যুক্তরাজ্যের সিটি মিনিস্টার ও লেবার পার্টির সংসদ সদস্য টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে অর্থ লোপাটের অভিযোগ উঠেছে। ব্রিটিশ ট্যাবলয়েড ডেইলি মেইল এ অভিযোগ প্রকাশ করে জানায়, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ‘রোসাটম’-এর মাধ্যমে ১০ বিলিয়ন পাউন্ডের প্রকল্পের মধ্যস্থতায় টিউলিপ ও তার পরিবার ৫৯ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে।
২০১৩ সালে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরের সময় টিউলিপকে উপস্থিত থাকতে দেখা যায়। যদিও তিনি সে সময় এটিকে “পারিবারিক ভ্রমণ” বলে উল্লেখ করেছিলেন। নতুন ভিডিওতে তাকে রূপপুর চুক্তির আনুষ্ঠানিকতার অংশ হিসেবে ক্রেমলিনে দেখা যাওয়ায় বিতর্ক আরও তীব্র হয়েছে।
বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এ প্রকল্প থেকে ৭০৯ মিলিয়ন পাউন্ড পাচারের অভিযোগে টিউলিপ, তার মা শেখ রেহানা, খালা শেখ হাসিনা, খালাতো ভাই সজীব ওয়াজেদ জয় এবং চাচা তারিক সিদ্দিকের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে। অভিযোগ অনুযায়ী, প্রাচ্য লিমিটেড নামে ভুয়া একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে অর্থ পাচার করা হয়েছে।
ডেইলি মেইলের পক্ষ থেকে টিউলিপের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান। তবে তার ঘনিষ্ঠ সূত্র এবং যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ অভিযোগগুলোকে “বানোয়াট ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত” বলে আখ্যা দিয়েছে।
ডেইলি মেইলের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, টিউলিপ বাসা ভাড়া থেকে আসা আয়ের তথ্য ১৪ মাস গোপন রাখায় পার্লামেন্টের বিধান ভঙ্গ করেছেন। পরবর্তীতে ক্ষমা চেয়ে এ দায় এড়িয়ে গেলেও এটি তার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেছে। এছাড়া ২ মিলিয়ন পাউন্ডের একটি বিলাসবহুল বাড়ি ভাড়া করা নিয়েও বিতর্কের সৃষ্টি হয়, কারণ বাড়িটির মালিক শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সহযোগী।
ব্রিটিশ বিরোধী দল টোরি পার্টি এসব অভিযোগ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। টোরি এমপি জো রবার্টসন বলেন, “টিউলিপ কীভাবে সিটি মিনিস্টারের দায়িত্ব পালন করছেন তা এক গুরুতর প্রশ্ন।” তারা আরও দাবি করেছেন, রাশিয়ায় টিউলিপের উপস্থিতি এবং তার ভূমিকা নিয়ে তাকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা উচিত।
লেবার পার্টি এবং প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমার এখন পর্যন্ত টিউলিপের প্রতি আস্থা রেখেছেন। ডাউনিং স্ট্রিট জানিয়েছে, তিনি তার দায়িত্ব পালন চালিয়ে যাবেন। তবে নতুন ভিডিও এবং অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে লেবার পার্টির উপর চাপ ক্রমশ বাড়ছে।