তথ্যপ্রযুক্তি

স্মার্ট ফোনের যুগে যে কারণে জনপ্রিয়তা বাড়ছে ফিচার ফোন বা বা বাটনওয়ালা ফোনের

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

বুধবার, ১৭ মে, ২০২৩
স্মার্ট ফোনের যুগে যে কারণে জনপ্রিয়তা বাড়ছে ফিচার ফোন বা বা বাটনওয়ালা ফোনের
স্মার্ট ফোনের যুগে যে কারণে জনপ্রিয়তা বাড়ছে ফিচার ফোন বা বা বাটনওয়ালা ফোনের। একুশ শতকের শুরুর দিকে 'ফিচার ফোন' বা বাটনওয়ালা ফোনগুলোই ছিল সবার একমাত্র ভরসা।

আর সেই বাটন ফোন মনে হচ্ছে আবারও ফিরে আসছে। বর্তমানে এটি দেখা যাচ্ছে অনেকের হাতে হাতে।তবে হঠাৎ করেই আবার কেন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এই ফিচার ফোন বা বাটনওয়ালা ফোনগুলো? প্রায় এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বাজার দখল করে আছে স্মার্টফোন। কিন্তু স্মার্ট ফোনের এই যুগে সম্প্রতি কয়েক বছর ধরে নতুন করে জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করেছে 'ফিচার ফোন' বা বাটনওয়ালা ফোন। 

মজার বিষয় হলো, শুধু দেশেই নয় ইউরোপ আমেরিকার উন্নত দেশগুলোতে হঠাৎ করেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এই ফোন।তবে শুধুমাত্র পুরাতন প্রজন্মই নয়, নতুন প্রজন্মেরও হাতে হাতেও দেখা যাচ্ছে এইসব ফোন।

তাদের চাহিদার দিকে নজর রেখে বিভিন্ন কোম্পানি তৈরি করছে বাহারি নানা রকমের বাটন ফোন।অবশ্য এটি সত্যি যে, পারফরমেন্সের দিক থেকে বাটনফোনগুলো কোনোভাবেই সাম্প্রতিক অ্যাপল এবং স্যামসাংয়ের মডেলগুলোর সমপর্যায়ের হবে না।

তবে ব্যাটারির জীবনকাল ও টেকসইয়ের দিক থেকে এসব আধুনিক ফোনকে ছাড়িয়ে যাবে ফিচারফোনগুলো। শুধু ডিজাইন রঙ বা বৈচিত্র্যই নয়, ফিচার ফোন ব্যবহারের রয়েছে নানা সুবিধা। আর এসব সুবিধা স্মার্টফোনে কখনোই পাবেন না।

বিশেষত আকারে ছোট এবং স্মার্টফোনের চেয়ে অনেক কম দামে পাওয়া যায় এসব ফোন।এতে টেক্সটিং, কলিং ইত্যাদি মৌলিক কাজের সঙ্গে সীমিত পরিসরে ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবহারের সুযোগও রয়েছে।

ব্যাটারির দীর্ঘায়ুর জন্যেও এটি পরিচিত। একবার চার্জ দিয়ে কয়েকদিন, এমনকি সপ্তাহও পার করে দেওয়া যায় এসব ফোনে। এটি ব্যবহারের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হচ্ছে, মানুষ এখন স্মার্টফোন আসক্তির নেতিবাচক বিষয়ে ধীরে ধীরে সচেতন হয়ে উঠছে।

ফলে প্রযুক্তি থেকে কিছুটা বিচ্ছিন্ন থেকে বর্তমানে মুহূর্ত উপভোগ করার বিষয়টিকেই বেশি গুরুত্ব দেওয়ার চেষ্টা করছে।পাশাপাশি অনেকের জন্যই একটানা নোটিফিকেশন থেকে মুক্তি পাবার সহজ পদ্ধতি এ বাটনফোন।

ফিচার ফোন ব্যবহারের দিকে ঝোঁকার মাধ্যমে তারা একই সঙ্গে বন্ধু-পরিজনের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারবেন।আবার সেই সঙ্গে সামাজিক মাধ্যমে বারবার ঢুঁ মারার বা ইন্টারনেট ব্যবহারের প্রলোভন থেকেও নিজেকে মুক্ত রাখতে পারবেন।

এই ঝোঁক শুধু বাংলাদেশের ভেতর কিংবা যুক্তরাষ্ট্রের সীমানাতেই সীমাবদ্ধ নয়। জাপান থেকে শুরু করে ব্রাজিল পর্যন্ত, বিশ্বের অন্যান্য দেশের ফিচার ফোন ব্যবহারের প্রবণতা বেড়েছে।

এই বাড়তি চাহিদা পূরণের জন্য কিছু কোম্পানি এখন এসব ফোনের নতুন মডেলও বাজারে ছাড়ছে।আমেরিকান ফিচার ফোন উৎপাদনকারী 'লাইট ফোন' সম্প্রতি জানিয়েছে যে, ২০২০ থেকে ২০২১ তাদের কোম্পানির জন্য সর্বোচ্চ লাভজনক বছর।

এই সময়ের মধ্যে তাদের বিক্রয়ের হার শতকরা ১৫০ ভাগ বৃদ্ধি পেয়েছে।আগামী বছরগুলোতে কি আরও অনেক লোকই ফিচার ফোন ব্যবহার করা শুরু করবে, নাকি স্মার্টফোনের আধিপত্য বজায় থাকবে? অন্য অনেক প্রশ্নের মতো, শুধু সময়ই এর উত্তর দিতে পারে।

তবে স্মার্টফোনের জায়গা একেবারে দখল করে নেবার মতো সম্ভাবনা অবশ্যই ফিচার ফোনের নেই।জিপিএস নেভিগেশন থেকে শুরু করে মোবাইল ব্যাংকিং পর্যন্ত স্মার্টফোনের এমন অনেক কাজই আছে, যার ওপর আমরা অনেক বেশি নির্ভরশীল।

কিন্তু যারা শুধু যোগাযোগের জন্যই সহজ-ঝুটঝামেলাবিহীন কোনো ডিভাইস খুঁজছেন, তাদের জন্য ফিচার অবশ্যই লোভনীয় বিকল্প।