বাংলাদেশ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়ালেন উমামা ফাতেমা

স্টাফ রিপোর্টারঃ

স্টাফ রিপোর্টারঃ

শনিবার, ২৮ জুন, ২০২৫
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়ালেন উমামা ফাতেমা
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা সংগঠনটির অভ্যন্তরীণ বিশৃঙ্খলা, দলীয় প্রভাব, অনৈতিকতা ও সুবিধাবাদী চর্চার অভিযোগ তুলে আনুষ্ঠানিকভাবে আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। শুক্রবার (২৭ জুন) রাতে একটি বিস্তারিত ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি তার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন এবং নিজের পদক্ষেপের ব্যাখ্যা দেন।
উমামা জানান, জুলাই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় একটি দায়িত্ববোধ থেকে তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হন। কিন্তু খুব দ্রুতই তিনি বুঝতে পারেন, প্ল্যাটফর্মটি স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছে না। এর পেছনে দলীয় প্রভাব, অভ্যন্তরীণ ষড়যন্ত্র এবং ‘ভাই-ব্রাদার সিন্ডিকেট’ কাজ করছে।
তার অভিযোগ অনুযায়ী, শীর্ষ নেতাদের প্রভাবে অনেক যোগ্য ব্যক্তিকে পদ না দিয়ে রাজনৈতিক সুবিধা অনুসারে কাউন্সিল সদস্য মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “যারা আমাকে পদে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তারাই পরে মুখোশ খুলে নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় ব্যস্ত হয়ে পড়ে।” তিনি উল্লেখ করেন, মিছিলে সহযোদ্ধা যারা ছিলেন, তারাই পরে ‘Smear campaign’ চালান, পেইজে অপপ্রচার চালান এবং প্ল্যাটফর্মের নিয়ন্ত্রণ একচেটিয়াভাবে কুক্ষিগত রাখেন।
উমামা আরও জানান, প্ল্যাটফর্মে যোগ দেওয়ার পর থেকেই নানা অবমাননা, মানসিক চাপ ও অব্যবস্থাপনার সম্মুখীন হতে হয় তাকে। তিনি বলেন, “এই প্ল্যাটফর্মে সংস্কার, শহীদ, আহত—সবই কেবল মুখের বুলি, বাস্তবে এগুলোকে ব্যবহার করা হয় রাজনৈতিক ক্যাশের হাতিয়ার হিসেবে।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, কাউন্সিলে ভোটের আগের রাতে একজন নির্বাচনেই অংশ না নিয়েও নির্বাচিত হয়েছেন, যা প্ল্যাটফর্মের স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে।
সবশেষে উমামা জানান, অভ্যুত্থানের স্বপ্নকে সম্মান জানিয়ে এবং প্ল্যাটফর্মের অপব্যবহার ও ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে তিনি সংগঠন থেকে সম্পূর্ণভাবে নিজেকে সরিয়ে নিচ্ছেন। তিনি তার সব ধরনের সমর্থন ও কাউন্সিলে প্রদত্ত ভোট প্রত্যাহার করেন।
তার স্ট্যাটাসের শেষাংশে তিনি লেখেন, “যারা আমাকে নোংরামি করেছে, অভ্যুত্থানকে বাজারদরে কেনাবেচা করেছে, আমি তাদের কখনো ক্ষমা করব না।” তবে তিনি এও জানান, ভেঙে পড়ছেন না, বরং পড়াশোনা ও বাস্তব জীবনে মনোযোগ দিয়ে এগিয়ে যেতে চান।