আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডে বৃষ্টির কারণে ভেস্তে গেলেও দ্বিতীয় ওয়ানডেতে এক রোমাঞ্চিত জয় তুলে নিয়েছে টাইগাররা।
৩২০ রানের দেওয়া টার্গেটে খেলতে নেমে তিন বল হাতে থাকতেই শান্ত, হৃদয় ও মুশফিকের অনবদ্য ব্যাটিং এর উপর ভর করে ৩ উইকেটের জয় ছিনিয়ে নিয়েছে বাংলাদেশ।
তবে এতোকিছুর মাঝে একটা জিনিস মিলাতে পারছেন না কোচ, টিম ম্যানেজম্যান্ট। মুস্তাফিজ অফ ফর্ম থাকায় তাঁর বদলি হিসেবে দুই ম্যাচেই মাঠে নেমেছিলো শরিফুল ইসলাম।
প্রথম ম্যাচে ৫ ওভারে ২১ রান দিয়ে ১ উইকেট নিলেও দ্বিতীয় ওয়ানডে তে ছিলেন বেশ খরুচে। বাংলাদেশের জয়ের দিনে ৯ ওভার বল করে দিয়েছেন সর্বোচ্চ ৮৩ রান!
তাঁর ইকোনোমিটা ছিলো ৯ দশমিক ২২, যা ওয়ানডে ক্রিকেটে বড়ই বেমানান। যদিও শেষ দিকে দুইটি উইকেট নিয়েছিলেন, তবে শরিফুলকে দেখে মনে হচ্ছিলো, তিনি হয়তো ক্যারিয়াররে প্রথম ওয়ানডে খেলছেন।
গতকালের ম্যাচে তাঁর বলে না ছিলো কোনো সুইং, না ছিলো কোনো মুভমেন্ট কিংবা বল প্লেসমেন্ট। ডান হাতি ব্যাটারদের সামনে পেয়েও, কাটার কিংবা স্লোয়ার কোনোটাতেই তিনি সফল ছিলেন না।
ডেথ ওভারে বোলিং করতে এসে, ইয়র্কার করতে বরাবরই ব্যর্থ হয়েছেন। বার বার বল করেছেন স্লটে। এতে রান আটকানোর বদলে, উলটো রান দিয়েছেন দেদারসে। শরিফুল যেভাবে বল করছিলেন, তাতে তাঁর গেম সেন্স নিয়ে একটা প্রশ্ন থেকেই যায়।
এটা আপনাকে মানতেই হবে,বাংলাদেশের পেস ইউনিট এখন বিশ্বসেরা। দলে তাসকিন, হাসান, ইবাদত, মুস্তাফিজের মতো চ্যাম্পিয়ন বোলাররা তো পরীক্ষিতই।
আর শরিফুল তো অনুর্ধ উনিশ বিশ্বকাপে, বোলিং ডিপার্টমেন্টে নেতৃত্ব দেওয়া বোলার।
তবে শরিফুলের বর্তমানে যা পারর্ফম্যান্স, তাতে পরের ম্যাচে একাদশে না দেখলে, অবাক হওয়ার মতো কিছুই হবে না। শরিফুল একাদশের বাইরে চলে গেলে, কপাল খুলতে পারে অভিষেকের অপেক্ষায় থাকা মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরীর।
পরের ম্যাচে যদি টিম ম্যানেজম্যান্ট বাঁ হাতি কম্বিনেশন ধরে রাখতে চায়, তবে শরিফুলকে বসিয়ে, খেলানো হতে পারে মৃত্যুঞ্জয়কে।
সিরিজ জিততে মরিয়া বাংলাদেশের শেষ ওয়ানডেতে একাদশ কেমন হতে পারে, এবার সেটাই দেখে নেওয়া যাক।
ওপেনিং জুটিতে তামিম-লিটনের অবস্থান পাকাপোক্ত হলেও, চলমান সিরিজে ভালো করতে পারছেন না ক্যাপ্টেন তামিম ইকবাল। দুই ম্যাচে আউট হয়েছেন ১৪ ও ৭ রান করে।
অন্যদিকে লিটন দাস প্রথম ম্যাচে শূন্য রানে আউট হলেও, দ্বিতীয় ম্যাচে করেছেন ২১ রান। ওপেনিং জুটিতে এ সিরিজে, এ দুই ওপেনারের অবদান ওয়ানডের জন্য আদর্শ নয়।
কিছুদিন আগে তামিম ইকবাল গনমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, দলে কেউ পারর্ফম না করলে তাঁকে দল থেকে বের হয়ে যেতে হবে, এমনকি তিনি নিজেও যদি ধারাবাহিক না হন, তাকেও দল থেকে বের হয়ে যেতে হবে।
এখন দেখার বিষয়, ওপেনিং এ অধারাবাহিক তামিম, শেষ ম্যাচে ব্যাক আপ ওপেনার, রণি তালুকদারকে নিজের জায়গাটা ছেড়ে দেন কি না।
সেক্ষেত্রে ভাইস ক্যাপ্টেন লিটনকে, সামলাতে হবে গুরু দায়িত্ব। তবে ক্যাপ্টেন কোটায় তামিম খেললেও, টিম ম্যানেজম্যান্ট লিটনের বদলে, রণিকে বাজিয়ে দেখতে চাইলেও, অবাক হওয়ার মতো কিছুই থাকবে না।
ওয়ান ডাউনে শান্ত, চারে সাকিব, পাঁচে হৃদয়, ছয়ে মুশফিকের জায়গা মোটামুটি ফিক্সড।
সাথে গত ম্যাচে মেহেদি মিরাজ খেললেও, তাঁকে দিয়ে ক্যাপ্টেন বোলিং করিয়েছিলেন মাত্র ২ ওভার। তবে ফিনিশিং রোলে শেষ দিকে, মিরাজের উপর ভরসা করতেই পারেন ক্যাপ্টেন, কোচ।
গত ম্যাচে, দলে বাঁ হাতি স্পিনার তাইজুলও ছিলেন বেশ খরুচে। ৭ ওভার বল করে দিয়েছেন, ৫৯ রান।
তাই তাইজুলকে বসিয়ে,অতিরিক্ত এক পেসার খেলানোর সম্ভাবনা বেশি। সেক্ষেত্রে আরও একজন বাঁ হাতি পেসার হিসেবে, একাদশে ঢুকতে পারেন মুস্তাফিজ।
হাসান- ইবাদতের জায়গা দলে নিশ্চিত থাকলেও, শরিফুল যে সেরা একাদশে থাকছেন না, এটা এক প্রকার নিশ্চিত। তাঁর জায়গায় অভিষেক হয়ে যেতে পারে, বাঁ হাতি পেসার মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী।
শেষ ওয়ানডেতে তাঁকে নিয়ে যদি বাজি ধরেই ফেলেন কোচ হাতুরাসিংহে, তবে অভিষেকটা রাঙ্গাতে পারবেন তো মৃত্যুঞ্জয়?