জাতীয়

ট্রাম্প জয়ী হওয়ায় বাংলাদেশ-মার্কিন সম্পর্কে কোনো পরিবর্তন আসবে?

উপ-সম্পাদক

উপ-সম্পাদক

শুক্রবার, ৮ নভেম্বর, ২০২৪
ট্রাম্প জয়ী হওয়ায় বাংলাদেশ-মার্কিন সম্পর্কে কোনো পরিবর্তন আসবে?
ডোনাল্ড ট্রাম্পের পুনরায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে জয়লাভের পর বাংলাদেশ-মার্কিন সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা নতুন করে শুরু হয়েছে। গত কয়েক বছরে মানবাধিকারসহ বিভিন্ন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক ঠাণ্ডা ছিল। তবে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের বিদায়ের পর অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ায় সম্পর্ক পুনরায় উষ্ণ হতে শুরু করেছে। অধ্যাপক ইউনূসের সাথে মার্কিন ডেমোক্র্যাটদের সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। এর প্রতিফলন সম্প্রতি জাতিসংঘে তার ও প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উচ্ছ্বাসপূর্ণ ছবি থেকেও বোঝা গেছে। তবে ইউনূসের সাথে রিপাবলিকান পার্টির নেতাদের সাথেও সুসম্পর্ক আছে বলে তার প্রেস সচিব জানিয়েছেন, যা ট্রাম্প প্রশাসনের সাথে সম্পর্ক আরো উচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারে।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, ট্রাম্প প্রশাসনের কারণে বাংলাদেশ-মার্কিন সম্পর্কে হঠাৎ পরিবর্তনের সম্ভাবনা কম। তবে দীর্ঘমেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের নীতি পরিবর্তন হলে প্রভাব পড়তে পারে। ২০১৬ সালে ট্রাম্প প্রথমবারের মতো নির্বাচিত হলে ইউনূস ট্রাম্পের জয়কে "সূর্যগ্রহণ" হিসেবে মন্তব্য করেছিলেন। যদিও এবার ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানিয়ে তার নেতৃত্বে সম্পর্ক দৃঢ় করার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন ইউনূস। তবে ট্রাম্প প্রশাসনের ভারত-মার্কিন ঘনিষ্ঠতা বাংলাদেশকে চিন্তায় ফেলতে পারে, কারণ ভারত চায় বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ পুনরায় ক্ষমতায় ফিরুক।
বিশ্লেষক ড. আলী রীয়াজ বলেছেন, মার্কিন নীতিতে পরিবর্তন ঘটলে বাংলাদেশে প্রভাব পড়তে পারে, তবে তাৎক্ষণিক পরিবর্তন আশা করা যাচ্ছে না। তিনি মনে করেন, ভারতের সাথে ঘনিষ্ঠতার সুযোগ নিয়ে বাংলাদেশে অস্থিরতা সৃষ্টি হলে, যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত সম্পর্ক নিয়ে বিভিন্ন সমীকরণ প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষত ভারত-মার্কিন ঘনিষ্ঠতা চীনকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে, যা বাংলাদেশ-মার্কিন সম্পর্কেও প্রভাব ফেলতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় লবির শক্তিশালী প্রভাব উল্লেখযোগ্য। ট্রাম্পের একটি টুইট ছিলো এর প্রমাণ, যেখানে তিনি বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। এই টুইট ভারতীয় লবির প্রভাবকে আরও দৃঢ় করে। বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত এম. হুমায়ুন কবির বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি বাংলাদেশকে না দেখে ভারত এবং চীনের প্রেক্ষাপটে দেখে। এশীয় অঞ্চলে কূটনীতির প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশকে গুরুত্ব দিলেও তাদের প্রধান লক্ষ্য হলো ভারতের সাথে কৌশলগত সম্পর্ক বজায় রাখা।
অন্যদিকে, বাংলাদেশ-মার্কিন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখতে কিছুটা উষ্ণতা প্রয়োজন। বিশেষত ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতি বাংলাদেশে সরাসরি প্রভাব ফেলবে না, যদি কূটনৈতিক সম্পর্ক ভালো থাকে। অধ্যাপক আইনুল ইসলাম বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র-চীন ট্রেড ওয়্যারের প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্র হয়তো চীনের পণ্য বাংলাদেশের মাধ্যমে আনতে পারে। এই ক্ষেত্রে বাংলাদেশ গার্মেন্টস শিল্পে ইতিবাচক ফলাফল পেতে পারে।