প্রেস লেখা জ্যাকেটই কী ইসরায়েলি বাহিনীর লক্ষ্য?
হাসান শাহরিয়ার: একবিংশ শতাব্দীর শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে ৪৫ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন ফিলিস্তিনের তথ্য মন্ত্রণালয়।
১১ মে আল জাজিরার সাংবাদিক শিরীন আবু আকলেহ ওয়েস্ট ব্যাংকের জেনিনে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে নিহত হন। ৫১ বছর বয়সী ফিলিস্তিনি-আমেরিকান এই টিভি সংবাদদাতা ‘প্রেস’ লেখা একটি প্রতিরক্ষামূলক জ্যাকেট পরে অন্য সাংবাদিকদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় তাকে গুলি করা হয় এবং সেখানেই তিনি মারা যান।
ইসরায়েলি বাহিনী দ্বারা নিহত হওয়া অনেক সাংবাদিকের তালিকার সর্বশেষ নিহতর ঘটনা এটি।
ফিলিস্তিনের তথ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০০০ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে অন্তত ৪৫ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। কিন্তু ফিলিস্তিনি সাংবাদিক ইউনিয়নের মতে নিহতের সংখ্যা ৫৫ জনের বেশি।
গত বছরের মে মাসে গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় স্থানীয় ভয়েস অব আল-আকসা রেডিও স্টেশনের সম্প্রচারক ইউসেফ আবু হুসেন নিহত হন। অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় তার বাড়ি লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালানো হয় বলে দাবি করেছিলেন পরিবার ও সহকর্মীরা।
সেই বছরই ১০ মে থেকে ২১ মে পর্যন্ত চলা ১১ দিনের বোমাবর্ষণে কমপক্ষে ২৬০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হন। ইসরায়েলি বোমাবর্ষণে আল জাজিরা ও বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমের ভবন ধ্বংস হয়ে যায়।
এর আগে ২০১৮ সালের এপ্রিলে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে নিহত হন দুই ফিলিস্তিনি সাংবাদিক। আহমাদ আবু হুসেইন গাজা সীমান্তে ফিলিস্তিনি গণবিক্ষোভ কভার করার সময় ‘প্রেস’ লেখা প্রতিরক্ষামূলক জ্যাকেট পরেছিলেন তারপরও ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে নিহত হন তিনি।
৭ এপ্রিল গাজাভিত্তিক আইন মিডিয়া এজেন্সির ফটোগ্রাফার ইয়াসির মুর্তজা ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে নিহত হন। মুর্তাজাও প্রেস লেখা জ্যাকেট পরেছিলেন।
৮ জুলাই থেকে ২৬ আগস্ট পর্যন্ত গাজায় সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলা চালায় ইসরায়েল। এই হামলায় গাজায় কমপক্ষে ২,১০০ জন নিহত এবং ১১,০০০ এরও বেশি লোক আহত হয়েছিল।
২০১৪ বছরটি ফিলিস্তিনের সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে বিপদজনক ছিল। ফিলিস্তিনের তথ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছেন, সেই বছর অন্তত ১৭ জন সাংবাদিককে হত্যা করা হয়। একবিংশ শতাব্দীর শুরু থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে কমপক্ষে নিহত হয়েছেন ২৫ জন ।
