মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শেষে এখন চলছে চূড়ান্ত গণনা, যেখানে প্রতিটি ইলেকটোরাল কলেজ ভোটই নির্ধারণ করবে পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট কে হবেন। প্রাথমিক ফলাফল অনুযায়ী, বাংলাদেশ সময় বুধবার সকাল ১০টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত ২১১ ইলেকটোরাল ভোট নিয়ে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প এগিয়ে রয়েছেন। তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী কমলা হ্যারিস পেয়েছেন ১৫৩ ইলেকটোরাল ভোট। এই ফলাফল মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের পক্ষ থেকে প্রকাশিত হয়েছে।
ট্রাম্প জিতেছেন যেসব রাজ্যের ইলেকটোরাল ভোট
ডোনাল্ড ট্রাম্প ইতোমধ্যেই বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যের ইলেকটোরাল ভোটে জয়লাভ করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে নর্থ ডাকোটা (৩ ভোট), সাউথ ডাকোটা (৩ ভোট), ওয়াইওমিং (৩ ভোট), মিসৌরি (১০ ভোট), ওকলাহোমা (৭ ভোট), টেক্সাস (৪০ ভোট), মিসিসিপি (৬ ভোট), আরকানসাস (৬ ভোট), আলাবামা (৯ ভোট), টেনেসি (১১ ভোট), কেনটাকি (৮ ভোট), ইন্ডিয়ানা (১১ ভোট), ওয়েস্ট ভার্জিনিয়া (৪ ভোট), সাউথ ক্যারোলাইনা (৯ ভোট), ফ্লোরিডা (৩০ ভোট), উটাহ (৬ ভোট), লুইসিয়ানা (৮ ভোট), মন্টানা (৪ ভোট), ওহিও (১৭ ভোট), আইডাহো (৪ ভোট), কানসাস (৬ ভোট), এবং আইওয়া (৬ ভোট)। এসব রাজ্যে ট্রাম্পের জয় তার প্রতিদ্বন্দ্বীকে পেছনে ফেলে দিয়েছে।
এছাড়াও, ট্রাম্প বর্তমানে কয়েকটি রাজ্যে এগিয়ে আছেন যেখানে চূড়ান্ত গণনা এখনও সম্পন্ন হয়নি। এগুলো হলো অ্যারিজোনা (১১ ভোট), নেব্রাস্কা (৫ ভোট), মিনেসোটা (১০ ভোট), উইসকনসিন (১০ ভোট), পেনসিলভানিয়া (১৯ ভোট), নর্থ ক্যারোলাইনা (১৬ ভোট), এবং জর্জিয়া (১৬ ভোট)। এই রাজ্যগুলোর ভোট ট্রাম্পের ঝুলিতে গেলে তার বিজয়ের সম্ভাবনা আরও সুসংহত হবে।
কমলা হ্যারিসের জয়লাভের রাজ্যগুলো
ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী ও বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যের ইলেকটোরাল ভোট নিশ্চিত করেছেন। তার জয়লাভ করা রাজ্যগুলো হলো ক্যালিফোর্নিয়া (৫৪ ভোট), ওরেগন (৮ ভোট), কলোরাডো (১০ ভোট), নিউইয়র্ক (২৮ ভোট), ভার্মন্ট (৩ ভোট), ম্যাসাচুসেটস (১১ ভোট), ডেলাওয়্যার (৩ ভোট), মেরিল্যান্ড (১০ ভোট), এবং ইলিনয় (১৯ ভোট)। এসব রাজ্যের ইলেকটোরাল ভোট কমলার জন্য গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এগুলো তাকে নির্বাচনী যুদ্ধে টিকিয়ে রেখেছে।
কমলা হ্যারিস আরও কয়েকটি রাজ্যে এগিয়ে আছেন, যার চূড়ান্ত ফলাফল পাওয়া যায়নি। এগুলো হলো ওয়াশিংটন (১২ ভোট), নিউ মেক্সিকো (৫ ভোট), ভার্জিনিয়া (১৩ ভোট), মিশিগান (১৫ ভোট), নিউ জার্সি (১৪ ভোট), কানেকটিকাট (৭ ভোট), মেইন (৪ ভোট), এবং নিউ হ্যাম্পশায়ার (৪ ভোট)। এই রাজ্যগুলোর ভোট যোগ হলে কমলা হ্যারিসের ভোটের সংখ্যাও উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেতে পারে।
এই নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও কমলা হ্যারিসের মধ্যকার প্রতিযোগিতা বেশ উত্তেজনাপূর্ণ। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল ইলেকটোরাল কলেজ ভোটের মাধ্যমে নির্ধারিত হয়, যেখানে প্রার্থীকে জয়লাভের জন্য ২৭০টি ইলেকটোরাল ভোট পেতে হবে। প্রতিটি রাজ্য তার জনসংখ্যার ভিত্তিতে নির্ধারিত সংখ্যক ইলেকটোরাল ভোট প্রদান করে এবং যে প্রার্থী রাজ্যটির ভোটারের অধিকাংশ সমর্থন পান, সেই প্রার্থী রাজ্যের সব ইলেকটোরাল ভোট পান।
এই নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি ব্যাটলগ্রাউন্ড বা স্বল্প ব্যবধানের রাজ্য রয়েছে, যেমন পেনসিলভানিয়া, ফ্লোরিডা, উইসকনসিন এবং মিশিগান। এই রাজ্যগুলির যে কোনো একটি বড় প্রার্থীর পক্ষে চলে গেলে, তা তার জয়ের সম্ভাবনাকে অনেকটাই নিশ্চিত করতে পারে। এসব রাজ্যে এখনও পূর্ণ গণনা সম্পন্ন না হওয়ায় ফলাফলও অনিশ্চিত।
এই নির্বাচনে ট্রাম্প ও হ্যারিসের মধ্যে কড়া প্রতিযোগিতা লক্ষণীয়। হ্যারিস কিছু বড় রাজ্যের ভোট নিশ্চিত করলেও, ট্রাম্পের জয়ের সম্ভাবনা বেশ শক্তিশালী কারণ তিনি বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যে এগিয়ে রয়েছেন। তবে কিছু রাজ্যের ভোট এখনও গণনা প্রক্রিয়ার মধ্যে থাকায় এবং ফলাফল ঘোষণার অপেক্ষায় থাকায়, এ নির্বাচনের শেষ ফলাফলের জন্য কিছুটা ধৈর্য ধরতে হবে।
মার্কিন নির্বাচন নিয়ে এই উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিতে বিশ্বব্যাপী নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারীরা অপেক্ষা করছেন কাকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেখতে পাবে বিশ্ব।