জাতীয়

২ আগস্ট রংপুরে প্রধানমন্ত্রীর জনসভা, ১০ লাখ মানুষ সমাগমের প্রস্তুতি

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

মঙ্গলবার, ২৫ জুলাই, ২০২৩
২ আগস্ট রংপুরে প্রধানমন্ত্রীর জনসভা, ১০ লাখ মানুষ সমাগমের প্রস্তুতি
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরকে কেন্দ্র করে রংপুর বিভাগজুড়ে সাজ সাজ রব বিরাজ করছে। সরকার প্রধানের এ সফরকে কেন্দ্র করে রংপুর অঞ্চলের সাধারণ মানুষ প্রত্যাশার সঙ্গে প্রাপ্তির হিসাব মেলাতে শুরু করেছেন। এদিকে, প্রধানমন্ত্রীর এ জনসভায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ১০ লাখের বেশি মানুষের সমাগমের প্রস্তুতি নিয়েছেন।

আগামী ২ আগস্ট বুধবার জিলা স্কুল মাঠে আওয়ামী লীগের রংপুর বিভাগীয় জনসভায় বক্তব্য রাখবেন প্রধানমন্ত্রী। সর্বশেষ ২০১৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর তিনি রংপুরের পীরগঞ্জ ও তারাগঞ্জে দু’টি নির্বাচনী জনসভা করেছেন। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী দ্বাদশ নির্বাচনের প্রচারণা রংপুর থেকে শুরু করবেন বলে দলীয় সূত্র থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

জানা যায়, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় রংপুর বিভাগের ৫৮টি উপজেলার প্রতিটি উপজেলা থেকে কমপক্ষে ৩ থেকে ৪ হাজার মানুষ আনার পরিকল্পনা করছে। জনসভা সফল করতে আওয়ামী লীগের বিভাগীয় বর্ধিত সভা করা হয়েছে। সভায় ৪ মন্ত্রীসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। জনসভার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর বেশ কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন করার কথা রয়েছে।

বর্তমান সরকারের আমলে রংপুরের যেসব উন্নয়ন হয়েছে জনগণের নিকট তুলে ধরছেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা । প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে রংপুর বিভাগ, সিটি কর্পোরেশন, মেট্রোপলিটন পুলিশ প্রতিষ্ঠা হয়েছে। এ বছরের ১৬ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রংপুর বিভাগীয় সদর দপ্তরের উদ্বোধন করেছেন। এছাড়া রংপুরে বিশ্ববিদ্যালয়, মেরিন একাডেমি, উপজেলাগুলোতে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ স্থাপন, তিস্তা সড়ক সেতু নির্মাণসহ নানা উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন হয়েছে। এলেঙ্গা-রংপুর ছয়লেন মহাসড়কের কাজ চলমান। পাইপলাইনে গ্যাস সরবরাহের কাজও শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এসব উন্নয়নের ফিরিস্তি জনগণের কাছে তুলে ধরছেন নেতারা।

২০০৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জয়ের মধ্যদিয়ে বদলে যেতে থাকে রংপুর। ২০১১ সালের ৮ জানুয়ারি রংপুর জিলা স্কুল মাঠে মহাজোটের এক জনসভায় উন্নয়নের দায়িত্ব কাঁধে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। সেই থেকে তার প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন আর উন্নয়নের মোড়কে ‘মঙ্গাপীড়িত’ রংপুর অঞ্চল অনেকটাই বদলে গেছে।

এরপর টানা তিনবার সরকারে থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ প্রতিষ্ঠা, রংপুর পল্লি উন্নয়ন একাডেমি, পীরগঞ্জে মেরিন একাডেমি স্থাপন, আদালতের বহুতল ভবন, সিভিল সার্জনের নতুন ভবন, পুলিশ সুপারের কার্যালয়, বিভাগীয় মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্স, জেলা শিল্পকলা একাডেমি, বিভাগীয় সদর দফতর, রংপুর শিশু হাসপাতাল ও পুলিশ হাসপাতাল, আধুনিক পুলিশ লাইন্স নির্মাণ করেছেন। বর্তমানে ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষা, চিকিৎসা ও সব অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের জন্য রংপুর এখন উত্তরের রাজধানী।

উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে ১৭ তলাবিশিষ্ট ক্যান্সার হাসপাতাল নির্মাণ, র‌্যাব-১৩ ব্যাটালিয়ন সদর দফতরসহ বিভিন্ন সরকারি অবকাঠামো। তিস্তাপাড়ের মানুষের ভাগ্যবদলে ‘তিস্তা মহাপরিকল্পনা’ বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

দলীয় নেতাকর্মীরা বলছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে প্রধানমন্ত্রীর এ মহাসমাবেশ রংপুরবাসীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং চ্যালেঞ্জের। এই মহাসমাবেশ জনসমুদ্রে পরিণত করতে তারা ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছেন। সমাবেশে দলের নেতাদের কার্যক্রমের ওপর দলীয় পদ-পদবি এবং মনোনয়ন প্রত্যাশী ভাগ্যও নির্ধারণ করছে বলে দাবি তাদের।এবার রংপুরের প্রতিটি আসনে স্থানীয় দলীয় প্রার্থী চাইছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।

রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এরশাদুল হক রঞ্জু বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা টানা তিনবার রাষ্ট্রক্ষমতায় থেকে রংপুরকে যেভাবে উন্নয়নের মোড়কে সাজিয়েছেন, তা বিগত সময়ে কোনো সরকার করতে পারেনি। রংপুরে অভাবনীয় উন্নয়ন হয়েছে। এখন মঙ্গাপীড়িত রংপুর বলা হয় না, কারণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার প্রতিশ্রুতি পূরণের মধ্যদিয়ে রংপুর থেকে মঙ্গা দূর করেছেন। মানুষের ভাগ্যবদলের সঙ্গে সঙ্গে রংপুর অঞ্চলের ব্যাপক উন্নয়ন ও পরিবর্তন হয়েছে। আমরা প্রধানমন্ত্রীর আগমণ ঘিরে বিগত ১৪ বছরের উন্নয়ন তুলে ধরে প্রচারণা চালাচ্ছি।