ধনী ও বিত্তবানদের কাছে, দুবাই এক স্বপ্নের শহর। একটু টাকা হলেই অনেকেই দুবাই শহরে ঘুরতে যান। শপিং করেন। অনেকের কাছে শহরটি এতো ভালো লাগে যে থেকেই যেতে চান।
চাকরি কিংবা ব্যবসা, যে কারণেই হোক, অনেক বাংলাদেশীই আরব আমিরাতে থিতু হন ক্যারিয়ার গড়তে ও একটু উন্নত জীবন যাপন করতে। সে দেশের জীবন ব্যবস্থা বাংলাদেশের চেয়ে কয়েকগুণ উন্নত হওয়ায় নিজে থাকার পাশাপাশি পরিবার নিয়েও থাকেন অনেকে। এক্ষেত্রে বাসা কিংবা ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকেন সামর্থবানরা। যারা একটু কম বেতনের চাকরি করেন, তাঁরা শেয়ারড ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকেন একটু কম খরচের আশায়।
মধ্যপ্রাচ্যের শহর দুবাইয়ে থাকতে গেলে কেমন খরচ পড়ে জানা আছে আপনার? আজ জানাবো দুবাইয়ের জীবনযাপনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য।
দুবাই কিংবা শারজাহ, আরব আমিরাতের এ শহর দুটিতে বাংলাদেশ থেকে অনেকেই ফ্ল্যাট কিংবা বাসা নিয়ে ভাড়া থাকেন। দুবাইয়ের তুলনায় শারজাহ শহরে থাকার খরচ কম হওয়ায় বাংলাদেশী বেশিরভাগই শারজায় থাকেন।
বাংলাদেশের মতোই দুবাইয়ে ফ্ল্যাট ভাড়া দিয়ে থাকেন বিল্ডিং মালিকেরা। তবে আমাদের দেশে মাসিক ভাড়ার ব্যাবস্থা থাকলেও দুবাইয়ে বাসা ভাড়া নির্ধারণ হয় বাৎসরিক ভিত্তিতে। দেশটির বিভিন্ন শহরে থাকার মতো পরিবারের সাইজ ভেদে ফ্ল্যাট পাওয়া যায়।
ফ্ল্যাট যত ছোট হয়, ভাড়া তত কম হয়, আর বড় ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকে বেশি। যারা ফ্যামিলি সহ শহরটিতে বসবাস করেন, তাঁদের বেশিরভাগই বড় ফ্ল্যাট নিয়ে ভাড়া থাকেন। আর যারা সিঙ্গেল পারসন হিসেবে থাকেন, অথবা শুধু স্বামী-স্ত্রী হিসেবে থাকেন তাঁরা চেষ্টা করেন কোনো ফ্ল্যাটের শেয়ারড করে থাকতে। ঠিক যেমনটা হয় আমাদের দেশে সাবলেটের ক্ষেত্রে।
দুবাইয়ে দুই বেডরুম, একটি ডাইনিং, দুইটি বাথরুম ও কিচেন সহ একটি ফ্ল্যাটে থাকতে গেলে বছরে ভাড়া পরে প্রায় ৩৮ হাজার দিরহাম থেকে ৪০ হাজার দিরহাম পর্যন্ত যা বাংলাদেশী টাকায় ১১ লক্ষ ১৫ হাজার থেকে ১১ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। মাসের হিসেব করতে গেলে প্রতি মাসেই ফ্ল্যাটটির ভাড়া বাবদ গুনতে হয় প্রায় এক লক্ষ টাকা।
আর এক বেডরুম, ডাইনিং, বাথরুম ও কিচেন সহ ফ্ল্যাটের ভাড়া পড়ে বছরে ২৭ হাজার দিরহাম থেকে ৩০ হাজার দিরহাম।
আর ফ্ল্যাটে রুম শেয়ার করে থাকতে গেলে প্রতি রুম বাবদ খরচ পড়ে মাসে ১৮০০ থেকে ২৫০০ দিরহাম। এছাড়াও আনুষাঙ্গিক খাতে প্রতি মাসে দুইজনের একটি পরিবারে অন্তত ১ হাজার থেকে ১২০০ দিরহাম খরচ পড়ে।
আর যারা শ্রমিক কিংবা লেবার ভিসায় আরব আমিরাতে যান, তাঁদের বেশিরভাগই রুম শেয়ার করে বসবাস করেন। আমাদের দেশের মেস সিস্টেমের মতোই সেখানেও ভাড়ায় সিট পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে এলাকা ভেদে সিট প্রতি মাসিক ভাড়া পড়ে ১০০০ থেকে ১২০০ দিরহাম যা বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ২৯ থেকে ৩৩ হাজার টাকা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দুবাইয়ে থাকার খরচ বেশি হওয়ায় বাংলাদেশের কিছু তরুণ দুবাই গিয়ে ফ্ল্যাট ব্যবসা শুরু করেছে এবং লাভবান হচ্ছে। তাঁরা নির্দিষ্ট টাকা দিয়ে এক বছরের জন্য ফ্ল্যাট মালিকদের কাছ থেকে ফ্ল্যাট ভাড়া নিচ্ছেন, তারপর সেই ফ্ল্যাটকে মেস সিস্টেমের মতো বানিয়ে সিট ভাড়া দিচ্ছেন। এমন লাভজনক ব্যাবসায় বাংলাদেশী তরুণেরা মাসে অন্তত আয় করছেন লক্ষাধিক দিরহাম।