সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের এপিএস মো. রাশেদুল কাওসার ভূঁইয়া জীবন তার পদের প্রভাব কাজে লাগিয়ে অবৈধ সম্পদের মালিক বনে যান। মাদকের কারবার, ভারতীয় গরু পাচার, টেন্ডারবাজি, ও বদলি বাণিজ্যসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে তিনি একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেন।
২০১৪ সালে আইনমন্ত্রীর এপিএস হওয়ার পর কসবা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ বাগিয়ে নেন। ক্ষমতার অপব্যবহার করে গড়ে তোলেন শত কোটি টাকার সম্পদ। কসবা ও আখাউড়া উপজেলায় জীবনের অপরাধ সাম্রাজ্য নিয়ন্ত্রণে ছিল তার নিজস্ব বাহিনী।
সরকারি খাস জমি ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গায় অবৈধভাবে ৪৫টি দোকান নির্মাণ করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেন। তার ‘ক্যাশিয়ার’ উত্তম কুমার চক্রবর্তীর মাধ্যমে এসব টাকা উত্তোলন করতেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আজমলের মাধ্যমে মাদক পাচার সিন্ডিকেট পরিচালনা করতেন, যা থেকে মাসিক আয় ছিল প্রায় ৩০ লাখ টাকা। এছাড়া, ভারত থেকে গরু পাচারেও তার বিশাল সিন্ডিকেট সক্রিয় ছিল।
জীবন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিতেন। তার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলায় হয়রানির অভিযোগ রয়েছে। তিনি কসবা উপজেলায় আতঙ্কের এক নাম হয়ে ওঠেন। তার বাহিনীর অত্যাচারে অনেক নেতাকর্মী এলাকা ছাড়তে বাধ্য হন।
জীবনের নামে ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে রয়েছে ঢাকায় ছয়তলা বাড়ি, কেরানীগঞ্জে জমি, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জমি ও প্লট। তিনি স্থানীয় একাধিক জায়গায় মার্কেট নির্মাণ করে কোটি টাকা আয় করেছেন। তার বিরুদ্ধে বিপুল অর্থ বিদেশে পাচারের অভিযোগও রয়েছে।
২০২৪ সালের ১৯ অক্টোবর কাকরাইলের একটি হাসপাতাল থেকে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। বর্তমানে তিনি কারাগারে রয়েছেন। জীবনের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ প্রমাণ হলে এটি দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অন্যতম নজির হয়ে থাকবে।