লাইফস্টাইল

কতোটা বিলাসবহুল জীবন ছিলো রানী ২য় এলিজাবেথের

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

শুক্রবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২
কতোটা বিলাসবহুল জীবন ছিলো রানী ২য় এলিজাবেথের

দীর্ঘ সত্তর বছর ধরে ক্ষমতায় ছিলেন ব্রিটেনের রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ। আভিজাত্যের পাশাপাশি তার জীবন যাপন পদ্ধতি ও ছিলো অত্যন্ত বিলাসবহুল।

বাড়ি গাড়ি থেকে শুরু করে কোটি কোটি ডলারের মুকুট মাথায় নিয়ে রূপকথার রাণীদের মতোই জীবন যাপন করেছেন দ্বিতীয় এলিজাবেথ।  

তিনি বসবাস করতেন বিশ্বের সবচেয়ে বিলাসবহুল রাজপ্রাসাদে। তার ভ্রমনের জন্য ছিলো প্রাইভেট ট্রেন থেকে শুরু করে জাহাজ এবং রাজকীয় বিমান বহর। 

এছাড়া তার পছন্দমতো খাবার তৈরি করে দিতো প্রশিক্ষিত রাজকীয় বাবুর্চি।  

রাণী এলিজাবেথের জীবন এতটাই বিলাসবহুল ছিলো যে পায়ে ফোসকা পড়তে পারে ভেবে পরীক্ষা করা ছাড়া কখনো নতুন জুতা পরতেন না তিনি। 

বরং যেকোন জুতা রানীকে দেয়ার আগে পরীক্ষা করে দেখা হতো একজন কর্মচারীর মাধ্যমে। তারপর জুতাটি আরামদায়ক হলে তবেই রানী ব্যবহার করতেন সেটি।   

শুধু জুতার পিছনেই প্রতিবছর অনেক টাকা খরচ হতো তার। দীর্ঘ সত্তর বছরের জীবনে প্রায় প্রতিদিন বিকালে বাগানে ঘুরতে যাওয়ার অভ্যাস ছিলো রানীর। এ সময় প্রতিদিন একটি করে নতুন জুতা পরতে দেয়া হতো তাকে। 

সদ্য প্রয়াত ব্রিটেনের রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথের প্রধান বাসভবন ছিলো যুক্তরাজ্যের বাকিংহাম প্যালেস। পুরো বিশ্বের অন্যতম দামি এবং বিলাসবহুল রাজপ্রাসাদ এটি। 

প্যালেসের মধ্যে সর্ব মোট রুম সংখ্যা ৭৭৫ টি। এর মাঝে ৫২ টি বেডরুম রাজপরিবারের সদস্যদের জন্য সংরক্ষিত। 

এছাড়া প্রাসাদের ভেতর রয়েছে ‘বাকিংহাম প্যালেস গার্ডেন’ যা লন্ডন শহরের সবচেয়ে বড় ব্যক্তিগত বাগান।

এই বাগানের মধ্যে খুব সুন্দর একটি লেক রয়েছে, যেটি ছিলো রানী এলিজাবেথের খুব পছন্দের। বিভিন্ন সময়ে অতিথিদের নিয়ে তিনি রাজকীয় পার্টি আয়োজন করতেন সেখানে।

বাকিংহাম প্যালেস ছাড়াও রাণীর ছুটি কাটানোর জন্য বরাদ্দ ছিলো বেশ কয়েকটি রাজপ্রাসাদ। এরমাঝে  উইন্ডসর ক্যাসল প্রাসাদটি ছিলো তার সবচেয়ে প্রিয়।

প্রায় চার লাখ চুরাশি হাজার বর্গ মিটার জায়গা নিয়ে গড়ে উঠা রাজপ্রাসাদে  রয়েছে সর্বমোট এক হাজার কক্ষ। 

এটির অভ্যন্তর সাজানো অত্যন্ত বিলাসবহুল ভাবে। বিভিন্ন কক্ষের দেয়ালে শোভা পেয়েছে ইতিহাসের বিখ্যাত  শিল্পীদের আঁকা দুর্লভ চিত্রকর্ম। 

বছরের বিভিন্ন সময় এখানে এসে অবস্থান করতেন ব্রিটেনের রানী।  বিশেষ করে ইস্টার উদযাপন করার জন্য উইন্ডসর ক্যাসল ছিলো রানীর সবচেয়ে পছন্দের জায়গা। 

এসব প্রাসাদে বেড়াতে যাওয়ার জন্য ছিলো অত্যন্ত বিলাসবহুল ব্যবস্থা। দেশের মধ্যে স্বল্প দূরত্বে ভ্রমনের জন্য রানীর ছিলো রাজকীয় হেলিকপটার বহর।। 

এছাড়া দেশের বাইরে যাওয়ার জন্য তিনি ব্যবহার করতেন ' রয়েল এয়ার ফোর্সের' চার্টার্ড বিমান। অপরদিকে স্থল ভাগে ভ্রমনের জন্য রাজকীয় একটি ট্রেন নিয়োজিত ছিলো রানীর জন্য। 

দীর্ঘ সত্তর বছরের রাজকীয় জীবনে পৃথিবীর অন্যতম ধনী শাসক ছিলেন  দ্বিতীয় এলিজাবেথ। বর্তমানে ব্রিটিশ রাজপরিবারের সম্পত্তির মূল্য প্রায় ৮৮ বিলিয়ন ডলারের বেশি। 

রাজপরিবারের অভিভাবক হিসাবে বিশাল এই সম্পত্তি ছিলো রানীর অধিনে। এসব ছাড়াও তার একান্ত  ব্যক্তিগত সম্পদের মূল্য ছিলো প্রায় ৪৭০ মিলিয়ন ডলারের বেশি।  

অপরদিকে ব্রিটেনের বেশ কিছু অদ্ভুত জিনিসও ছিলো রানীর সম্পত্তির তালিকায়। জীবিত  অবস্থায় টেমস নদীতে থাকা সকল রাজহাঁসের মালিক ছিলেন তিনি। 

এছাড়া ব্রিটেনের সমুদ্র সীমায় থাকা সকল  তিমি এবং ডলফিনের একমাত্র মালিক ছিলেন দ্বিতীয় এলিজাবেথ। 

বিশ্বের অন্যতম পরাক্রমশালী সম্রাজ্যের উত্তরাধিকারী হিসাবে বেশ কিছু সুবিধা পেতেন তিনি। 

পৃথিবীর একমাত্র ব্যক্তি হিসাবে কোন পাসপোর্ট প্রয়োজন হতো না তার। পাসপোর্ট ছাড়াই  যেকোন দেশে যখন ইচ্ছা ভ্রমন করতে পারতেন রানী এলিজাবেথ।