হুমায়ুন কবির মাসুদ:
প্রজাপতি প্রজাপতি
কোথায় পেলে ভাই এমন রঙ্গীন পাখা
টুকটুকে লাল নীল ঝিলিমিলি আঁকাবাঁকা
‘প্রজাপতি’ শব্দটা শুনলেই প্রথমেই আমাদের মাথায় রঙ বেরঙের পাখাওয়ালা পতঙ্গের ছবি ভেসে ওঠে যারা কিনা মধু আহরণ করতে ক্ষণিকের জন্য কোন ফুলের ওপরে বসে পরক্ষণেই উড়ে যায় এবং ফুলে ফুলে উড়েই এদের সময় কেটে যায়। কিন্তু প্রজাপতির গড় আয়ু ২ সপ্তাহ। তবে কিছু কিছু প্রজাতি কমপক্ষে ১১ মাস পর্যন্ত বেঁচে থাকে। পৃথিবীর সবচাইতে বড় প্রজাপতি হলো এলেক্সজান্ড্রা বার্ডওয়িং নামের একটি প্রজাতির নারী প্রজাপতি।
মাত্র অল্প কিছুদিনের জীবন চক্রের প্রজাপতি সম্বন্ধে মজার ও আকর্ষণীয় অনেক তথ্য রয়েছে। পা দিয়ে স্বাদ গ্রহণ, কাঁদা থেকে পানি পান কিংবা আত্মরক্ষার জন্য ছদ্মবেশের কৌশল ইত্যাদি, সবমিলিয়ে সৌন্দর্যের বাইরেও পতঙ্গটির জীবন দারুণ মনোমুগ্ধকর।
প্রজাপতির মাথায় প্রায় গোলাকার পুঞ্জাক্ষী বা চোখ রয়েছে। অনিন্দ্যসুন্দর এই পতঙ্গগুলো খাদ্যের স্বাদ নেয় পায়ের মাধ্যমে। এদের জন্ম ডিম থেকে হয়। নারী প্রজাপতিরা সুবিধাজনক গাছের পাতায় ডিম পাড়ে। আর সেই ডিমগুলো এক ধরনের আঠালো পদার্থ দিয়ে পাতার সঙ্গে আটকে থাকে। তবে ডিম ফুটে সরাসরি প্রজাপতির জন্ম হয় না। নির্দিষ্ট সময় পর ডিম ফুটে এরা প্রথমে জন্ম নেয় শুঁয়াপোকা হিসেবে। শুঁয়াপোকারা মূলত খায় গাছের পাতা। গাছের পাতায় পাতায় ঘুরে বেড়ায়। আর প্রজাপতির জীবনের বেশির ভাগ সময় কেটে যায় খাবারের খোঁজেই।
গবেষকদের তথ্যমতে, সাধারণত ২-৪ সপ্তাহ বাঁচে প্রজাপতি। আর সবচেয়ে ছোট নীল প্রজাপতিদের আয়ু মাত্র কয়েকদিন।
খাদ্য শৃঙ্খলার নিচের দিকের প্রাণী হওয়ায়, পাখি, মাকড়শা, টিকটিকি ও অন্যান্য আরও অনেক প্রাণীর খাদ্য তালিকাতেই প্রজাপতি রয়েছে। আত্মরক্ষার অন্য তেমন কোনো শক্তিশালী উপায় না থাকায় ক্ষুধার্ত শিকারির হাত থেকে বাঁচতে ছদ্মবেশ গ্রহণ করে প্রজাপতিরা। ডানার রঙ ও নকশার সাথে মিলিয়ে আশ্রয়স্থল নির্ণয় করতে পারলে সহজেই শিকারের নজর এড়িয়ে যেতে পারে প্রজাপতিরা।