চারদিকে সবুজ আর সবুজ। নেই কোন গাড়ির যান্ত্রিক শব্দ। কান পাতলেই শোনা যাবে, হরেক রকম পাখির ,মনোমুগ্ধকর কলকাকলি।
এমনই সুন্দর এক গ্রামের “নান গিয়ের্থুন”। নেদারল্যান্ড এর এই গ্রামটিকে বলা হয় রূপকথার রাজ্য।
কারণ ,রূপকথার মতো এই গ্রামটি সবুজ, শান্ত আর অপরূপ সৌন্দর্যে ঘেরা। এখানকার মানুষজন ও বসবাস করেন, খুব শান্তিপূর্ণ ভাবে।
পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর গ্রাম গুলোর একটি ,এই গিয়ের্থুন। নেদারল্যান্ডস এর ছোট্ট এই গ্রাম, অত্যন্ত জনপ্রিয় সারা বিশ্বের পর্যটকদের কাছে।
হাজার হাজার পর্যটক ,প্রতিবছর ঘুরতে আসেন এখানে।
শুধু সৌন্দর্য দেখার জন্য, এখানে আসেন না তারা। গিয়ের্থুন গ্রামের রয়েছে আরো বিশেষত্ব, যা পৃথিবীর অন্য কোন গ্রামে পাওয়া যাবে না।
ছবির মতো সুন্দর, রূপকথার এই গ্রামে ,যাতায়াতের জন্য কোন সড়ক বা রাস্তা গড়ে উঠেনি এখন পর্যন্ত।
সড়কপথ না থাকার কারণে ,কোন গাড়ি ও আসে না এখানে।
সেজন্য গাড়ির হর্নের মতো ,যান্ত্রিক শব্দের কোলাহল নেই গিয়ের্থুন গ্রামে। সারাদিনই থাকে খুব শান্ত পরিবেশ।।
গিয়ের্থুন গ্রামের ,সবধরণের যোগাযোগ ব্যবস্থা হয়ে থাকে জলপথে। গ্রামের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে আছে, জলপথ।
এসব জলপথে ,ছোট ছোট নৌকায় করে, গ্রামের বিভিন্ন প্রান্তে পৌছে যান অধিবাসিরা।
নৌকার ইঞ্জিনের আওয়াজ ,যাতে পরিবেশ নষ্ট না করে, সেজন্য ও রাখা হয়েছে ব্যবস্থা।
গ্রামের সকল নৌকায় ব্যবহার করা হয়েছে, বিশেষ ধরণের ইঞ্জিন। যেগুলো কোন শব্দ করে না চলার সময়।
এই বিশেষত্ব ,গিয়ের্থুন কে আলাদা করে তুলেছে ,পুরো বিশ্বের কাছে। কোন যান্ত্রিক শব্দ নেই এই গ্রামে।
সবচেয়ে জোরে যেসব আওয়াজ শোনা যায়, সেগুলো কোন হাঁস, কিংবা পাখির মিষ্টি কিচির মিচির শব্দ।
অপরূপ এই গ্রাম কে বলা হয় ,নেদারল্যান্ডস এর ভেনিস। রাস্তাবিহীন গ্রামটির জলপথ গুলো অবশ্য, পরিকল্পিত ভাবে গড়ে উঠেনি।
বারো'শো ত্রিশ সালের দিকে গোড়াপত্তন হয়েছিলো, এই গ্রামের। তখন বিভিন্ন জায়গায় , মাটির নিচে ছিলো বড় বড় ফাঁপা অংশ।
এখানে বসবাস শুরু হবার পর ,গ্রামের অধিবাসিরা খুড়ে বের করতে শুরু করলো , এসব ফাঁপা জায়গা। বছরের পর বছর ধরে চলছিলো এসব খুড়া খুড়ি।
এর ফলে বিভিন্ন জায়গায় তৈরি হয় ,ছোট ছোট লেক। এসব লেকগুলো পরস্পরের সাথে যুক্ত করে তৈরি করা হয়, ছোট ছোট খাল।
গ্রামের বিভিন্ন দিক জুড়ে ছড়িয়ে আছে ,লেক এবং সংযোগ খাল। এর ফলে পুরো গ্রাম পরিনত হয়েছে ,অনেক গুলো ছোট ছোট দ্বীপে।
এক দ্বীপ থেকে অন্য দ্বীপে যাওয়ার জন্য ,গিয়ের্থুন গ্রামে আছে ,একশো পঞ্চাশটির বেশি কাঠের সেতু।
দ্বীপগুলো তে রয়েছে, ছোটছোট কটেজ আর রঙবেরঙ্গের গাছপালা।
সব মিলিয়ে ,নেদারল্যান্ডস এর ছোট্ট এই গ্রাম, রূপকথার মতো অপরূপ সুন্দর
আমস্টারডাম থেকে খুব সহজেই পৌছা যায় এখানে।
গাড়িতে করে ,প্রায় পঁচাত্তর কিলোমিটার এগুলোই ,শুরু হবে জলপথ। তারপর রঙীন নৌকায় করে ঘোরা যাবে, গ্রামের ভেতরে।
আগে বিশ্ববাসীর খুব একটা জানা ছিলো না এটি সম্পর্কে।
উনিশশো আটান্ন সালে বিখ্যাত কমেডি ফিল্ম, “ফানফেয়ার” এর শুটিং করা হয় এই গ্রামে। এর মাধ্যমে পুরো বিশ্বের নজর কাড়ে, ছবির মতো সুন্দর গ্রাম “গিয়ের্থুন।”
দর্শক,আজ এ পর্যন্তই