ফ্যাসিবাদের পুনরুত্থান ঠেকাতে আওয়ামী লীগবিরোধী রাজনৈতিক শক্তিগুলোর ঐক্য বজায় রাখার ওপর জোর দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
আজ বুধবার ঢাকায় বাংলাদেশ–চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে বিএনপি আয়োজিত ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’-এর আলোচনা সভায় লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি বলেন,
“পলাতক স্বৈরাচারের সহযোগীরা গত কয়েক দিনে খোদ রাজধানীতে যেভাবে আগুন–সন্ত্রাস চালিয়েছে, ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তির করণীয় সম্পর্কে এটা একটি সতর্কবার্তা হতে পারে।”
তারেক রহমান বলেন, বর্তমানে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে যেখানে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে থাকা কিছু দল নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় ফ্যাসিবাদের ছাতার নিচে আশ্রয় নিয়েছিল। এখন উল্টোভাবে সেই “পতিত, পরাজিত, পলাতক স্বৈরাচার” আবারও ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের কিছু দলের ছায়ায় আশ্রয় নিচ্ছে কি না—এ বিষয়ে সবার ভাবার সময় এসেছে।
“বর্তমান পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সেই পতিত, পরাজিত, পলাতক স্বৈরাচার একইভাবে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে থাকা সেই দলের ছাতার নিচে আশ্রয় নিয়েছে কি না, মনে হয় এটি আমাদের সবার দেখার বা ভাবার সময় এসেছে,” — বলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
গণভোট ও সংস্কার বাস্তবায়ন ইস্যুতে বিএনপি ও জামায়াতের বিপরীত অবস্থানের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, কিছু রাজনৈতিক দল বিভিন্ন শর্ত দিয়ে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাধা সৃষ্টি করতে চাইছে, যা আসলে “পতিত স্বৈরাচারদের পুনর্বাসনের পথ সুগম করছে।”
তিনি প্রশ্ন রাখেন, গণভোটের দাবিতে আন্দোলনের আড়ালে কি পতিত শক্তিকে রাজনীতিতে পুনর্বাসনের সুযোগ তৈরি করা হচ্ছে?
“আমি মিডিয়া, রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সিভিল সোসাইটির সদস্যদের আহ্বান জানাচ্ছি—এ বিষয়ে সতর্ক দৃষ্টি রাখার জন্য,” বলেন তিনি।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি পরামর্শ দিয়ে তারেক রহমান বলেন,
“অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান দায়িত্ব হলো একটি জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠার পথ তৈরি করা। এখন তাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে—তারা কি একটি রাজনৈতিক দলের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করবে, নাকি দেশের গণতান্ত্রিক জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে।”
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।
অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, গণফোরামের সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক এবং গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান।