বছর শেষে ঢালিউড সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি মানহীন সিনেমার চাপে ধুঁকছে। দর্শকদের আকর্ষণ করতে ব্যর্থ এই সিনেমাগুলো প্রেক্ষাগৃহগুলোকে প্রায় দর্শকশূন্য করে তুলেছে। যদিও কিছু নির্মাতা ঢালিউডের পুনরুত্থানের কথা বলছেন, বাস্তবতা তার বিপরীত। সাম্প্রতিক মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমাগুলোর মানহীনতা ইন্ডাস্ট্রির ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা বাড়িয়েছে।
গত আগস্ট থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ঢালিউডে ১৩টি সিনেমা মুক্তি পায়, যার বেশিরভাগই দর্শকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারেনি। পট পরিবর্তনের পর অভিনেতা ও প্রযোজক মনোয়ার হোসেন ডিপজল ‘অমানুষ হলো মানুষ’ ও ‘জিম্মি’ নামে দুটি সিনেমা মুক্তি দেন। এগুলো দর্শকদের বিন্দুমাত্র আগ্রহ অর্জনে ব্যর্থ হয়।
১১ অক্টোবর কুসুম সিকদার পরিচালিত ও অভিনীত ‘শরতের জবা’ মুক্তি পায়, যা বক্স অফিসে দর্শকশূন্যতার উদাহরণ তৈরি করে। ১৮ অক্টোবর মুক্তি পায় ‘চরিত্র’ ও ‘হৈমন্তির ইতিকথা’, দুটি সিনেমাই বাণিজ্যিকভাবে বিপর্যস্ত হয়।
এরপর ৮ নভেম্বর মুক্তি পায় আহসান সারোয়ার পরিচালিত ‘রং ঢং’ এবং একই দিনে প্রার্থনা ফারদিন দীঘি অভিনীত ‘৩৬-২৪-৩৬’। যদিও ‘৩৬-২৪-৩৬’ মূলত ওটিটি প্ল্যাটফর্মের জন্য নির্মিত, প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেলেও সেটি দর্শকদের আকর্ষণ করতে ব্যর্থ হয়।
শাকিব খানের ‘দরদ’, অনন্য মামুন পরিচালিত এ সিনেমাটি ১৫ নভেম্বর মুক্তি পায়। শাকিব খানের তারকা শক্তি থাকা সত্ত্বেও সিনেমাটি প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়। ২৯ নভেম্বর মুক্তি পাওয়া ‘ভয়াল’ সিনেমাটিও প্রেক্ষাগৃহে ভালো ব্যবসা করতে পারেনি।
ডিসেম্বরের শুরুতে মুক্তি পাওয়া ‘নয়া মানুষ’ ও ‘দুনিয়া’ দর্শকদের হলে টানতে ব্যর্থ। এছাড়া ১২ ডিসেম্বর মুক্তি পাওয়া ‘হুরমতি’ ও ‘ডেঞ্জার জোন’ সিনেমা দুটিও দর্শকশূন্য প্রেক্ষাগৃহের কাতারে যোগ হবে বলে আশঙ্কা করছেন প্রেক্ষাগৃহ মালিকরা।
প্রায় প্রতিটি সিনেমার মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অদক্ষ শিল্পী ও নির্মাতাদের নিয়ে নির্মিত এই সিনেমাগুলো প্রেক্ষাগৃহে দর্শক আকর্ষণ করতে ব্যর্থ হচ্ছে। অল্প বাজেট এবং দুর্বল গল্পের কারণে সিনেমাগুলোর মান প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।
কিছু সিনেমায় একসময়ের জনপ্রিয় শিল্পীরা কাজ করলেও নির্মাণ দক্ষতার অভাবে সেগুলো দর্শকপ্রিয়তা অর্জনে ব্যর্থ। উদাহরণস্বরূপ, ‘দরদ’ সিনেমাটি শাকিব খান অভিনীত হলেও বাজে চিত্রনাট্য ও দুর্বল পরিচালনার কারণে দর্শকপ্রিয়তা পায়নি।
১৩ ডিসেম্বর মুক্তি পেতে যাওয়া মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ‘৮৪০’ নিয়ে কিছুটা আশাবাদ রয়েছে। তবে বর্তমান বাস্তবতায়, মানহীন সিনেমার আধিক্য ঢালিউডকে রসাতলে নিয়ে যাচ্ছে। প্রযোজক, পরিচালক এবং শিল্পীদের এ সংকট থেকে উত্তরণে নতুন ভাবনা এবং উন্নতমানের কাজ প্রয়োজন।