অপরাধ

আবারও সুন্নতে খতনা করাতে গিয়ে শিশুর মৃত্যু!

স্টাফ রিপোর্টারঃ

স্টাফ রিপোর্টারঃ

বুধবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
আবারও সুন্নতে খতনা করাতে গিয়ে  শিশুর মৃত্যু!
সুন্নতে খতনা করতে গিয়ে আবারও বুক খালি হলো আরেক মায়ের, অ্যানেস্থেসিয়া দেয়ার পর আর ঘুম ভাঙেনি শিশু আহনাফের। বুক চাপড়ে মায়ের আর্তনাদ, সুস্থ-সবল ছেলেকে হাসপাতালে নিয়ে হাসপাতালে এলেও ফিরতে হয় তার নিথর দেহ নিয়ে।
আবার যেন ইউনাইটেড হাসপাতালের ঘটনারই যেনো পুনরাবৃত্তি হলো মালিবাগের জে এস ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড মেডিকেল চেকআপ সেন্টারে।

স্বজনদের অভিযোগ, লোকাল এনেস্থেশিয়া না দিয়ে মাত্রাতিরিক্ত জেনারেল এনেস্থেশিয়া দেয়াতেই তাদের সন্তানের মৃত্যু হয়েছে। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এ দায় অস্বীকার করেন, তাদের দাবি, শিশুটির রোগ সম্পর্কে স্বজনরা অগ্রীম না জানানোয় ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় তার মৃত্যু হয়। 

রাজধানীর মালিবাগের জেএস হাসপাতালে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর দশ বছর বয়সী ছেলে আহনাফ তাহমিদকে সুন্নতে খতনা করতে নিয়ে আসেন বাবা ফখরুল আলম।আসার পরই হাসপাতাল পরিচালক ডা. এস এম মুক্তাদিরদের নেতৃত্বে তাহমিদকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যায় হাসপাতালে দায়িত্বরত ডা. মাহাবুব এবং ডা. ইশতিয়াক আজাদ।এর ঠিক ২০ মিনিট পর আহনাফকে দেখতে চায় পরিবারের সদস্যরা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বাধা দিলে শুরু হয় হট্টগোল। এরপরই তাকে মৃত ঘোষণা করে তারা।

পরিবারের অভিযোগ,“এই মৃত্যুর দায় মুক্তাদিরসহ হাসপাতাল কর্তপক্ষ সবারই।” তারা বলছে, প্রথমে লোকাল এনেস্থেশিয়া প্রয়োগ করার কথা থাকলেও দেয়া হয় জেনারেল এনেস্থেশিয়া। অপারেশনের কিছুক্ষণ পর জ্ঞান ফিরলেও বমি করে ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে যায় তাহমিদ।বাবা ফখরুল কান্নায় ভেঙে পড়ে বলেন, “তিনি বারবার বলেছেন ছেলেকে যেন ফুল অ্যানেস্থেসিয়া না দেয়া হয়।” 

আহাজারির সুরে স্বজনরা বলছেন, ছেলেটি হেঁটে হেঁটে হাসপাতালে এসেছে। এরপর সাড়ে ৮টার দিকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যায়। ৯টার পর সে মারা যায়। এমন ঘটনার পরও দায় এড়াতে ব্যস্ত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।তাদের দাবি, আগে থেকেই শারীরিক সমস্যা ছিল তাহমিদের। সে ব্যাপারে পরিবারের পক্ষ থেকে সঠিক তথ্য না দেয়াতেই এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

হাসপাতাল পরিচালক ডা. এস এম মুক্তাদির দাবি করেন, ছেলেটির ওজন বেশি ছিল। বয়সও ১০ বছর পেরিয়ে গেছে। ফুসফুসে সমস্যা ছিল। কিন্তু সব তথ্য পরিবার জানায়নি হাতিরঝিল থানার এসআই মো. রুহুল আমিন জানান, হট্টগোলের খবর পেয়েই উপস্থিত হন তারা। জানাযাই এঘটনার সঙ্গে জড়িত দুজনকে আটক করতে পারলেও অপারেশনের পরপরই পালিয়ে গেছেন অভিযুক্ত ডা. এস এম মুক্তাদির, যিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গেও সংযুক্ত ।

প্রিয় সন্তানকে হারিয়ে পাগলপ্রায় মা খায়কুন নাহার চুমকি।ঘটনার পরই ডায়াগোনেস্টির সেন্টার থেকে উধাও হয়ে যান, অর্থোপেডিক ডা. মুক্তাদির।জানাযাই তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গেও সংযুক্ত বলে জানা গেছে। শিশু আহনাফ তাহমিদ মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র ছিলে।
এর আগেও খতনা করাতে গিয়ে মৃত্যু হয় আরো এক ফুটফুটে শিশু আয়ানের। গত ৩১ ডিসেম্বর খতনার জন্য তাকে বাড্ডার ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সুন্নাতে খতনার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। সকাল ৯টার দিকে শিশুটিকে অ্যানেসথেসিয়া দেয়া হয়। 
পরে জ্ঞান না ফেরায় তাকে গুলশানে ইউনাইটেড হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানকার পিআইসিইউতে তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। ৭ জানুয়ারি মধ্যরাতে শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।আয়ানের বাবা-মায়ের অভিযোগ, ইন্টার্ন চিকিৎসক দিয়ে সুন্নতে খতনার সময় অতিরিক্ত অ্যানেসথেশিয়া দেয়ায় ঘটেছে এমন ঘটনা।