সম্প্রতি চট্টগ্রাম শহরে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েই চলছে। এ বছরের শুরু থেকে ১২ এপ্রিল পর্যন্ত চট্টগ্রামে ডায়রিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা ৪ হাজার ২০২ জন। তারমধ্যে গত ৭ এপ্রিল একদিনেই ২৪১ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়াও গড়ে আক্রান্ত হচ্ছেন ১৫০ জনেরও বেশি মানুষ।
মূলত, তীব্র তাপদাহ, খোলা খাবার, এবং অফুটন্ত পানি পানের পাশাপাশি ব্যাক্টেরিয়াজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে ডায়রিয়ায় ভুগছে চট্টগ্রাম শহরের অসংখ্য রোগী।
এদিকে শহরে হু হু করে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় শঙ্কায় পড়েছে চট্রগ্রাম ওয়াসা। আর তাই চট্রগ্রাম ওয়াসার পানির গুণগত মান নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। এজন্য পানির গুণগত মান পরীক্ষা শুরু করেছে ওয়াসা কতৃপক্ষ। ইতোমধ্যেই নগরীর ২৪০ টি স্পটের পানির নমুনা পরীক্ষা করেছে সংস্থাটি।
তবে প্রতিষ্ঠানটির দাবি, সবকটি পয়েন্টে নিরপদ ও সুপেয় পানি পাওয়া গেছে। তারপরও কেন ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েই চলেছে সে বিষয়ে সুস্পষ্ট করে কিছু জানাতে পারেননি সংশ্লিষ্টরা।
প্রতিষ্ঠানটির প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ আলম জানান, ‘নগরবাসীর জন্য নিরাপদ ও সুপেয় পানি সরবরাহ করছে চট্টগ্রাম ওয়াসা। তবে সম্প্রতি ডায়রিয়ার প্রকোপ শুরু হওয়ায় আমরা কিছুটা চিন্তায় পড়ে গেছি। নগরীর সব জায়গায় একই মানের পানি সরবরাহ হচ্ছে কিনা সটি জানার জন্য ২৪০টি ভিন্ন ভিন্ন স্পট থেকে পানি সংগ্রহ করা হয়। কিন্তু পরীক্ষায় কোথাও খারাপ রিপোর্ট পাওয়া যায়নি।’
চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, কি জন্য যে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগী বাড়ছে, এর নির্দিষ্ট কারণ আমরা বলতে পারছি না। কারণ এখন পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোনো গবেষণা হয়নি। কিন্তু বাহিরের খাবার, এবং বাসি খাবার, এবং অফুটন্ত পানির কারণেই এই ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়ছে বলে ধারণা তার।
সংক্রামক রোগের জন্য বিশেষায়িত চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাটের বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. মামুনুর রশীদ বলেন, ‘গত ১০-১৫ দিনের মধ্যে যেসব রোগী ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তাদের রোগের হিস্ট্রি থেকে জানা যায়, অধিকাংশ রোগীর ইফতারের পর পর তাদের পাতলা পায়খানা শুরু হয়েছে। আক্রান্তরা বাইরের খোলা খাবার খেয়ে এবং অনিরাপদ পানি পান করে এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন।’
এ সময় তিনি বাহিরের খোলা খাবার পরিহার ও খাবার পানি ফুটিয়ে পান করার পরামর্শ দেন।