অর্থনীতি

ডলার সংকটে আশার আলো দেখাচ্ছেন প্রবাসীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

সোমবার, ২৯ আগস্ট, ২০২২
ডলার সংকটে আশার আলো দেখাচ্ছেন প্রবাসীরা

দেশের চলমান ডলার সংকটের মধ্যে আশার আলো দেখাচ্ছেন প্রবাসীরা। চলতি মাসের প্রথম ২৫ দিনেই ১৭২ কোটি ৯৩ লাখ ডলারের রেমিটেন্স দেশে পাঠিয়েছেন তারা।  

সম্প্রতি আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়া এবং ডলারের অভ্যন্তরীণ প্রবাহ কমে যাওয়ার কারণে সংকট চলছিলো ডলারের বাজারে। 

এমন অবস্থায় আবারো ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে প্রবাসী আয়। যা সুখবর হিসাবে ভাবা হচ্ছে দেশের  অর্থনীতি এবং মূদ্রাবাজারের জন্য। 

সম্প্রতি ডলারের বাজার অস্থিতিশীল হওয়া শুরু করলে রেমিটেন্স বাড়াতে বিভিন্ন ধরণের উদ্যোগ গ্রহন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। 

এরপর নানা রকম  সুবিধা দেওয়ার কারণে বৈধ চ্যানেলের প্রবাসী আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। এমনটাই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। 

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, চলতি আগস্ট মাসের শুরু থেকে পচিশ তারিখ পর্যন্ত প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স এসেছে প্রায় এক দশমিক ৭৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। 

প্রতি ডলারে ৯৫ টাকা হিসাব করে বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমান প্রায় ১৬ হাজার ৪২৯ কোটি টাকা। 

আগস্ট মাসের প্রথম পচিশ দিনের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এই সময়ে প্রতিদিন গড়ে প্রায় সাত কোটি ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।  

শেষ কয়েকদিন এই ধারা অব্যাহত থাকলে পুরো আগস্ট মাসের রেমিটেন্স হতে পারে ২১৪ কোটি ডলারের মতো। 

এমনটাই জানা গেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে থেকে। এই সম্ভাবনা বাস্তবায়িত হলে রেমিটেন্স এর রেকর্ড হবে চলতি মাসে।  

বাংলাদেশ ব্যাংকের পচিশ দিনের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, রেমিটেন্স আনার ক্ষেত্রে সরকারি ব্যাংকের ভুমিকা খুব বেশি জোরালো নয়। 

এই সময়ে আসা ১৭২ কোটি ৯৩ লাখ ডলারের মধ্যে পাঁচটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৩১ কোটি ৫০ লাখ ডলার। যা একটি বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে আসা রেমিটেন্স থেকেও কম। 

বরাবরের মতো এই  সময়ের মধ্যেও সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এনেছে ইসলামী ব্যাংকের। বেসরকারি খাতের এ ব্যাংকটির মাধ্যমে  ৩৫ কোটি ৬২ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। 

এরপরে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে সরকারি মালিকানাধীন  অগ্রণী ব্যাংক। এই ব্যাংকের মাধ্যমে দেশে এসেছে ১১ কোটি ডলারের রেমিটেন্স।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী দেশের রেমিটেন্স এর প্রায় এক তৃতীয়াংশ আসছে বেসরকারি ব্যাংক গুলোর মাধ্যমে। গত পচিশ দিনে এর পরিমান ১৩৮ কোটি ৬৯ লাখ মার্কিন ডলার।

অপরদিকে, সরকারের বিশেষায়িত বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে দুই কোটি ১০ লাখ ডলারের রেমিটেন্স। তবে ছয়টি ব্যাংকের মাধ্যমে কোন রেমিটেন্স পাঠাননি প্রবাসীরা। 

এর মধ্যে রয়েছে  বিডিবিএল, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, বিদেশি মালিকানাধীন ব্যাংক আল-ফালাহ, হাবিব ব্যাংক,  ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান এবং স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া।

গত জুলাই মাস থেকে ভালো অবস্থানে রয়েছে দেশের রেমিটেন্স প্রবাহ। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী জুলাইয়ে আসা রেমিটেন্স এর পরিমান প্রায় ২০৯ কোটি মার্কিন  ডলার। যা এর আগের মাস থেকে প্রায় ২৬ কোটি ডলার বেশি। 

বেশ কয়েক বছর ধরেই দেশের রেমিটেন্স প্রবাহে উর্ধ্ব গতি দেখা যাচ্ছিলো। কিন্তু গত অর্থবছরে হঠাৎ করে  রেমিটেন্স আয় কমে যায় প্রায় সাড়ে তিন বিলিয়ন মার্কিন ডলার। 

তবে চলতি বছরের ধারা অনুযায়ী আবারো প্রবাসী আয় বৃদ্ধির প্রত্যাশা করছেন বিশ্লেষকরা।