নির্বাচন কমিশন (ইসি) থেকে দলীয় নিবন্ধন না পাওয়ায় আমজনতার দলের সদস্য সচিব তারেক রহমান আমরণের অনশনে বসেছেন এবং অনশন দিয়ে মৃত্যুর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। গতকাল তিনি নির্বাচন ভবনের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে অনশনে বসেন—এ খবর মঙ্গলবার ইসি তিনটি নতুন দলের সম্ভাব্য নিবন্ধন ঘোষণায় আরও তীব্র হয়ে ওঠে।
তারেক বলেন, তিনি ইসি কর্তৃপক্ষের কাছে নিবন্ধন না দেওয়ার কারণ জানতে চেয়েও সন্তোষজনক উত্তর পাননি। ব্রিফিং শেষে ইসি সচিব ও অতিরিক্ত সচিবের সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হওয়ার পর তিনি অনশনে বসেন। অনশনে বসে তিনি অভিব্যক্তি করেন, যদি দাবি না মেনে নেওয়া হয় এবং অন্যায় রয়ে যায়, অনশন মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিতে পারে।
তারেক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ক্ষোভ উগড়ে দেন। এক ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, কয়েক লাখ গ্রাহকের অর্থ লুট করে একজন ‘ডেস্টিনি’ নামের ব্যক্তির দল দ্রুত নিবন্ধন পেয়েছে—এটির সঙ্গে তুলনা করে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং অভিযোগ করেন যে ‘রাজনীতি কি শুধু বুর্জোয়াদের জন্য?’ তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তাদের বিরুদ্ধে শাস্তির দাবি জানান এবং ন্যায়বিচার না করলে আমরণ অনশন আরও তীব্র করার হুঁশিয়ার করেন।
ইসি পক্ষের বক্তব্যে সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ মঙ্গলবার জানিয়েছেন, কমিশন প্রাথমিকভাবে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী) এবং বাংলাদেশ আমজনগণ পার্টি-কে নিবন্ধনের জন্য নির্বাচিত করেছে। তবে চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশের আগে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ১২ নভেম্বর পর্যন্ত দাবি-আপত্তি আহ্বান করা হবে; অভিযোগ না থাকলে বা দাবি-আপত্তি নিষ্পত্তির পরই ইসি আনুষ্ঠানিকভাবে গেজেট প্রকাশ করে নিবন্ধন সনদ প্রদান করবে জানিয়েছেন তিনি।
ইসির এই ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই অনশনকারী তারেক ও তার সমর্থকদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়ায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত রূপ নেয়। তারেক অভিযোগ করেছেন, কিছু দলের বিরুদ্ধে ন্যায্যতা অনুপস্থিত থাকার কারণে তারা বছরের পর বছর রাজনীতিতে নিবন্ধন পেতে ব্যর্থ হচ্ছেন।
বর্তমানে ইসির নিকট নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা প্রায় ৫৩টি। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত রয়েছে এবং কয়েকটি দলের যেমন- ফ্রিডম পার্টি, ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন ও পিডিপি নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে। ইসি সিদ্ধান্ত, বিজ্ঞপ্তি ও আবেদন প্রক্রিয়ার পর ভবিষ্যতে চূড়ান্ত নিবন্ধন সনদ দেওয়া হবে—এমনটাই সূত্রের ব্যাখ্যা।