মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর নির্মিত নতুন চলচ্চিত্র ‘৮৪০’, যা আন্তর্জাতিক শিরোনামে ‘ডেমোক্রেসি প্রাইভেট লিমিটেড’, সারা দেশে মুক্তি পেতে যাচ্ছে। ঢাকাসহ দেশব্যাপী মুক্তির আগে বুধবার (১১ ডিসেম্বর) রাজধানীর মহাখালিতে অবস্থিত স্টার সিনেপ্লেক্সে ছবিটির একটি বিশেষ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এবং রাজনৈতিক নেত্রী শামা ওবায়েদ।
সিনেমাটি দেখে শামা ওবায়েদ পরিচালক ফারুকীর কাজের প্রশংসা করে বলেন, “মোস্তফা সরয়ার ফারুকী একজন গুণী নির্মাতা। তিনি ‘৮৪০’ সিনেমায় স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার ১৭ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসন তুলে ধরেছেন। তার সাহসী প্রয়াসের জন্য তাকে সাধুবাদ জানাই। এই সিনেমাটি সবার দেখা উচিত।”
শামা ওবায়েদ সিনেমাটির বিষয়বস্তুকে বর্তমান সময়ের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের সঙ্গে সম্পর্কিত বলে মনে করেন। তিনি উল্লেখ করেন যে, গত ১৭ বছরে বিএনপির বহু নেতাকর্মী অন্যায়ভাবে নির্যাতিত ও নিপীড়িত হয়েছেন। আন্দোলন-সংগ্রামের পথ ধরেই অনেকের জীবন হারানোর ঘটনা স্মরণ করে তিনি বলেন, “আমাদের ছাত্র-ছাত্রী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষও এ স্বৈরাচারী শাসনের শিকার হয়েছে। সিনেমাটি দেখতে গিয়ে তাদের কথাই বারবার মনে পড়ছিল।”
সিনেমা প্রসঙ্গে শামা ওবায়েদ আরো বলেন যে, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় সাংস্কৃতিক অঙ্গনের মানুষেরা পৃথিবীর কাছে বাংলাদেশের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরেছিলেন। তেমনই আজকের প্রেক্ষাপটে একটি নতুন সাংস্কৃতিক বিপ্লব প্রয়োজন। তিনি বলেন, “সাংস্কৃতিক বিপ্লব ছাড়া ভবিষ্যতে স্বৈরাচারী শাসনের পুনরাবৃত্তি ঠেকানো সম্ভব নয়। সংস্কৃতির মাধ্যমেই সমাজ ও রাজনীতির চিত্রকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে, যেন তারা দুর্নীতি থেকে দূরে থেকে নতুন বাংলাদেশ গড়তে পারে।”
‘৮৪০’ সিনেমাটি রাজনৈতিক শাসনের চিত্র ও এর সঙ্গে জড়িত অন্যায়ের কাহিনি তুলে ধরে। এটি কেবল বিনোদনের জন্য নির্মিত হয়নি; বরং এর মাধ্যমে সমাজের গভীর সমস্যাগুলোকে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। শামা ওবায়েদ মনে করেন, এ ধরনের সিনেমা সমাজ ও রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।
শামা ওবায়েদ বিএনপির দীর্ঘ রাজনৈতিক আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “আমাদের দল ১৭ বছর ধরে সংগ্রাম করেছে। বহু নেতাকর্মী নিখোঁজ হয়েছেন, কারাগারে গেছেন, আহত হয়েছেন। এ সিনেমাটি আমাদের সেই সংগ্রামের কথা মনে করিয়ে দেয়।” তিনি বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, “সাংস্কৃতিক অঙ্গনের শক্তি ব্যবহার করে সঠিক বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া এখন সময়ের দাবি।”