ব্যরিস্টার সুমন সত্য ও ন্যায়ের পথে চলা একজন অসাধারণ মানুষ
বিভিন্ন দুর্নীতি-অসঙ্গতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে এক প্রতিবাদী কন্ঠস্বর ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন। ব্যতিক্রমী সামাজিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে আলোচনায় থাকেন তিনি।
ফেসবুক লাইভের মাধ্যমে সামাজিক অবক্ষয়, রাস্তাঘাট, জলবদ্ধতা, অনিয়মসহ সব ধরনের সমস্যা উদঘাটন ও সেসব সমস্যার সমাধানে করণীয় সম্পর্কে আলোচনা করেন থাকেন ব্যারিস্টার সুমন।
সেচ্ছায় আইনি সহয়তা করে খুব অল্প সময়ের ব্যবধানে সাধারন জনগনের মনে আস্থার জায়গা করে নিয়েছেন এই সমাজকর্মী। তাই সাধারণ মানুষের কাছে মানবতার ফেরিওয়ালা হিসেবে পরিচিতি পেতে দেরি হয়নি তার।
সমাজসেবার অংশ হিসেবে মানবিক কল্যাণে নিজ প্রচেষ্টায় ১০০ টি সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা করেছিলেন ব্যারিস্টার সুমন।এরই মধ্যে নির্মিত হয়েছে তার ৪২টি সেতু।
'প্রতিটি ব্রিজ আমার কাছে মাইলফলক। পৃথিবী থেকে বিদায় নেওয়ার আগে এই রেকর্ডকে যত বড় করতে পারা যায়, সেটি করতে চাই। ১০০ ব্রিজ বানাইতে চাই।'
গত ২০ ডিসেম্বর হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার শানখলা ইউনিয়নের পাকুড়িয়া গ্রামে ৪২তম ব্রিজ উদ্বোধনের সময় এসব কথা বলেন তিনি।
অবশ্য তার সামাজিক কর্মকান্ডের পরিধি ব্রীজ- কালভার্ট নির্মান ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সীমাবদ্ধ ছিলনা।
ভূমিকা রেখেছেন অসহায় মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাপনে। যেকোনো প্রতিকূল পরিবেশে সাধারণ জনগণের কাছে বাড়িয়ে দিয়েছিলেন মানবিকতার হাত।
এ বছর সিলেটের বন্যায় যে সকল ব্যক্তি এগিয়ে আসেন তাদের মধ্যে অন্যতম একজন ছিলেন তিনি। বন্যা কবলিত নিজ জন্মস্থানের মানুষের জন্য সাহায্য ও শ্রম দিয়ে তাদের পাশে ছিলেন ব্যারিস্টার সুমন।
ব্যক্তিগতভাবে গরীব ও মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য তিনি উপবৃত্তির ব্যবস্থা করেন । এছাড়া চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নের জন্য সব ধরনের সহোযোগিতা ও শীতবস্ত্র বিতরন করেন।
শুধু তাই নয়, ডিজিটালাইজেশন এর যুগে বেতন ভাতার উন্নয়নে এর স্বার্থে গ্রাম পুলিশদের শ'খানেক মোবাইল ফোন প্রদান করেন আইনজীবী সুমন।
জনগণের ভোগান্তি লাঘবের পাশাপাশি ক্রীড়া অঙ্গনে রয়েছে তার উল্লেখযোগ্য ভূমিকা। নিজে উদ্যোগে তিনি একটি ফুটবল সংগঠন তৈরি করেছেন, যেখানে ভালো ভালো খেলোয়ারদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
ক্রীড়াঙ্গনের উন্নয়নে তিনি শিশুদেরকে হাজারের বেশি খেলার সামগ্রী বিতরণ, ৫টি খেলার মাঠ মেরামত ও বঙ্গবন্ধুর নামে পাঁচটি ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজন করেন।
ব্যারিস্টার সুমন বাংলাদেশের সিলেট জেলায় ১৯৭৮ সালে জন্ম গ্রহণ করেন। সাধারণ একজন ব্যবসায়ীর ঘর থেকে বেড়ে উঠা ৬ ভাই-বোনের মধ্যে তিনি সবার ছোট।
মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান হওয়ায় তার অতীত আর্থিক অসচ্ছলতার মধ্য দিয়ে কেটেছে। এমনকি লন্ডনে ব্যারিস্টারি পড়ার জন্য করুণ দুর্ভোগের স্বীকার হতে হয় ব্যারিস্টার সুমনকে।
বাস্তবতার মুখোমুখি হয়ে ট্রলিম্যান হিসেবে কাজ শুরু করেন তিনি। মাঝে মাঝে অনিয়মিতভাবে তিনি সেখানে ড্রাইভারি করতেন। অর্জিত সেই টাকা জমিয়ে তার ব্যারিস্টারি লেখাপড়া চালিয়েছেন।
লন্ডনে থাকাকালিন সময়ে অর্থের অভাবে বাবার মৃত্যুর সংবাদ শুনেও দেশে ফিরতে না পারা তাকে জীবনের অন্যরকম অভিজ্ঞতার সম্মুখীন করে। এই অভিজ্ঞতা তাকে অনুপ্রেরণা দেয় টাকার পেছনে না ছুটে সমাজকল্যাণে কিছু করার।
কর্মজীবনে আইনজীবীকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করে সর্বদা ন্যায় প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন। ফলস্বরূপ ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে, ২০১৯ সালে হতে তিনি বাংলাদেশের বিখ্যাত ব্যারিস্টার হিসেবে খ্যাতি পান।
সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারে বেড়ে উঠা সুমনকে অসাধারণ ব্যক্তির আওতায় এনে দিয়েছে তার সততা। কর্মজীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি তার সততার পরিচয় দিয়েছিলেন।
যার প্রমাণ মিলে, স্বেচ্ছায় তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর পদ থেকে পদত্যাগ করলে।
সামাজিক বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে জড়িত হয়ে যাওয়ায় মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য গঠিত ট্রাইব্যুনালে সময় দিতে পারছেন না। এ অবস্থায় সরকারের কোষাগার থেকে বেতন নেয়া অনৈতিক মনে করছেন তিনি।
এছাড়া ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের। এই অভিযোগে ওসির বিরুদ্ধে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের মামলা করে সুমন।
ফেসবুকে বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা নিয়ে সরব থাকায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতেও তার প্রচুর জনপ্রিয়তা। বর্তমানে তার ফেসবুক ফলোয়ারের সংখ্যা ৫ লক্ষের ও বেশি।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন অন্যায় ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলেন বলে তার পিছনে ষড়যন্ত্র করার মানুষও অনেক। তার শত্রুদের পক্ষ থেকে তাকে হত্যার হুমকিও দেয়া হয়েছে অনেকবার।
কিন্তু সেসব হুমকি ও মৃত্যুভয় তুচ্ছ করে তিনি কাজ করে যেতে চান ন্যায় ও সততার পথে। থাকতে চান জনগনের যৌক্তিক দাবির পক্ষে। আওয়াজ তুলতে চান জনমানুষের কল্যাণের জন্য।