লাইফস্টাইল

চা ও ধূমপান একসঙ্গে করলে হতে পারে বড় বিপদ

উপ-সম্পাদক

উপ-সম্পাদক

মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪
চা ও ধূমপান একসঙ্গে করলে হতে পারে বড় বিপদ
অনেকেই কাজের ফাঁকে চা পান করে স্বস্তি খোঁজেন। আবার অনেকেরই চা পান করার সময় ধূমপান করার অভ্যাস রয়েছে। এটি তাদের কাছে মানসিক চাপ কমানোর একটি উপায় মনে হলেও বাস্তবে এই অভ্যাস শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। চা এবং ধূমপানের সংমিশ্রণ দীর্ঘমেয়াদে হৃদরোগ, ক্যান্সার এবং হজম প্রক্রিয়ার জটিলতার মতো গুরুতর সমস্যার ঝুঁকি বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়।
চা ও ধূমপানের যৌথ প্রভাব
একটি সিগারেটে থাকে ৬ থেকে ১২ মিলিগ্রাম নিকোটিন, যা ধমনীগুলোকে সংকুচিত করে রক্তসঞ্চালন বাধাগ্রস্ত করে। এতে হৃদপিণ্ডে পর্যাপ্ত রক্ত সরবরাহ হয় না এবং হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে। অপরদিকে, চায়ে থাকা পলিফেনল নামক প্রাকৃতিক যৌগ হৃদপিণ্ডের জন্য উপকারী হলেও, ধূমপানের সময় চায়ের সঙ্গে মিশে তা শরীরের জন্য ক্ষতিকর হয়ে ওঠে।
চায়ে যদি দুধ মেশানো হয়, তবে দুধের প্রোটিন চায়ের পলিফেনলের কার্যকারিতা নষ্ট করে। অতিরিক্ত চা পান করলে হৃৎস্পন্দন বেড়ে যায় এবং উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি তৈরি হয়।
ক্যান্সারের ঝুঁকি বৃদ্ধি
গবেষণায় দেখা গেছে, চা পান করার সময় ধূমপান করলে ক্যান্সারের ঝুঁকি ৩০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যায়। সিগারেটের ধোঁয়ার টক্সিন এবং চায়ের মধ্যে থাকা রাসায়নিক যৌগ মিলে শরীরের কোষগুলোর স্বাভাবিক কার্যক্রমে বাধা দেয়। ফলে মুখ, গলা, এবং ফুসফুসের ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়।
পাচনতন্ত্রের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব
চা ও ধূমপানের এই মিশ্রণ আপনার হজম প্রক্রিয়ায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এটি পেট ব্যথা, অ্যাসিডিটি এবং গ্যাসের সমস্যা বাড়িয়ে তোলে। এ অভ্যাসের কারণে অন্ত্রে প্রদাহ হতে পারে, যা দীর্ঘমেয়াদে জটিল রোগের দিকে নিয়ে যেতে পারে।
মানসিক চাপ ও উদ্বেগ
অনেকেই ধূমপানের মাধ্যমে চাপ কমাতে চান। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ধূমপানের পর শরীরে সাময়িক প্রশান্তি এলেও এটি দীর্ঘমেয়াদে মানসিক চাপ ও উদ্বেগ বাড়ায়। ধূমপানের সঙ্গে ক্যাফেইনের মিশ্রণ ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়, যা মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
দাঁত ও মুখের স্বাস্থ্যের ক্ষতি
চা এবং সিগারেটের ট্যানিন দাঁতের সাদা ভাব নষ্ট করে এবং দাঁতকে দুর্বল করে দেয়। ধূমপান মুখে দুর্গন্ধ সৃষ্টি করে এবং মুখের ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।
চা ও ধূমপানের অভ্যাস কীভাবে ত্যাগ করবেন
১. ধীরে ধীরে চা পান করার সময় ধূমপানের অভ্যাস কমানোর চেষ্টা করুন।
২. চায়ের পরিবর্তে ভেষজ চা বা গরম পানি পান করতে পারেন।
৩. ধূমপান ত্যাগে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
৪. এই অভ্যাস ত্যাগে পরিবার বা বন্ধুবান্ধবের সহায়তা নিন।
অতিরিক্ত চায়ের ক্ষতি
বেশি চা পান করলে বারবার প্রস্রাবের প্রয়োজন হয়, যা কিডনির ওপর চাপ সৃষ্টি করে। এর ফলে শরীরে পানিশূন্যতার সমস্যা দেখা দেয়।