বিনোদন

কেন আর বিয়ের ইচ্ছা নেই, জানালেন শাবনূর

উপ-সম্পাদক

উপ-সম্পাদক

মঙ্গলবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৪
কেন আর বিয়ের ইচ্ছা নেই, জানালেন শাবনূর
ঢাকাই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেত্রী শাবনূর আজ (১৭ ডিসেম্বর) ৪৬ বছরে পা দিলেন। জীবনের এই বিশেষ দিনে তিনি নিজের জীবনের তিক্ত অভিজ্ঞতা নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন। সংসার ভাঙা, ব্যক্তিগত জীবন এবং তার একমাত্র সন্তান আইজান নিহানকে ঘিরে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন তিনি।
শাবনূরের দীর্ঘ ক্যারিয়ার এবং ব্যক্তিগত জীবন নানা চড়াই-উতরাইয়ের মধ্য দিয়ে গেছে। প্রথম সিনেমা চাঁদনী রাতে দিয়ে চলচ্চিত্রে পা রাখার পর তিনি হয়ে ওঠেন ঢালিউডের ‘স্বপ্নের নায়িকা’। কিন্তু এই সফলতার সঙ্গে এসেছে নানা বিতর্ক, সমালোচনা এবং ব্যক্তিগত ঝড়। জন্মদিন উপলক্ষে এক সাক্ষাৎকারে শাবনূর বলেন, “জীবনে যত ঝড়-ঝাপটা আমাকে সামলাতে হয়েছে, পৃথিবীর অন্য কোনো শিল্পীকে এতটা সহ্য করতে হয়নি। সালমান শাহের মৃত্যু নিয়ে আমার ওপর অপবাদ দেওয়া থেকে শুরু করে সম্পর্কের গুঞ্জন, এফডিসির বিভিন্ন সমিতি কর্তৃক একাধিকবার নিষিদ্ধ হওয়া—সবই মোকাবিলা করেছি।”
শাবনূর তার দাম্পত্য জীবনের ব্যর্থতাকেই সবচেয়ে তিক্ত অভিজ্ঞতা হিসেবে তুলে ধরেন। তিনি জানান, স্বামী অনিক মাহমুদের সঙ্গে সংসার জীবন সুখকর ছিল না। ২০১২ সালে বিয়ে করলেও ২০২০ সালের ২৬ জানুয়ারি তাদের বিচ্ছেদ ঘটে। শাবনূরের অভিযোগ ছিল, অনিক মাদকাসক্ত ছিলেন এবং তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতেন। সন্তান আইজান নিহানের জন্মের পরেও অনিক তাকে অবহেলা করতেন এবং অন্য এক নারীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন। এসব কারণেই তিনি তালাকের সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হন।
শাবনূর বলেন, “বিয়ের পর স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়া যে কোনো নারীর জন্যই ভয়ংকর অভিজ্ঞতা। অনেকেই এ ধরনের পরিস্থিতিতে ভেঙে পড়ে মাদকাসক্ত হয়ে যান কিংবা আত্মহত্যার মতো পথ বেছে নেন। কিন্তু আমি শক্ত মনোবল নিয়ে এগিয়ে গেছি। সব নেতিবাচক অভিজ্ঞতাকে পাশ কাটিয়ে জীবনটাকে নতুন করে গড়ে তুলেছি।”
বিয়ে এবং সংসার জীবনে এতো ঝড় সামলানোর পর শাবনূরের আর বিয়ে করার ইচ্ছে নেই। তিনি বলেন, “আমার একমাত্র সন্তান আইজান নিহান আমার জীবনের সবচেয়ে বড় সম্পদ। তাকে প্রতিষ্ঠিত মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার জন্যই এখন আমি বেঁচে আছি। সংসারী হওয়ার আর কোনো ইচ্ছে আমার নেই।”
কাজে ফেরার প্রসঙ্গে শাবনূর জানান, তিনি আবারও চলচ্চিত্রে ফিরতে চান। গত বছর রঙ্গনা নামে একটি ছবির কাজ শুরু করেছিলেন, তবে তা এখনো শেষ হয়নি। শিগগিরই তিনি নতুন উদ্যমে কাজে ফিরবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
শাবনূর এবং অনিক মাহমুদের সংসার জীবনের ইতি ঘটে ২০২০ সালে, কিন্তু তার পূর্বেই তাদের দাম্পত্য কলহ চরমে পৌঁছায়। তালাক নোটিশে শাবনূর স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছিলেন, “অনিক সন্তান এবং আমার যথাযথ যত্ন নেননি। তিনি মধ্যরাতে মদ্যপ অবস্থায় বাসায় ফিরে আমাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতেন। এসব পরিস্থিতি সহ্য করা সম্ভব ছিল না, তাই তালাকের সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছি।”
২০১৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর শাবনূর-অনিক দম্পতির কোলজুড়ে আসে পুত্রসন্তান আইজান নিহান। ছেলেকে ঘিরেই এখন তার সমস্ত স্বপ্ন এবং পরিকল্পনা। শাবনূর বলেন, “একজন ভালো মানুষ হিসেবে আইজানকে গড়ে তোলাই আমার জীবনের প্রধান লক্ষ্য।”
অভিনয়ের পাশাপাশি ব্যক্তিগত জীবনেও ভক্তদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু ছিলেন শাবনূর। বিচ্ছেদ এবং পারিবারিক অশান্তির মধ্যেও তিনি নিজের ক্যারিয়ার এবং সন্তানকে ঘিরে নতুনভাবে জীবনকে সাজিয়েছেন। ভবিষ্যতে চলচ্চিত্রে তার প্রত্যাবর্তন ভক্তদের জন্য আশার আলো হয়ে আছে।