অর্থনীতি

৫ বছরের জন্য কর অব্যাহতি পেল গ্রামীণ ব্যাংক

উপ-সম্পাদক

উপ-সম্পাদক

শনিবার, ১২ অক্টোবর, ২০২৪
৫ বছরের জন্য কর অব্যাহতি পেল গ্রামীণ ব্যাংক
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির অন্যতম প্রতীক গ্রামীণ ব্যাংক আবারও কর অব্যাহতি সুবিধা পেয়েছে। আগামী পাঁচ বছরের জন্য প্রতিষ্ঠানটির সব ধরনের আয় করমুক্ত ঘোষণা করেছে সরকার। অর্থাৎ, ২০২৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকটি করের বোঝা থেকে মুক্ত থাকবে। এই ঘোষণা দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে এক আলোচিত বিষয় হয়ে উঠেছে।
গত বৃহস্পতিবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানের সই করা প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, আয়কর আইন, ২০২৩-এর ধারা অনুযায়ী গ্রামীণ ব্যাংকের সব আয়কে করমুক্ত ঘোষণা করা হয়। নতুন এই সুবিধা ২০২৪ সালের ১ অক্টোবর থেকে কার্যকর হবে এবং ৩১ ডিসেম্বর ২০২৯ সাল পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।
গ্রামীণ ব্যাংক ১৯৮৩ সালে ড. মুহম্মদ ইউনূসের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে ব্যাংকটি কর অব্যাহতির বিশেষ সুবিধা পেয়ে আসছিল। তবে ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি থেকে এই সুবিধা বন্ধ হয়ে যায়। ফলে ব্যাংকটি কর প্রদানে বাধ্য হয়। দীর্ঘদিন ধরে আবার কর অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করে ব্যাংকটি, তবে পূর্ববর্তী সময়ে কোনো সাড়া মেলেনি। এবার নতুন করে ৫ বছর ৩ মাসের জন্য কর অব্যাহতি পেল তারা।
গ্রামীণ ব্যাংক মূলত ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণ করে থাকে, যা দেশের গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এর সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটি শিক্ষাঋণ, গৃহঋণ এবং ভিক্ষুকদের ঋণ দেওয়ার মতো সামাজিক কর্মকাণ্ডেও যুক্ত রয়েছে। এই কারণে ব্যাংকটি আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন করেছে, বিশেষ করে ২০০৬ সালে ড. ইউনূসের নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভের পর। তবে কর অব্যাহতির সুবিধা দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠছে, কেননা এত বড় একটি প্রতিষ্ঠানের জন্য এ ধরনের সুবিধা দেওয়া উচিত কি না, তা নিয়ে বিতর্ক আছে।
অনেকেই মনে করছেন, কর অব্যাহতি প্রদান দেশের আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতাকে নষ্ট করতে পারে, কারণ এটি অন্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বৈষম্য তৈরি করতে পারে। অন্যদিকে, গ্রামীণ ব্যাংকের সামাজিক দায়বদ্ধতা ও উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের গুরুত্ব বিবেচনায় অনেকে এই কর অব্যাহতিকে প্রয়োজনীয় বলে মনে করছেন।
সরকারের এই কর অব্যাহতির সিদ্ধান্ত দেশের অর্থনৈতিক নীতিতে কী প্রভাব ফেলবে, তা সময়ই বলে দেবে। গ্রামীণ ব্যাংকের কর অব্যাহতি দেশের উন্নয়নমূলক কাজে কীভাবে অবদান রাখবে, তা আগামী পাঁচ বছরেই স্পষ্ট হবে।