সারাদেশ

ভৈরবকে জেলা ঘোষণার দাবিতে রেলপথ অবরোধ, ট্রেনে পাথর নিক্ষেপে আহত ২০

মামুনুর রশিদ (নিজস্ব প্রতিবেদক)

মামুনুর রশিদ (নিজস্ব প্রতিবেদক)

সোমবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২৫
ভৈরবকে জেলা ঘোষণার দাবিতে রেলপথ অবরোধ, ট্রেনে পাথর নিক্ষেপে আহত ২০
ভৈরব জেলা চাই ওয়ান টু থ্রি ফোর কিশোরগঞ্জ নো মোর ইন্টেরিম সরকার জেলা মোদের  দরকার  এমন স্লোগানে উত্তাল হয়ে ওঠে রেলপথ। সোমবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা ১১টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত ভৈরবকে জেলা ঘোষণার দাবিতে স্থানীয় জনতা রেলপথ অবরোধ করে উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেন থামিয়ে দেয়। আন্দোলনকারীদের ছোড়া পাথরে আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন যাত্রী, যার মধ্যে আশুগঞ্জ থেকে আসা জাহাঙ্গীর আলম (৪৫) গুরুতর আহত হন।
রেলপথ অবরোধের ফলে পাঁচটি ট্রেনের সময়সূচি বিপর্যয় ঘটে। কর্ণফুলী এক্সপ্রেস দীর্ঘক্ষণ ভৈরবে আটকে থাকে, চট্টগ্রামগামী মালবাহী ট্রেন থামে নরসিংদীর দৌলতকান্দি স্টেশনে। এছাড়া তিতাস ট্রেন মেথিকান্দা ও কর্ণফুলী ট্রেন খানাবাড়ি স্টেশনে আটকে থাকে, চট্টলা ট্রেন আটকে পড়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তাল শহর স্টেশনে। এক ঘণ্টারও বেশি সময় রেল চলাচল বন্ধ থাকায় হাজারো যাত্রী চরম ভোগান্তিতে পড়েন।
ঘটনার সূত্রপাত গত ১১ অক্টোবর, যখন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সংস্কার কমিশন কিশোরগঞ্জ জেলাকে ময়মনসিংহ বিভাগে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব দেয়। এর প্রতিবাদে ভৈরবের সর্বস্তরের মানুষ ‘ভৈরব জেলা চাই’ আন্দোলন শুরু করে। ধারাবাহিকভাবে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনের পর সোমবারের রেল অবরোধে যুক্ত হন বিএনপি, জামায়াত, গণ অধিকার পরিষদ, খেলাফত মজলিস, ইসলামী আন্দোলন, ছাত্র শিবিরসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
রেল অবরোধ চলাকালীন বক্তারা ঘোষণা দেন, ১৫ দিন শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির পরও সরকার দাবি না মানায়, ২৬ অক্টোবর সড়কপথ, ২৭ অক্টোবর রেলপথ এবং ২৮ অক্টোবর নৌপথ ব্লকেড কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। দাবি না মানলে অনির্দিষ্টকালের জন্য সারাদেশে পরিবহন বন্ধ থাকবে।
পাথর নিক্ষেপের বিষয়ে ছাত্রনেতা শাহরিয়ার বলেন, আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন বানচাল করতে একটি মহল পাথর নিক্ষেপ করেছে। যাত্রীদের ভোগান্তি বিবেচনায় আমরা তাৎক্ষণিকভাবে ট্রেন ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিই।
রেলওয়ে থানার ওসি সাইদ আহমেদ বলেন, পাথর নিক্ষেপের ঘটনায় পুলিশ তদন্ত করছে। দোষীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে। তবে ভৈরব স্টেশন মাস্টার মোহাম্মদ ইউসুফ মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান।
ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পাথর নিক্ষেপ ও রেল ব্লকেডের নিন্দা জানিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেকেই বলেন, জেলার দাবিতে আন্দোলন গণতান্ত্রিক অধিকার হলেও সহিংসতা কোনোভাবেই ন্যায্য নয়।