ধর্ম

কাবা ঘরের ভিতরে কী আছে?

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

রবিবার, ২১ আগস্ট, ২০২২
কাবা ঘরের ভিতরে কী আছে?

ইসলাম ধর্মাবলম্বী মানুষের কাছে পৃথিবীর সবচেয়ে পবিত্র জায়গা কাবা শরিফ। প্রতি বছর লাখ লাখ মুসলমান আল্লাহর ঘর তাওয়াফ করার জন্য পাড়ি জমান মক্কায়। 

মুসলিম বিশ্বের সবচেয়ে সম্মানিত এই ঘরের দরজা সব সময় বন্ধ থাকে। সেজন্য মক্কায় গেলেও কাবা শরীফের ভেতরের দৃশ্য দেখার সৌভাগ্য হয় না সাধারণ মানুষদের।  

পৃথিবীর সবচেয়ে সম্মানিত ঘর কাবা শরিফের ভেতরে রয়েছে একটি সিন্দুক। যেটিতে রাখা আছে উৎকৃষ্ট মানের সুরভি। 

এছাড়া কয়েকটি মখমলের তোয়ালে রাখা আছে দেয়ালে। পবিত্র কাবাঘর মোছার জন্য ব্যবহার করা হয় সেগুলো। 

সম্মানিত এই ঘরের ভেতরে আরো রয়েছে  বিভিন্ন যুগের প্রাচীন এবং ঐতিহ্যবাহী কয়েকটি মশাল। 

ইতিহাসের বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দেশের রাজা-বাদশারা পবিত্র কাবা শরিফের জন্য উপহার হিসেবে দিয়েছিলেন সেগুলো।

পবিত্রতম এই ঘরের ভেতরে ডান পাশে রয়েছে একটি দরজা যেটি স্বর্ন দ্বারা নির্মিত। এর নাম বাবুত তাওবা, যার বাংলা অর্থ তাওবার দ্বার। 

কাবা শরীফের ছাদে উঠার জন্য এই দরজা দিয়ে  সিঁড়ির দিকে যাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। পৃথিবীর সবচেয়ে দামি এই ঘরের দেয়ালে উপরের অংশে সাঁটানো রয়েছে সবুজ রেশমি কাপড়। 

এসব কাপড়ে স্বর্নের মাধ্যমে অঙ্কন করা আছে  পবিত্র কোরআনের বিভিন্ন আয়াত। প্রতি তিন বছর পর পর পরিবর্তন করা হয় রেশমি কাপড় গুলো। 

কাবা শরীফের মেঝে এবং  দেয়াল মূল্যবান মার্বেল পাথরের মাধ্যমে  মোজাইক করা। এ ছাড়া মর্মর পাথরের তিনটি ফলক রয়েছে। 

একটি দরজার ডান পাশে পূর্ব দেয়ালে, দ্বিতীয়টি উত্তর পাশের দেয়ালে, সর্বশেষ  পশ্চিম পাশের দেয়ালে রয়েছে তৃতীয় টি।

কাবা শরিফের ছাদকে ধরে রেখেছে  তিনটি কাঠের পিলার। প্রতিটি পিলারের ব্যাস ৪৪ সেন্টিমিটার করে। তবে সাধারন ঘরের মতো একটি নয়, বরং দুটি ছাদ রয়েছে কাবা শরীফের উপর।

পবিত্র কাবা ঘরের আরেকটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এর ভেতরে বৈদ্যুতিক বাতির ব্যবস্থা নেই। 
এমনকি কোন জানালাও নেই কাবা ঘরে। ভিতরে প্রবেশের জন্য শুধুমাত্র  ১টি  দরজা রয়েছে। 

সাধারণত সারাবছর বন্ধ অবস্থায় থাকে এই দরজা। মুসলিম বিশ্বের কোন প্রভাবশালী ব্যক্তি মক্কায় গেলে তার সম্মানে খুলে দেয়া হয় সরকারি অনুমতি নিয়ে। এছাড়া বছরে দুইবার দরজা খোলা হয় পরিস্কার করার জন্য। 

গত ১৫ আগস্ট  সর্বশেষ খোলা হয়েছিলো কাবা ঘরের দরজা। এ সময় পবিত্র এই ঘর পরিস্কারে উপস্থিত ছিলেন সৌদি বাদশাহ এবং যুবরাজ সালমান বিন আবদুল্লাহ।

পবিত্র কাবা শরীফ পরিস্কারের জন্য প্রথমে দরজার সাথে লাগানো হয় বিশেষ সিঁড়ি। এরপর সারি বেঁধে ভেতরে প্রবেশ করেন সবাই। 

এই কাজের জন্য দরজা খোলা থাকে মাত্র দুই ঘন্টা। এ সময় কাবা ঘরের চারপাশে অবস্থান করেন স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের সদস্যরা। 

সাধারণত  জমজমের পানি, খাঁটি গোলাপজল,  উন্নতমানের সুগন্ধি ‘উদ’ এবং কস্তুরি ব্যবহার করা হয় কাবাঘর পরিস্কার করার জন্য।  

প্রথমে গোলাপের সুগন্ধিযুক্ত জমজমের পানি ঢালা হয় মেঝেতে। 

তারপর পরিস্কার করা হয় খালি হাতে খেজুরপাতা দিয়ে। সবশেষে দেয়াল এবং মেঝে মোছা হয় কোমল সাদা কাপড় এবং উন্নত মানের টিস্যু দিয়ে।