আইন আদালত

মুক্তিযোদ্ধার ওপর হামলার ঘটনায় মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের নিন্দা ও প্রতিবাদ

স্টাফ রিপোর্টারঃ

স্টাফ রিপোর্টারঃ

সোমবার, ১১ নভেম্বর, ২০২৪
মুক্তিযোদ্ধার ওপর হামলার ঘটনায় মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের নিন্দা ও প্রতিবাদ
গতকাল (১০ নভেম্বর) গুলিস্তান জিরো পয়েন্টে অবস্থিত শহীদ নূর হোসেন চত্বরে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধার ওপর হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে প্রতিবাদ লিপি দিয়েছেন বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। তারা বলেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সামনে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর এধরণের ন্যাক্কারজনক সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি কলঙ্কজনক অধ্যায় হয়ে থাকবে। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে যাঁদের রক্ত ও ত্যাগের বিনিময়ে আমরা একটি লাল সবুজের পতাকা, একটি মানচিত্র ও স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্র পেয়েছি, তাঁদের ওপর নগ্ন সন্ত্রাসী হামলা এদেশের মানুষ কখনোই মেনে নিবে না। গণতান্ত্রিক আন্দোলনের বীর শহীদ নূর হোসেনের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো কোন অপরাধ নয়। 

সংগঠনের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল ও সাধারণ সম্পাদক আল মামুন স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। প্রতিবাদ লিপিতে বলা হয়েছে, প্রতি বছর ১০ নভেম্বরে সকল রাজনৈতিক দল, সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন ও জনসাধারণ শহীদ নূর হোসেন এর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানায়। এর আগে বাংলাদেশের ইতিহাসে শহীদ নূর হোসেন এর প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর সময় কখনো এধরণের ন্যাক্কারজনক সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেনি। এই প্রথম শহীদ নূর হোসেন চত্বরে এধরণের ন্যাক্কারজনক সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা দেশবাসীকে দেখতে হলো। শ্রদ্ধা জানানোর সময় একজন প্রবীণ বীর মুক্তিযোদ্ধা ওপর সন্ত্রাসী হামলার মধ্যে দিয়ে বর্তমান অবৈধ ও অসাংবিধানিক অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রকৃত চরিত্র আবার জাতির সামনে উন্মোচিত হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে কারা ফ্যাসিস্ট ও স্বৈরাচারী আচরণ করছে সেটা গতকাল সমগ্র বিশ্ব দেখতে পেয়েছে।

তারা আরো জানান বিভিন্ন দিবসে সামান্য ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর অধিকারটুকু পর্যন্ত এদেশের জনগণ হারিয়েছেন। এদেশে জনগণের সাংবিধানিক অধিকার, মৌলিক ও মানবাধিকার বলতে এখন আর কিছু নেই। অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, এখনও পর্যন্ত সেই বৃদ্ধ বীর মুক্তিযোদ্ধার ওপর হামলাকারী মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী অপশক্তির দোসর সন্ত্রাসীদেরকে গ্রেফতার করা হয়নি যা আইনের শাসন ও মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

প্রতিবাদ লিপিতে আরো জানানো হয় সংবিধান লঙ্ঘন করে পাঠ্যপুস্তক থেকে শুরু করে রাষ্ট্রের সর্বস্তরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সংগ্রামী জীবন ও অবদান মুছে ফেলা, মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি এবং গতকাল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর রাষ্ট্রীয় মদদে পরিকল্পিত ভাবে সন্ত্রাসী হামলা সবকিছু একই সূত্রে গাঁথা। গত ৫ আগস্টের পর সারাদেশে অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। শতাধিক বীর মুক্তিযোদ্ধাকে রক্তাক্ত করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত কোন মামলা নেয়া হয়নি। একাত্তরে পরাজিত হওয়ার প্রতিশোধ নেয়ার জন্য মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী অপশক্তি জামাত-শিবির পরিকল্পিত ভাবে রাষ্ট্রীয় মদদে সারাদেশে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর হামলা ও বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। জনগণের নিকট এটা ইতিমধ্যে প্রমাণিত হয়েছে যে, এখন দেখার কেউ নেই। কোন সরকার নেই। এরা জনগণের নিরাপত্তা দিতে সম্পূর্ণ ভাবে ব্যর্থ হয়েছে। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা ও প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের দায় বর্তমান অবৈধ ও অসাংবিধানিক অন্তবর্তীকালীন সরকারকে অবশ্যই নিতে হবে। কারণ বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ দেশের প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের নৈতিক ও আইনগত দায়িত্ব। বর্তমানে দেশে কোন শ্রেণী পেশার মানুষের জীবনের নিরাপত্তা নেই। 

তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিকট আহবান জানান, অবিলম্বে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা ও হত্যাকাণ্ড বন্ধ করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। গতকাল গুলিস্তান জিরো পয়েন্টে বীর মুক্তিযোদ্ধার ওপর হামলাকারী প্রতিটি সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় খুব শীঘ্রই বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের সন্তানরা দেশব্যাপী রাজপথে কঠোর কর্মসূচী ঘোষণা করে সমুচিত জবাব দিতে বাধ্য হবে।