পাকিস্তানের শাহবাজ শরিফ সরকারের মেয়াদ শেষ হবে আগস্টে। সম্প্রতি পাক প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন যে, সময় হলেই তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন। মনে করা হচ্ছে, আগস্টের প্রথম দশকে পাকিস্তানে ক্ষমতা হস্তান্তর হবে। দেশটির নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান কে হবেন তা নিয়ে চলছে জল্পনা কল্পনা।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ বলেছেন, পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএলএন) এবং পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হিসেবে বাছাই করা হবে একজন রাজনীতিককে। এ জন্য তারা বিভিন্ন নাম থেকে প্রার্থীদের একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা তৈরি করেছে। এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য নিউজ।
তিনি জানিয়েছেন যে, সংক্ষিপ্ত তালিকায় প্রাথমিকভাবে ৫ জনকে বাছাই করা হয়েছে। তবে তাদের নাম বলতে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন। খাজা আসিফ বলেছেন, পিপিপি এবং পিএমএলএন একসঙ্গে চার থেকে পাঁচটি নাম চূড়ান্ত করেছে। তা নিয়ে অন্য দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করা হবে। এরপর এক সপ্তাহের মধ্যে একটি নাম চূড়ান্ত করা হবে। মিত্র জোটকে এ বিষয়ে একটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসতে হবে। ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন হতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমি মনে করি বর্তমান পার্লামেন্টের মেয়াদ শেষ হওয়ার দু’দিন আগেই তা ভেঙে দেয়া উচিত। কারণ পার্লামেন্টকে শূন্য রাখতে তাতে আরও অনেক জটিলতা সৃষ্টি হবে।
সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, পাকিস্তানের ক্ষমতাসীন জোটের অন্যতম প্রধান দল প্রস্তাব করেছে যে অর্থমন্ত্রী ইসহাক দার আসন্ন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নেতৃত্ব দেবেন। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এর চুক্তির অধীনে যেন পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সংস্কার কার্যক্রম তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে বাধাগ্রস্ত না হয় সেজন্যই তার নাম প্রস্তাব করা হয়েছে।
পিএমএল-এন এর এক সদস্য বলেছেন, 'আমরা মনে করি আইএমএফের সাথে সম্মত অর্থনৈতিক সংস্কারগুলো চালিয়ে যাওয়ার জন্য তিনি (ইসহাক দার) সেরা বাজি হতে পারেন।'
পাকিস্তান গত মাসে আইএমএফ থেকে প্রয়োজনীয় ৩ বিলিয়ন ডলারের স্বল্পমেয়াদী আর্থিক প্যাকেজের প্রথম কিস্তি পেয়েছে। এটির সঠিক ব্যবহার না হলে পরবর্তী কিস্তি পাওয়া নিয়ে সমস্যায় পড়তে হতে পারে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ক্ষমতাসীন জোট আগামী ৮ আগস্ট সংসদ ভেঙে দেবে। তারপরে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করবে এবং আগামী ৯০ দিনের মধ্যে তারা নির্বাচনের আয়োজন করবে।
ক্ষমতাসীন জোট ২০২২ সালের এপ্রিলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে আস্থা ভোটে হারিয়ে ক্ষমতা গ্রহণ করে। এরপর থেকে ইমরান খান অভিযোগ করে আসছেন যে, সেনাবাহিনীর কথা না শোনায় তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে দেশটির সেনাবাহিনী বরাবরই এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। ইসহাক দার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হতে পারেন এমন আলোচনার মধ্যে ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) বলেছে, দারের অধীনে তত্ত্বাবধায়ক সরকার থাকার অর্থ এটি নিরপেক্ষ নয়।
পিটিআই মুখপাত্র ফারুখ হাবিব বলেন, 'যদি ইসহাক দারকে তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী করা হয়, তাহলে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। এটি নামেমাত্র নির্বাচন হবে।'