম্যাচ জিতেছে টিম টাইগার্স।
বিশ্বকাপের আগে নানা কথা ও সমালোচনা হচ্ছিলো টাইগার দলকে নিয়ে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে সিরিজ হারের পর, ভারতের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে অসহায় আত্মসমর্পণ, সব মিলিয়ে বাজে একটা পরিস্থিতি ছিলো টাইগার শিবিরে। কিন্তু মূল মঞ্চে এসে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচ জয় সব কিছু পাল্টে দিয়েছে, সাথে দলের আত্মবিশ্বাসও বাড়িয়েছে অনেকখানি। সেই ধারাবাহিকতায় এখন সুপার এইটে বাংলাদেশ।
আর সেক্ষেত্রে দলের টপ অর্ডার ধারাবাহিক ভাবে ব্যর্থ হলেও, বোলিং ইউনিট ছিলো দুর্দান্ত, সবগুলো ম্যাচে তানজিম সাকিব, তাসকিন আহমদেরা ভালো করেছেন। শুরুর ম্যাচে লঙ্কান ব্যাটারদের কে মাত্র ১২৪ রানে আটকে দিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করে। যেই ম্যাচে রিশাদ, সাকিবরা ছিলেন দু্র্দান্ত। এরপর, প্রোটিয়াদের বিপক্ষেও ধারাবাহিকতা বজায় রাখে পেসাররা। সেই ম্যাচে তানজিম সাকিব একাই ধ্বসে দেন পুরো ব্যাটিং অর্ডার। এরপর নেদারল্যান্ডসের সাথে রিশাদের ভেলকিতে বড় জয় পায় বাংলাদেশ, একই ভাবে নেপালের বিপক্ষেও ছিলেন অনবদ্য। সব মিলিয়ে বলা যায় এখন পর্যন্ত টুর্ণামেন্টে সবচেয়ে সফল বাংলাদেশের বোলাররা।
এদিকে এখন পর্যন্ত টুর্ণামেন্টের সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রাহক তালিকার সেরা পাঁচে আছেন জুনিয়র সাকিব। বল হাতে এই পেসার মাত্র চার ম্যাচে শিকার করেছেন ৯ উইকেট, যেখানে ইকোনোমি রেট পাঁচের কম, সেরা স্পেল ৭ রান খরচায় চার উইকেট শিকার। তাকে ছাড়াও সেরা দশে আছেন মোস্তাফিজুর রহমান। এই বামহাতি বোলার চার ম্যাচে নিয়েছেন সাত উইকেট। তবে, অবিশ্বাস্য ভাবে ওভার প্রতি রান খরচ করেছেন মাত্র ৩.৩৭! একজন পেসারের এমন ইকোনমি রেট বলে দেয় টুর্ণামেন্টে কতটা ভালো সময় কাটিয়েছেন তিনি। তার মতোই চার ম্যাচে সমান উইকেট সংগ্রহ করেছেন লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেনও। তবে, টুর্ণামেন্টে টাইগার বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে তাকে নিয়ে। কেননা, তার বোলিং ভ্যারিয়েশন ও লেগ স্পিন অসাধারণ কার্যকরী হয়ে উঠেছে টুর্ণামেন্টের উইকেট গুলোতে। সাথে ধারাবাহিক ভাবে প্রায় প্রতিটা ম্যাচে অবদান রেখে যাচ্ছেন সমান তালে। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ম্যাচেও রেখেছিলেন বিশেষ ভূমিকা।
টাইগার বোলারদের এমন পার্ফমেন্স ও ধারাবাহিকতা ছাড়িয়ে গিয়েছে অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড এমনকি ভারতের বোলারদেরও। এখন পর্যন্ত কোনো দল তাদের বিপক্ষে ১২৫ এর বেশি রান করতে পারেনি। এমনকি দক্ষিণ আফ্রিকার মতো ব্যাটিং অর্ডার কে রুখে দিয়েছে এর নিচে। তাছাড়া, রান খরচের দিক থেকেও তানজিম সাকিব, মোস্তাফিজরা অন্য সবার থেকে কিপ্টে, ব্যাটারদের কোনো ভাবেই রান করার সুযোগ দিচ্ছে না তারা। তাই বলা যায় টুর্ণামেন্টে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে সফল বোলার বাংলাদেশের।