আইপিএল মানেই যেন শেষ বলের নাটকীয়তা। আরও একবার বাঁচা মরার ম্যাচে কলকাতার দর্শকদের আত্না কাঁপিয়ে নাটকীয়ভাবে ম্যাচ জিতলো কলকাতা।
বাঁচা মরার লড়াইয়ে পাঞ্চাবকে ৫ উইকেটে হারিয়ে আরও একবার টিকে রইলো কলকাতা।
জয়ের নায়ক আবারো সেই রিংকু সিং। রাসেলের তিন বলে তিন ছয়ের রোমাঞ্চকর ইনিংসের মাধ্যমে পাঞ্চাবের বিপক্ষে সহজ ম্যাচ কঠিন করে জিতলো কলকাতা। আর এই জয়ের মাধ্যমে এখনো শেষ চারের আশা টিকে রইলো কলকাতার।
প্রথম পর্বের লড়াইয়ে পঞ্জাব কিংসের কাছে হার দিয়ে আইপিএল অভিযান শুরু করেছিল কলকাতা নাইট রাইডার্স। দ্বিতীয় পর্বের ম্যাচ নাইটদের কাছে যেমন ছিল প্রতিশোধের, তেমনই প্লে অফের স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখারও।
প্রতিশোধের ম্যাচে দারুণভাবে জ্বলে উঠল নাইট রাইডার্স। পঞ্জাব কিংসকে ৫ উইকেটে হারিয়ে প্লে অফের স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখল নীতীশ রানার দল। শেষ বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে নাইটকে নাটকীয় জয় এনে দেন আবারো সেই রিংকু সিং।
শেষ ১২ বলে জয়ের জন্য কলকাতার দরকার ছিলো ২৬ রান। ক্রিজে তখনো আন্দ্রে রাসেল ও রিংকু সিং উভয়ই ২০০ প্লাস স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করছিলেন। ১৯ তম ওভারে বোলিং এ আসেন গত আসরের সবচেয়ে দামি খেলোয়াড় স্যাম কারেন। তবে বিধ্বংসী রাসেলের সামনে নিজের নার্ভ ধরে রাখতে পারেন নি তিনি।
পর পর দুইটি স্লট বল করায় দুটো বলকেই স্কয়ারলেগ দিয়ে বাউন্ডারি ছাড়া করেন রাসেল। ওভারের পঞ্চম বলে স্লো বাউন্সার পেয়ে আবারো সেটিকে সীমানা ছাড়া করেন ক্যারিবিয়ান এ তারকা। ওই ওভারে মোট ২০ রান তুলেন রাসেল। রাসেল যেভাবে আগ্রাসী হয়ে উঠেছিলেন মনে হচ্ছিলো স্যাম কারেনের করা ১৯তম ওভারেই ম্যাচটা শেষ হতে চলেছে।! তবে শেষ বলে ডট আসায় সমীকরণটা গিয়ে ঠেকে ৬ বলে ৬ রানে।
শেষ ওভারে ম্যাচ ঝুলে পড়ে কলকাতার দিকে। ৬ বলে ৬ রান তোলার চ্যালেঞ্জটা হয়ে পড়ে সহজ আনুষ্ঠানিকতা। কিন্তু জয়টা এত সহজে আনতে পারে নি কলকাতা। পাঞ্জাবের হয়ে শেষ ওভার করতে আসেন অর্শদীপ সিং। প্রথম ৩ বলে দিয়েছেন ২ রান। চতুর্থ বলে ২ রান নেন রাসেল। জয়ের জন্য শেষ ২ বলে দরকার ছিল ২ রান। পঞ্চম বলে উইকেটকিপারের হাতে বল দিয়ে ১ রান চুরি করতে গিয়ে রানআউট হন রাসেল।
শেষ বলে দরকার ২ রান। স্ট্রাইকে থাকা রিংকু সিংকে কোমর সমান উচ্চতায় ফুল টস মারার খেসারত গুণে বাউন্ডারি হজম করেন অর্শদীপ। শেষ বলে ৫ উইকেটের জয় তুলে নেয় কলকাতা।
আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৭ উইকেটে ১৭৯ রান তুলেছিল পাঞ্জাব। পাঞ্জাবের হয়ে ৪৭ বলে ৫৭ রান করেন অধিনায়ক শিখর ধাওয়ান। শাহরুখ খানের অপরাজিত ৮ বলে ২১ রানে ছোট্ট ক্যামিওর উপর ভর করে কলকাতাকে ১৮০ রানের টার্গেট দেয় কলকাতা।
এই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে কলকাতাকে ভালো শুরু এনে দেন দুই ওপেনার জেসন রয় ও রহমানউল্লাহ গুরবাজ। ৪.৪ ওভারে গুরবাজ আউট হওয়ার আগে ৩৮ রান যোগ হয় ওপেনিং জুটিতে।
তিন নাম্বারে নেমে এক প্রান্ত আগলে রেখে ৩৮ বলে ৫১ রানের ইনিংস খেলেন রানা। তাতে দলও টিকে থাকে লড়াইয়ে। এরপর আন্দ্রে রাসেল ও রিঙ্কু সিং মিলে বাকি কাজটা সারেন।
এ জয়ে ১১ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের পাঁচে উঠে এসেছে কলকাতা। ১১ ম্যাচ খেলে ১০ পয়েন্ট নিয়ে চারে থাকা রাজস্থানের ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলছে শাহরুখ খানের দলটি।
পাঞ্চাবের সামনে সুযোগ ছিলো টেবিলের তিন নম্বরে যাওয়ার। তবে এ হারের পর সমান ম্যাচ খেলে সেই একই পয়েন্ট নিয়ে রান রেটের ব্যবধানে ৭ নম্বরে নেমে গেছে পাঞ্চাব।
এছাড়াও ১ ম্যাচ কম খেলে ১০ পয়েন্ট নিয়ে কলতার পরেই টেবিলের ৬ নম্বরে অবস্থান করছে ভিরাট কোহলির আরসিবি।
শেষের দিকে এসে জমে উঠেছে আইপিএল এর এবারের আসরের লড়াই। শেষ চারে টিকে থাকার লড়াইয়ে এখন বেঙ্গালুরু, কলকাতা, মুম্বাই ও পাঞ্চাবের জন্য প্রতিটি ম্যাচই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যেকোনো একটি ভুল হলেই স্বপ্ন ভঙ্গ হতে পারে এ চার দলের যে কারোই।