জাতীয়

রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনকে অপসারণে চাপ, সরকারও চাপে

উপ-সম্পাদক

উপ-সম্পাদক

বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২৪
রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনকে অপসারণে চাপ, সরকারও চাপে
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন সংকট সৃষ্টি হয়েছে। তাঁর পদে থাকা না থাকা নিয়ে বিভিন্ন মহলে চলছে তর্ক-বিতর্ক। বঙ্গভবনে তিনি থাকবেন, পদত্যাগ করবেন, নাকি তাঁকে অপসারণ করা হবে—এ বিষয়ে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনো নেয়নি অন্তর্বর্তী সরকার। বিষয়টি আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে, তবে বিএনপি এই মুহূর্তে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের পক্ষে নয়। দলটি মনে করে, রাষ্ট্রপতির পদ শূন্য হলে দেশে সাংবিধানিক ও রাজনৈতিক সংকট তৈরি হতে পারে।

বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে, যেখানে রাষ্ট্রপতির বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম জানিয়েছেন যে, রাষ্ট্রপতির পদ নিয়ে কোনো আইনি বা সাংবিধানিক সংকট নেই, এটি একান্তই রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে। তিনি দেশবাসীকে শান্ত থাকার আহ্বানও জানিয়েছেন।

মঙ্গলবার রাতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে বিক্ষোভ হয়েছে। বঙ্গভবনের সামনেও ইনকিলাব মঞ্চের ব্যানারে গভীর রাতে বিক্ষোভ দেখা গেছে। এদিন দিনের বিভিন্ন সময়ও কিছু আন্দোলনকারী বঙ্গভবনের কাছে অবস্থান নিয়েছিল। এর ফলে সরকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়িয়েছে, যেখানে সেনাবাহিনী, বিজিবি, র‍্যাব এবং পুলিশের অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হয়।

এদিকে, বিএনপির শীর্ষ নেতারা গতকাল প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেছেন এবং তাঁরা তাদের অবস্থান জানিয়েছেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বৈঠক শেষে জানান, তাঁরা চান না রাষ্ট্রপতিকে ঘিরে দেশে কোনো সাংবিধানিক সংকট তৈরি হোক। দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বর্তমান রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ করা উচিত নয়, কারণ এটি সাংবিধানিক এবং রাষ্ট্রীয় স্থিতিশীলতায় সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভের প্রসঙ্গে বলেন, সরকারের অবস্থান ইতিমধ্যেই পরিষ্কার করা হয়েছে এবং বিক্ষোভকারীদের বঙ্গভবনের পাশ থেকে সরে যেতে বলা হয়েছে। সরকারের অবস্থান স্পষ্ট নয় বলে মন্তব্য করলেও বিষয়টি নিয়ে তারা এখনও আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।

অন্যদিকে বন ও পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের বিষয়ে বিভিন্ন মহল থেকে দাবির কথা উঠছে, তবে এ নিয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়নি। সরকার এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সময় নিচ্ছে এবং বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে আলোচনাও চলছে। এমন পরিস্থিতিতে সরকার রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা, নিরাপত্তা এবং শৃঙ্খলাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন উপদেষ্টারা।

বর্তমান সংকটময় পরিস্থিতিতে জনগণ ও রাজনৈতিক দলগুলোর প্রত্যাশা নির্ভর করছে অন্তর্বর্তী সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর, যা দেশকে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে নিয়ে যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।