রাজনীতি

নির্বাচনমুখী কর্মসূচির পথে বিএনপি

Staff Correspondent

Staff Correspondent

বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
নির্বাচনমুখী কর্মসূচির পথে বিএনপি
সংস্কার প্রশ্নে বাড়াবাড়ি না করে দ্রুত নির্বাচনমুখী কর্মসূচির দিকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। একই সঙ্গে দলটি শিগগিরই নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়ন এবং প্রার্থী বাছাইয়ের দিকেও মনোযোগ দেবে।
গত সোমবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায় চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে দীর্ঘ আলোচনার পর এ বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যরা এতে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত ছিলেন।
স্থায়ী কমিটির একাধিক সদস্যের মতে, জুলাই জাতীয় সনদ বা সাংবিধানিক সংস্কার নিয়ে বিএনপির অবস্থান আগেই স্পষ্ট করা হয়েছে। এখন এ নিয়ে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি না করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ও সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষা করাই যথাযথ হবে। বিএনপি মনে করে, দ্রুত নির্বাচনমুখী কর্মসূচি শুরু করলে অন্য কোনো পক্ষ ভোটমুখী পরিবেশে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে পারবে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, “আমরা নির্বাচন নিয়েই ব্যস্ত থাকব। সংস্কার নিয়ে সরকার যা খুশি করুক। ভবিষ্যতে যাতে আইনি চ্যালেঞ্জ না হয়, সেটাই আমাদের চাওয়া।”

আগে একটি সভায় সারা দেশে নির্বাচনের ঢেউ তুলতে মাঠের কর্মসূচি শুরুর নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও, ঐকমত্য কমিশনের আলোচনার কারণে বিএনপি তা স্থগিত রেখেছিল। তবে জামায়াতসহ কয়েকটি দল জুলাই সনদের ভিত্তিতে কর্মসূচি ঘোষণা করায় বিএনপিও এখন কর্মসূচি শুরু করার পক্ষে।
স্থায়ী কমিটির সদস্যরা মনে করছেন, মাঠপর্যায়ে নির্বাচনী হাওয়া তুলতে পারলে বিরোধীদের রাজনৈতিক কৌশল ও অযৌক্তিক দাবি গুরুত্ব হারাবে।
দলীয় সূত্র জানায়, এবারের নির্বাচনী ইশতেহার হবে সংস্কার বাস্তবায়নমুখী এবং জনগণের প্রত্যাশা পূরণকেন্দ্রিক। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অর্থনীতি, পররাষ্ট্রনীতি, কর্মসংস্থানসহ বিভিন্ন খাতভিত্তিক বিশেষজ্ঞদের ইশতেহার প্রণয়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সম্ভাব্য প্রার্থী বাছাইয়ের কাজও শিগগিরই শুরু হবে।
স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “জনপ্রত্যাশা পূরণের অঙ্গীকারের পাশাপাশি এবারের ইশতেহারে বাস্তবায়নযোগ্য সংস্কার পরিকল্পনা থাকবে।”

সভায় জাতীয় পার্টিকে (জাপা) নিয়ে সৃষ্ট পরিস্থিতিও আলোচনা হয়েছে। বিএনপি নীতিগতভাবে কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের বিপক্ষে। প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গেও এ বিষয়ে তাদের অবস্থান পরিষ্কার করেছে দলটি।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। তিনি একাধিকবার রাজনৈতিক দলগুলোকে আশ্বস্ত করেছেন। এ প্রেক্ষাপটে বিএনপি এখন মাঠপর্যায়ে ভোটমুখী পরিবেশ সৃষ্টির প্রস্তুতিই জোরদার করছে।